সকাল থেকে রাজধানীতে ঝুম বৃষ্টি, ৩ ঘণ্টায় ৬০ মিলিমিটার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২৪, ১১: ৩৪
আপডেট : ১২ জুলাই ২০২৪, ১২: ১৫

সারা দেশে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকেই বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর। আজ শুক্রবার সকাল থেকেই সেই বৃষ্টির দেখা মিলল রাজধানীতে। সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়ে ৯টা পর্যন্ত ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ সারা দিন কম-বেশি বৃষ্টি হবে। তবে আগামীকাল থেকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসবে।’ 

তরিফুল আরও বলেন, ‘বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসলে স্বাভাবিকভাবে তাপমাত্রা একটু বেড়ে যাবে। সামনের সপ্তাহে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তি থাকবে। এতে করে ভ্যাপসা গরম অনুভূত হবে।’ 

এ দিকে সকালে এই বৃষ্টিতে ঢাকায় অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। ছুটির দিন হওয়াতে ভোগান্তির চিত্র কিছুটা কম উঠে এসেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে রাজধানীর নিউমার্কেট, ধানমন্ডি, মিরপুর এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এতে করে কাজের প্রয়োজনে যারা বাইরে বের হচ্ছেন, তারা জমে থাকা পানির কারণে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

এদিকে প্রচণ্ড বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক-এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে অনেক গাড়ি বিকল হয়ে যানজটের সৃষ্টি করেছে। এ কারণে রাজধানীবাসীকে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য সময় হাতে নিয়ে বের হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আজ শুক্রবার দেশের সব বিভাগেই বজ্রসহ বৃষ্টি হবে। কোথাও কোথাও হতে পারে ভারী বর্ষণও। 

তবে বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছেন ১৮ তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেওয়া চাকরিপ্রার্থীরা। বৃষ্টির কারণে অনেকেই সময়মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে উপস্থিত হতে পারেননি। 

গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি ঝরেছে কক্সবাজারে। কক্সবাজারে ৩০৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। কক্সবাজারে ভারী বৃষ্টির কারণে অন্তত পাঁচটি এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী ও শিশু মিলিয়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। 

কক্সবাজারের পর সন্দ্বীপে ২১৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকাও ভারী বৃষ্টি পাহাড় ধসের বিপদ বাড়িয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া সিলেটে ও এর উজানের ভারী বৃষ্টি নতুন করে বন্যার আশঙ্কা তৈরি করেছে। ব্রহ্মপুত্রসহ দেশের বেশির ভাগ নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। এর বাইরে টাঙ্গাইল, রাজশাহীর বাঘাবাড়ী, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। 

সকালের ঝুম বৃষ্টিতে রাজধানীর সচিবালয় এলাকার সড়কে জমেছে পানি। ছবি: আজকের পত্রিকাসিলেটে আবার ভারী বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। সংস্থাটি থেকে বৃহস্পতি ও আজ শুক্রবারের জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশের প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ছে। বিশেষ করে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় পানি সবচেয়ে তাড়াতাড়ি বাড়তে পারে। 

আবহাওয়া পূর্বাভাস বলছে, মৌসুমি বায়ুর অক্ষ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। 

আজ রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশের দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত