জাহাঙ্গীর আলম
সারা বিশ্বে অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইডের সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় কৃষি খাতে। বিশেষ করে ইঁদুর নিধনে ব্যবহার করা হয় এটি। তবে বাংলাদেশে এটি সাধারণত তেলাপোকা, ইঁদুরসহ সব ধরনের পোকামাকড় দমনে, এমনকি বাসাবাড়িতে এই বিষ ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া বদ্ধ জলাশয়ে মাছ নিধনের জন্যও অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ব্যবহার করা হয়। দেশে এটি ‘গ্যাস ট্যাবলেট’ নামেই বেশি পরিচিত।
সম্প্রতি এই বিষে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকার দুই স্কুলপড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে। তাদের বাবা–মাকেও হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। ঘরে তেলাপোকা নিধনে একটি পেস্ট কন্ট্রোল কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়েছিল পরিবারটি। তারা এসে অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড প্রয়োগ করেছে। অথচ এ ধরনের বিষ বাসাবাড়িতে ব্যবহার করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেন বিশেষজ্ঞরা।
এই ধরনের বিষ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়। ইঁদুর নিধনের জন্য কৃষিজমিতে কাদার ভেতরে ট্যাবলেট বা পেলেটগুলো পুঁতে দেওয়া হয়। পরদিন মরা ইঁদুর সংগ্রহ করা হয়। বিষ প্রয়োগের পর জমি থেকে দূরে অবস্থান করতে বলা হয়। এই ধরনের বিষয় আর্দ্র বা কাদাপানিতে বেশি কার্যকর। এটি কখনোই আবাসিক এলাকায় প্রয়োগের সুপারিশ করা হয় না। চরম বিষাক্ততা এবং প্রতিষেধক না থাকার কারণে ভারত অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।
অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইডের বিষক্রিয়ায় আক্রান্তের বেশির ভাগ গ্রামীণ এশিয়ার তরুণেরা। এশিয়ার দেশগুলোতে প্রতি বছর ২ কোটি ৫০ লাখ কৃষিশ্রমিক এই বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হন। ভারত ও ইরানে অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইডের বিষক্রিয়া প্রধান উদ্বেগের বিষয়। ২০১২ সালে তেহরানে পরিচালিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৭৭ হাজার ৯৫৮টি বিষক্রিয়ার ঘটনার মধ্যে ৪৭১টি অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইডের। আক্রান্তদের মধ্যে ৩১ শতাংশ মারা গেছেন।
২০২১ সালে প্রকাশিত তিন বছরের উপাত্ত নিয়ে একটি গবেষণায় দেখা গেছে, বিষক্রিয়ায় যত মৃত্যু তার ৬৮ শতাংশের জন্যই দায়ী অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড। এ ছাড়া ২০১৯ সালে প্রকাশিত আরেকটি মহামারি সম্পর্কিত তিন বছরের উপাত্ত নিয়ে গবেষণায় দেখা যায়, তরুণদের বিষপানে আত্মহত্যার ঘটনায় বেশির ভাগই ব্যবহার হয় অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড।
সম্প্রতি বরগুনা সদর হাসপাতালের পোস্টমর্টেম রিপোর্টেও এমন তথ্য উঠে এসেছে। এই জেলায় ২০২২ সালে ১২৪ জন আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই নারী। তাঁদের মধ্য ৫৮ জনই অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড বা গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
এ ছাড়া ২০২০ ও ২০২১ সালে প্রকাশিত পূর্ববর্তী ৭ বছরের উপাত্ত নিয়ে এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইডের মতো কৃষিকাজে ব্যবহৃত বিষ সহজলভ্য হওয়ায় আত্মহত্যায় এসব বিষ বেশি ব্যবহৃত হয়। গবেষণায় এটিকে একটি বড় বিপদের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০১৯ সালের আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, বিবাহিত পুরুষ এবং ২০–৩০ বছর বয়সের মধ্যে পুরুষেরা অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে। এ ছাড়া আন্তবিভাগীয় এবং লিঙ্গ-ভিত্তিক গবেষণায় দেখা গেছে, অল্পবয়সী নারীদের অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেটের সঙ্গে পানি যুক্ত হলে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ফসফাইন নামে অত্যন্ত বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়। দেশে এ কারণেই এটিকে গ্যাস ট্যাবলেট বলেন অনেকে। এই গ্যাসের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো—
১. শরীর অত্যধিক ঘাম দেওয়া
২. হৃৎস্পন্দন অত্যধিক বেড়ে যাওয়া
৩. অত্যধিক দ্রুত শ্বাস নেওয়া
৪. হাত–পা কাঁপা
৫. শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া
৬. শরীরের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা
৭. খিঁচুনি
৮. হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে গ্লুকোজ কমে যাওয়া
৯. লিভার বা যকৃতের প্রদাহ
করণীয়:
১. পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করা।
২. দূষণমুক্ত করার কার্যকর কোনো উপায় এখনো নেই। তবে সোডিয়াম বাই কার্বোনেটের দ্রবণ হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এতে ফসফাইড লবণ ফসফাইন গ্যাসে রূপান্তর বিলম্ব হয়।
৩. সক্রিয় চারকোল এবং ডাই-ট্রাই-অক্টাহেড্রাল স্মেক্টাইট দেওয়া যেতে পারে। তবে এর কার্যকারিতা সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই।
৪. লক্ষণ দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে।
৫. পরিস্থিতি জটিল হলে রোগী সাধারণত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মারা যায়।
তথ্যসূত্র: সায়েন্স ডিরেক্ট
সারা বিশ্বে অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইডের সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় কৃষি খাতে। বিশেষ করে ইঁদুর নিধনে ব্যবহার করা হয় এটি। তবে বাংলাদেশে এটি সাধারণত তেলাপোকা, ইঁদুরসহ সব ধরনের পোকামাকড় দমনে, এমনকি বাসাবাড়িতে এই বিষ ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া বদ্ধ জলাশয়ে মাছ নিধনের জন্যও অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ব্যবহার করা হয়। দেশে এটি ‘গ্যাস ট্যাবলেট’ নামেই বেশি পরিচিত।
সম্প্রতি এই বিষে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকার দুই স্কুলপড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে। তাদের বাবা–মাকেও হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। ঘরে তেলাপোকা নিধনে একটি পেস্ট কন্ট্রোল কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়েছিল পরিবারটি। তারা এসে অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড প্রয়োগ করেছে। অথচ এ ধরনের বিষ বাসাবাড়িতে ব্যবহার করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেন বিশেষজ্ঞরা।
এই ধরনের বিষ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়। ইঁদুর নিধনের জন্য কৃষিজমিতে কাদার ভেতরে ট্যাবলেট বা পেলেটগুলো পুঁতে দেওয়া হয়। পরদিন মরা ইঁদুর সংগ্রহ করা হয়। বিষ প্রয়োগের পর জমি থেকে দূরে অবস্থান করতে বলা হয়। এই ধরনের বিষয় আর্দ্র বা কাদাপানিতে বেশি কার্যকর। এটি কখনোই আবাসিক এলাকায় প্রয়োগের সুপারিশ করা হয় না। চরম বিষাক্ততা এবং প্রতিষেধক না থাকার কারণে ভারত অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।
অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইডের বিষক্রিয়ায় আক্রান্তের বেশির ভাগ গ্রামীণ এশিয়ার তরুণেরা। এশিয়ার দেশগুলোতে প্রতি বছর ২ কোটি ৫০ লাখ কৃষিশ্রমিক এই বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হন। ভারত ও ইরানে অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইডের বিষক্রিয়া প্রধান উদ্বেগের বিষয়। ২০১২ সালে তেহরানে পরিচালিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৭৭ হাজার ৯৫৮টি বিষক্রিয়ার ঘটনার মধ্যে ৪৭১টি অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইডের। আক্রান্তদের মধ্যে ৩১ শতাংশ মারা গেছেন।
২০২১ সালে প্রকাশিত তিন বছরের উপাত্ত নিয়ে একটি গবেষণায় দেখা গেছে, বিষক্রিয়ায় যত মৃত্যু তার ৬৮ শতাংশের জন্যই দায়ী অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড। এ ছাড়া ২০১৯ সালে প্রকাশিত আরেকটি মহামারি সম্পর্কিত তিন বছরের উপাত্ত নিয়ে গবেষণায় দেখা যায়, তরুণদের বিষপানে আত্মহত্যার ঘটনায় বেশির ভাগই ব্যবহার হয় অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড।
সম্প্রতি বরগুনা সদর হাসপাতালের পোস্টমর্টেম রিপোর্টেও এমন তথ্য উঠে এসেছে। এই জেলায় ২০২২ সালে ১২৪ জন আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই নারী। তাঁদের মধ্য ৫৮ জনই অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড বা গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
এ ছাড়া ২০২০ ও ২০২১ সালে প্রকাশিত পূর্ববর্তী ৭ বছরের উপাত্ত নিয়ে এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইডের মতো কৃষিকাজে ব্যবহৃত বিষ সহজলভ্য হওয়ায় আত্মহত্যায় এসব বিষ বেশি ব্যবহৃত হয়। গবেষণায় এটিকে একটি বড় বিপদের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০১৯ সালের আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, বিবাহিত পুরুষ এবং ২০–৩০ বছর বয়সের মধ্যে পুরুষেরা অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে। এ ছাড়া আন্তবিভাগীয় এবং লিঙ্গ-ভিত্তিক গবেষণায় দেখা গেছে, অল্পবয়সী নারীদের অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেটের সঙ্গে পানি যুক্ত হলে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ফসফাইন নামে অত্যন্ত বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়। দেশে এ কারণেই এটিকে গ্যাস ট্যাবলেট বলেন অনেকে। এই গ্যাসের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো—
১. শরীর অত্যধিক ঘাম দেওয়া
২. হৃৎস্পন্দন অত্যধিক বেড়ে যাওয়া
৩. অত্যধিক দ্রুত শ্বাস নেওয়া
৪. হাত–পা কাঁপা
৫. শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া
৬. শরীরের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা
৭. খিঁচুনি
৮. হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে গ্লুকোজ কমে যাওয়া
৯. লিভার বা যকৃতের প্রদাহ
করণীয়:
১. পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা করা।
২. দূষণমুক্ত করার কার্যকর কোনো উপায় এখনো নেই। তবে সোডিয়াম বাই কার্বোনেটের দ্রবণ হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এতে ফসফাইড লবণ ফসফাইন গ্যাসে রূপান্তর বিলম্ব হয়।
৩. সক্রিয় চারকোল এবং ডাই-ট্রাই-অক্টাহেড্রাল স্মেক্টাইট দেওয়া যেতে পারে। তবে এর কার্যকারিতা সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই।
৪. লক্ষণ দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে।
৫. পরিস্থিতি জটিল হলে রোগী সাধারণত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মারা যায়।
তথ্যসূত্র: সায়েন্স ডিরেক্ট
কার বাতাসে দূষণের মাত্রা বেড়েছে। বাতাসের মান সূচকে আজ ঢাকা দূষণের মাত্রা ১৯৫, যা অস্বাস্থ্যকর। অন্যদিকে একদিন পরই আবারও বায়ুদূষণের শীর্ষে ভারতের রাজধানী দিল্লি। এর পরে আছে পাকিস্তানের লাহোর। এ ছাড়া শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে রয়েছে ইজিপট ও চীন...
৪৪ মিনিট আগেপাঁচ বছর আগে প্লাস্টিক দূষণ রোধের লক্ষ্যে উচ্চ পর্যায়ের এক জোট গড়ে তুলেছিল বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় তেল ও রাসায়নিক কোম্পানিগুলো। কিন্তু নতুন তথ্য বলছে, এই সময়ের মধ্যে কোম্পানিগুলো যে পরিমাণ নতুন প্লাস্টিক উৎপাদন করেছে, তা তাদের অপসারিত বর্জ্যের তুলনায় ১ হাজার গুণ বেশি।
১৫ ঘণ্টা আগেঢাকার বাতাসে দূষণের মাত্রা তুলনামূলক কমলেও অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রয়েছে। বাতাসের মান সূচকে আজ ঢাকা দূষণের মাত্রা ১৮১, অবস্থান ষষ্ঠ। অন্যদিকে দুদিনের ব্যবধানে আবারও পাকিস্তানের লাহোর বায়ুদূষণের শীর্ষে পাকিস্তানের লাহোর। এরপরে আছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। এ ছাড়াও শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে রয়েছে মঙ্গোলিয়া ও ই
১ দিন আগেভারতের রাজধানী দিল্লি এবং এর সংলগ্ন এলাকাগুলোতে বায়ুদূষণ আজও ভয়াবহ মাত্রায় রয়েছে। আজ বুধবার সকালে শহরের বেশির ভাগ এলাকায় বাতাসের গুণমান সূচক (একিউআই) ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে। ধোঁয়াশার চাদরে ঢাকা দিল্লি শহর, দৃশ্যময়তা কমে যাওয়ার ফলে পরিবহন ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত হয়েছে। এর পরে আছে পাকিস্তানের শহর লাহোর...
২ দিন আগে