সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা চূড়ান্ত

বঙ্গোপসাগরে সংরক্ষিত এলাকা বাড়িয়ে ৬ গুণ করার প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯: ৫৭
আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২০: ৩৬
Thumbnail image
সোয়াচ অব নো–গ্রাউন্ড সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের আধার। ছবি: সংগৃহীত

সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ‘সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড’ সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকার সমন্বিত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে সরকার। এই পরিকল্পনার মাধ্যমে ডলফিন, তিমি, হাঙর, শাপলাপাতা মাছ (স্টিং রে) ও সামুদ্রিক কাছিমসহ বিপন্ন সামুদ্রিক প্রাণী এবং এদের বাসস্থান রক্ষা করা হবে। এ লক্ষ্যে সমুদ্রে সংরক্ষিত এলাকা বাড়িয়ে বর্তমানের ছয় গুণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

আজ বুধবার ‘সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড মেরিন প্রোটেক্টেড এরিয়া’-এর সমন্বিত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে ভার্চুয়াল সভায় এসব কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

বুধবার ‘সোয়াচ অব নো–গ্রাউন্ড’–এর সমন্বিত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে ভার্চ্যুয়াল সভায় যোগ দেন পরিবেশ উদপদেষ্টা। ছবি: সংগৃহীত
বুধবার ‘সোয়াচ অব নো–গ্রাউন্ড’–এর সমন্বিত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে ভার্চ্যুয়াল সভায় যোগ দেন পরিবেশ উদপদেষ্টা। ছবি: সংগৃহীত

উপদেষ্টা বলেন, এই পরিকল্পনা টেকসই মৎস্য আহরণ, উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জীবিকা রক্ষা এবং সুনীল অর্থনীতির বিকাশে সহায়ক হবে। পরিকল্পনায় মৎস্য আহরণ, জাহাজ চলাচল, দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং পর্যটন নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, পরিকল্পনায় তিনটি এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। এলাকাগুলো হলো—মাছের প্রজনন ও পোনা লালন-পালনের এলাকা, সামুদ্রিক প্রাণী সংরক্ষণ এলাকা এবং টেকসই মৎস্য আহরণ এলাকা। সংরক্ষিত এলাকার পরিধি ১ হাজার ৭৩৮ বর্গকিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৬ হাজার ৮৬৬ বর্গকিলোমিটার করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

সভায় অন্যদের মধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব তপন কুমার বিশ্বাস, যুগ্ম সচিব (বন) শামিমা বেগম এবং উপপ্রধান বন সংরক্ষক ও সুফল প্রকল্পের পরিচালক গোবিন্দ রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় প্রণীত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন ওয়ার্ল্ড কনজারভেশন সোসাইটির সিনিয়র অ্যাডভাইজার ড. সৈয়দ আরিফ আজাদ।

সভায় জানানো হয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে এই উদ্যোগ বিভিন্ন সংস্থা ও উপকূলীয় জনগণের সহযোগিতায় বাস্তবায়িত হবে। এটি সামুদ্রিক সম্পদের সুষম ব্যবহার ও পরিবেশের ভারসাম্য নিশ্চিত করবে বলে জানানো হয়।

সোয়াচ অব নো–গ্রাউন্ড সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের আধার। ছবি: সংগৃহীত
সোয়াচ অব নো–গ্রাউন্ড সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের আধার। ছবি: সংগৃহীত

উল্লেখ্য, সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড হচ্ছে বাংলাদেশের জলসীমায় ১৪ বর্গকিলোমিটারব্যাপী বঙ্গোপসাগরের গভীর একটি খাদ। এটি সুন্দরবনের দুবলার চর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। গভীরতম এই খাদের রেকর্ডকৃত আয়তন প্রায় ১ হাজার ৩৪০ বর্গমিটার এবং গড় গভীরতা প্রায় ১ হাজার ২০০ মিটার। এখানকার ডুবো গিরিখাত বঙ্গীয় উপবদ্বীপের অংশ, যা বিশ্বের বৃহত্তম ডুবো গিরিখাত।

এই অঞ্চলে বিভিন্ন প্রজাতির তিমি, সামুদ্রিক কচ্ছপ, মাছ এবং সামুদ্রিক পাখি রয়েছে। অতীতের গবেষণার তথ্য অনু্যায়ী, এখানে প্রধানত বিভিন্ন প্রজাতির তিমি, মূল প্রজাতির মধ্যে রয়েছে—ব্রাইডস তিমি, স্পিনার ডলফিন, ইন্দো–প্যাসিফিক বোতলনাক ডলফিন, ইন্দো–প্যাসিফিক হাম্পব্যাক ডলফিন, প্যানট্রপিকাল স্পটেড ডলফিন, ইরাবতী ডলফিন, ইন্দো–প্যাসিফিক ফিনলেস পোরপোইস দেখতে পাওয়া যায়।

এ ছাড়া তিমি হাঙর, মুগুরমাথা হাঙর, টুনা, গ্রুপার, হকসবিল কচ্ছপ, অলিভ রিডলি কচ্ছপ, মাস্কড বুবিস, গ্রেট ব্ল্যাক–ব্যাকড গল (পাখি), ক্রেস্টেড টার্নস, সাঁতার কাটা কাঁকড়া ইত্যাদির মতো প্রাণী রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত