Ajker Patrika

ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করতে অভিযান শুরু

খুলনা প্রতিনিধি
ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করতে অভিযান শুরু

খুলনা মহানগরীতে অগ্নি-দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে থাকা বহুতল ভবনের তালিকা তৈরি করতে অভিযান শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিস ও খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)। গতকাল মঙ্গলবার এ দুটি সংস্থা যৌথভাবে অভিযান শুরু করে। প্রথম দিন চারটি বাণিজ্যিক ভবনে থাকা রেস্তোরাঁকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং আবাসিক ভবনে থাকা চারটি রেস্তোরাঁকে দেড় মাসের মধ্যে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। না হলে এগুলো সিলগালা করা হবে।

মহানগরীতে অগ্নিনির্বাপণের নিজস্ব ব্যবস্থা না থাকা ১২৫টি আবাসিক ও বাণিজ্যিক বহুতল ভবন এবং রেস্তোরাঁকে দুই মাস আগে নোটিশ দিয়েছিল ফায়ার সার্ভিস। এখন এসব ভবনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রথম ধাপ হিসেবে এই অভিযান শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক ফারুক হোসেন শিকদার। 

ফারুক জানান, মহানগরীকে চারটি জোনে বিভক্ত করে গতকাল সকাল থেকে চিহ্নিতকরণ অভিযান শুরু করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও কেডিএ থেকে যৌথভাবে পাঁচটি দল গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি দলে তিনজন করে সদস্য রয়েছেন। পাঁচ দিন ধরে অভিযান চলবে। প্রথম দিনে নগরীর হেরাজ মার্কেট, বড় বাজার, নিউমার্কেটসহ বেশ কিছু এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। 

ফায়ার সার্ভিসের আরেক উপপরিচালক মামুন মাহমুদ জানান, দুই মাস আগে নোটিশ দেওয়া ভবনগুলোতে ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় অভিযান চালানো যায়নি। যেসব ভবন, রেস্তোরাঁ ও অন্য প্রতিষ্ঠান ফায়ার সার্ভিসের আইন ও নীতিমালা ভঙ্গ করেছে, সেগুলোর তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। পরে তা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এরপর অনুমোদন সাপেক্ষে ওই সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হবে।

এ বিষয়ে কেডিএ সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) শবনব সাবা জানান, কেডিএ আগে থেকে ভবন মালিকদের সতর্ক করছে। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা লঙ্ঘনের কারণে ইতিমধ্যে ৬৬টি ভবনের মালিককে নোটিশ করা হয়েছে। ভবনগুলো ক্রটিমুক্ত না করলে প্রয়োজনে সিলগালা করা হবে।

ফায়ার সার্ভিস থেকে জানা যায়, আইন অনুযায়ী ছয়তলার বেশি হলে তাকে বহুতল ভবন বলা হয়। এমন আবাসিক ভবন নির্মাণে ফায়ার সার্ভিস থেকে অনাপত্তিপত্র নেওয়া বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া বাণিজ্যিক যেকোনো ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে এই অনাপত্তিপত্র নিতে হয়। এর জন্য শর্ত হলো, নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবল, তাপ শনাক্তকরণ, ধোঁয়া শনাক্তকরণ, ছাদের ওপর ও ভূগর্ভস্থ পানির ট্যাংক এবং সাধারণ সিঁড়ির পাশাপাশি জরুরি নির্গমন সিঁড়ি থাকতে হবে। তবে খুলনা নগরীর অধিকাংশ বহুতল ভবন নির্মাণের সময় বাধ্যতামূলক এই অনাপত্তিপত্র নেওয়া হয়নি। 

এদিকে নগরীতে সাততলার বেশি উঁচু কয়েক শ ভবন গড়ে উঠলেও খুলনা ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপক গাড়ি সর্বোচ্চ সাততলা পর্যন্ত আগুন নেভাতে সক্ষম। টার্ন টেবিল লেডার (টিটিএল) দিয়ে ১৮ তলা পর্যন্ত আগুন নেভানো গেলেও, খুলনায় তা নেই। 

এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর নিয়ামুল হুদা বলেন, ভবনমালিকদের নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখার অনুরোধ জানানো হলেও তাঁরা গুরুত্ব দেন না। তাঁরা এর পেছনে অর্থ ব্যয় করতে চান না। এরই মধ্যে একটি টিটিএল খুলনার জন্য বরাদ্দ হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যে এটি ঢাকা থেকে পাঠানো হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত