Ajker Patrika

নিষিদ্ধ পলিথিনের ছড়াছড়ি

রেজা মাহমুদ, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২২, ১৬: ১৩
নিষিদ্ধ পলিথিনের ছড়াছড়ি

নীলফামারীর সৈয়দপুরে বাড়ছে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার। অল্প পুঁজিতে বেশি লাভ হওয়ায় অনেকেই এ ব্যবসায় ঝুঁকছেন। এ ছাড়া অধিকাংশ পলিথিন কারখানায় রয়েছে বিদ্যুতের অবৈধ সংযোগ। অগ্নিনির্বাপণসহ কারখানাগুলোতে নেই কোনো নিরাপত্তাব্যবস্থা। এতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা।

পরিবেশ অধিদপ্তরের রংপুর অফিসের সহকারী পরিদর্শক (নীলফামারী জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত) মনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, খুব শিগগির সৈয়দপুরে অবৈধ পলিথিন কারখানায় অভিযান পরিচালনা করা হবে। তবে পরিবেশ অধিদপ্তর একা পলিথিন বন্ধ করতে পারবে না, তার সঙ্গে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েরও সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে বলে অভিমত এ কর্মকর্তার।

জানা যায়, বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তর ২০০২ সালে এক প্রজ্ঞাপনে পলিথিনের সব ধরনের ব্যাগ উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাত, বিক্রি, প্রদর্শন, মজুত ও বিতরণ নিষিদ্ধ করে। কিন্তু সেই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উপজেলায় অবাধে চলছে পলিথিনের উৎপাদন ও বিপণন। প্রায় ১৫ লাখ টাকায় একটি পলিথিন উৎপাদনের কারখানা করে মাসে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা আয় করা যায়। তাই এখন অনেকেই ঝুঁকছেন এ ব্যবসায়। সৈয়দপুরের বেশির ভাগ পলিথিন কারখানা শহরের কয়ানিজপাড়া, চাঁদনগর, সাহেবপাড়া, মিস্ত্রিপাড়া, বাবুপাড়া, শহীদ জহুরুল হক (কাড়িহাটি) সড়ক, টার্মিনাল, গোলাহাট, বিসিক শিল্পনগরী এলাকাসহ বিভিন্ন আবাসিক ভবনে গড়ে উঠেছে। প্যাকেজিং ব্যবসার আড়ালে এসব কারখানায় নিষিদ্ধ পলিথিন তৈরি হচ্ছে। কারখানাগুলোতে দিনে নামমাত্র প্যাকেজিংয়ের কাজ হলেও মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত চলে নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন।

সরেজমিন দেখা গেছে, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিন স্থান করে নিয়েছে হাটে-মাঠে-ঘাটে, এমনকি সবার রান্নাঘরেও। দৈনন্দিন জীবনের সব কাজে পলিথিনের ব্যবহার চলছে। নিত্যদিনের বাজার থেকে শুরু করে সবকিছুর সঙ্গে দেওয়া হয় পলিথিন। আর ওসব পলিথিন ব্যবহারের পর যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে। ফলে পলিথিনে ভরাট হচ্ছে পয়োনিষ্কাশনের নালা-নর্দমা। আর তাতে পৌর এলাকায় তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা, দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। তা ছাড়া পলিথিনে চাপা পড়ছে ফসলি জমি। পলিথিন বা প্লাস্টিক বর্জ্যে স্থানীয় নদীর পানি পর্যন্ত দূষিত হচ্ছে।

সৈয়দপুরের পরিবেশবাদী সংগঠন সেতুবন্ধনের সম্পাদক আহসান হাবিব জনি আজকের পত্রিকাকে জানান, পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধের আইন থাকলেও কার্যকারিতা একেবারেই নেই। প্রথম দিকে ওই আইনের সফল প্রয়োগে পলিথিন বাজার থেকে প্রায় উঠেই গিয়েছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে আইনের শিথিলতার কারণে কয়েক বছর ধরে পলিথিনের ব্যাগে বাজার ভরে গেছে।

তিনি আরও বলেন, পলিথিন ব্যাগ একবার ব্যবহার করেই ফেলে দেওয়া হয়। রাস্তা ও গলি থেকে পলিথিন বাতাসে উড়ে একপর্যায়ে ড্রেনে-নর্দমায় জমা হয়। রাস্তার মধ্যে থাকা ড্রেনের মুখে পলিথিনের স্তূপ সব সময়ই চোখে পড়ে।

আহসান হাবিব বলেন, পলিথিন ৪০০ বছরেও পচে না। অর্থাৎ কাজ শেষে যে পলিথিন গলিতে বা রাস্তায় ফেলা হচ্ছে, তা পরিবেশ ধ্বংস করার হাতিয়ার হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পলিথিন একদিকে জলাবদ্ধতা বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে মাটির উর্বরতা কমাচ্ছে। তলদেশে পলিথিন জমা হয়ে নদী ভরাট হয়ে প্রাণ হারাচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর বগুড়ার শান্তাহার পৌর এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা পলিথিন কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ৫ জনের মৃত্যু হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত