Ajker Patrika

বায়োমেট্রিক মেশিনে নয়, হাজিরা চলছে খাতায়ই

মো. ফরিদ রায়হান, অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) 
আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২৩, ১০: ১৫
বায়োমেট্রিক মেশিনে নয়, হাজিরা চলছে খাতায়ই

কর্মকর্তার কক্ষের দেয়ালে সাঁটানো বায়োমেট্রিক মেশিন। কোনোটির আলো জ্বলছে, কোনোটির বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। কোথাও খুলে রাখা হয়েছে হাজিরা মেশিন। কোনো অফিসে আবার বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিনই সরবরাহ করা হয়নি।

কোনোটিতে যন্ত্র এলেও স্থাপন না করে ফেলে রাখা হয়েছে। সব অফিসেই হাজিরা হচ্ছে সনাতন পদ্ধতির নির্ধারিত খাতায়। আবার কর্মস্থলে গরহাজিরের অভিযোগও আগের মতোই।

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম, ইটনা ও মিঠামইন উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন ব্যবহারের চিত্র এটি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনুপস্থিতি রোধ এবং যথাসময়ে অফিসে আসা নিশ্চিত করতে ২০১৯ সালে এই তিন উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন স্থাপন করা হয়। কিন্তু বছর না ঘুরতেই বিকল হয়েছে অনেক মেশিন। কোভিড-১৯ মহামারিসহ নানা অজুহাতে এসব মেশিন মেরামত কিংবা পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজেদের ইচ্ছেমতো অফিসে আসা-যাওয়া করছেন। অভিযোগ রয়েছে, সাপ্তাহিক দুই দিন সরকারি ছুটির সঙ্গে রোববার ও বৃহস্পতিবার আধা বেলা বাড়তি ছুটি ভোগ করেন তাঁদের অনেকে। সরকার ‘হাওর ভাতা’ চালু করলেও কর্মস্থলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনুপস্থিতি রোধ করা যায়নি।

সম্প্রতি ওই তিন উপজেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ঘুরে দেখা যায়, ইটনা উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিনে আলো জ্বললেও নেই কার্যক্রম। একই অবস্থা উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর ও সমবায় অফিসে। হাজিরা মেশিনের বিদ্যুৎ-সংযোগ খুলে রাখা হয়েছে অষ্টগ্রাম উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কক্ষ ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে। ডিজিটাল হাজিরা মেশিনের দেখা মেলেনি অষ্টগ্রাম উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, উপজেলা সমবায় অধিদপ্তর, উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা ও উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে। মিঠামইন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার তালাবদ্ধ কক্ষে নিষ্ক্রিয় ডিজিটাল হাজিরা মেশিন। উপজেলা যুব উন্নয়ন, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসে পাওয়া যায়নি ডিজিটাল হাজিরা মেশিন।

অষ্টগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক শংকর চন্দ্র রায় বলেন, ‘যত দূর মনে আছে, ২০১৯ সালে স্ব স্ব দপ্তরের জেলা অফিস এই হাজিরা মেশিন সরবরাহ করে।’

অষ্টগ্রাম উপজেলা তথ্যসেবা কর্মকর্তা সানজিদা হক চুমকি বলেন, ‘২০২২ সালের মার্চে বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু করা হয়েছে। তখন থেকে আমরা নিয়মিত ডিজিটাল হাজিরা দিয়ে আসছি।’

ইটনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেজা মো. গোলাম মাসুম প্রধান মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি এখানে নতুন এসেছি। বায়োমেট্রিক হাজিরার বিষয়ে বিস্তারিত অবগত নই। বিষয়টি জেনে জানাতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত