‘ঐতিহ্যবাহী এই জমিদারবাড়ির বিভিন্ন কারুকাজ খুব নান্দনিক। আমি এই উপজেলায় যোগদানের পর বাড়িটি পরিদর্শন করি। আমার খুবই ভালো লেগেছে। এটি যদি সরকারিভাবে সংরক্ষণ করা হয়, তাহলে খুবই ভালো হবে।’ ধনবাড়ী পৌর শহরের নওয়াববাড়ি নিয়ে কথাগুলো বলেন ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সামিউল হক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নওয়াব বাহাদুর সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরীর বাড়িটিই নওয়াব আলী হাসান আলী রয়েল রিসোর্ট। বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এই পর্যটনকেন্দ্র ঢাকা-জামালপুর মহাসড়কের পাশেই অবস্থিত।

এখানকার দৃষ্টিনন্দন স্থাপনাগুলোর মধ্যে রয়েছে নওয়াব মঞ্জিল, নওয়াব প্যালেস, নওয়াব শাহি জামে মসজিদ, দিঘি, ভিলা ইত্যাদি। পুরোনো নকশাখচিত এসব ভবনের সব কক্ষের ফার্নিচার নবাবি আমলের। এ ছাড়া রয়েছে সম্পূর্ণ আধুনিক কাঠামোতে নির্মিত কটেজ। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য রয়েছে থাকার ব্যবস্থা। রয়েছে শিক্ষার্থীদের জন্যও ব্যবস্থা।

নওয়াব মঞ্জিল নামে ভবনটি ছিল প্রধান আবাসকক্ষ। এককালে সব নামিদামি অতিথি এখানে থাকতেন। এই ভবন এখন সব ভিআইপি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত। প্যালেস নামে বিশাল আকৃতির ভবনটি ছিল দরবার হল। বর্তমানে করপোরেট অতিথিদের জন্য সম্পূর্ণ আধুনিকভাবে সজ্জিত কনফারেন্স রুম। ভিলা নামের ২০০ বছরের পুরোনো ভবন ছিল অন্দরমহল।

রিসোর্টের পাশেই রয়েছে নওয়াব শাহি জামে মসজিদ। সাত শতাধিক বছরের পুরোনো মসজিদ। চীনা-মিসরীয়দের তৈরি মোগল আমলের স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন। এর মোজাইকসহ মেঝেতে মার্বেল পাথরের কারুকাজ বাংলাদেশে বিরল। মসজিদটির পাশে একটি কক্ষে রয়েছে নওয়াব বাহাদুরের কবর। সেখানে প্রায় ৮৮ বছর ধরে ২৪ ঘণ্টাই কোরআন তিলাওয়াত চলছে।

এ ব্যাপারে নওয়াব আলী হাসান আলী রয়েল রিসোর্টের ম্যানেজার মো. শরিফ হোসেন বলেন, এই রিসোর্টে দেশি-বিদেশি অনেক পর্যটক আসেন। এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ ও ব্যবস্থাপনা ভালো হওয়ায় তাঁরা প্রশান্তি নিয়ে এখান থেকে বাড়ি ফেরেন।

এ ব্যাপারে ধনবাড়ী পৌর মেয়র মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান বকল বলেন, ‘এটি আমাদের ধনবাড়ীর গর্ভ। এই নওয়াববাড়ি দেখতে দূরদূরান্ত থেকে লোকজন আসেন। এ ছাড়া পাশে রয়েছে একটি নবাবি আমলের জামে মসজিদ। এই মসজিদ মোগল আমলের স্থাপনার নিদর্শন। এর সৌন্দর্য যাতে নষ্ট না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।’