কোক স্টুডিও বাংলায় প্রকাশিত ‘মা লো মা’ গানটি জনপ্রিয় হয়েছে। কেমন লাগছে?
এটি বাংলা লোকসংস্কৃতির বিজয়। এই বিজয় সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। গৌরবটা সমস্ত বাংলা ভাষার মানুষের। একটি লোকসংগীতের সঙ্গে কত কিছুর সমন্বয় করা হয়েছে! আধুনিক যন্ত্রপাতি, র্যাপ ও আদিকালের ছাদ পেটানো গান। এত কিছুর সমন্বয় করেও গায়কদের স্বকীয়তা রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রীতম হাসানকে ধন্যবাদ ও সাধুবাদ জানাই অত্যন্ত কঠিন একটি কাজকে প্রেম-ভালোবাসা ও সাধনা দিয়ে সহজ করে তুলেছে। এই কারণে বৃদ্ধ থেকে তরুণ—সব মানুষকে গানটি নাড়া দিয়েছে।
কোক স্টুডিওতে যুক্ত হওয়া কীভাবে?
আমার ছোট ভাই সাগর দেওয়ানের মাধ্যমেই তাঁরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং তাদের পরিকল্পনা শোনায়। প্রায় ৮-৯ মাস লেগেছে এটি রূপান্তর করতে। ব্যস্ততার কারণে ভয়েস দিতে দেরি হয় আমার। রেকর্ড করার আগের রাতেও সারা রাত প্রোগ্রাম ছিল। যাওয়ার পর প্রীতম আমাকে জানায় সে কী করতে চাইছে।
কেন মা লো মা গানটি বেছে নিলেন?
কোক স্টুডিও থেকেই গানটি পছন্দ করা হয়েছে। যখন গানটির কথা আমাকে জানানো হলো, তখন তাদের সাধুবাদ জানালাম। তারা আধুনিক জামানার মানুষ হয়েও যে বাংলার শিকড়ের গান চূড়ান্ত করেছে, এটা অনেক বড় বিষয়।
এই গানের রচয়িতা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কী?
১৯৬১ সালে আমার জন্ম। জ্ঞান হওয়ার পর থেকে এই গান শুনে বড় হয়েছি। ষাটের দশকের আগে গানটি রেকর্ড করেন আমার দাদা খালেক দেওয়ান। সে সময় সারা বাংলাদেশে মা লো মা আলোড়ন তৈরি করে। তৎকালীন ঢাকা রেকর্ডের মালিক সালাহউদ্দিন সাহেব এক ইন্টারভিউতে বলেছিলেন, সে সময়ে আবদুল আলীমের গানের চেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে খালেক দেওয়ানের এই গানের রেকর্ড। এ ছাড়া আশির দশকে ওসমান খান, খালেক দেওয়ান, আবদুল লতিফ সাহেবকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছিল জাতীয় গ্রন্থাগারে। সেই অনুষ্ঠানে আমি মা লো মা গানটি গাই। ষাটের দশকে খালেক দেওয়ানের গান নিয়ে বই বের হয়েছে। ১৯৭৫ সালে ‘দেওয়ান গীতিকা’ নামে আরেকটি বই বের হয়। ১৯৯৭ সালে খালেক দেওয়ানের ১ হাজারের বেশি গান নিয়ে ‘খালেক দেওয়ানের গীতিসমগ্র’ নামে বই বের হয়। সব বইয়ে গানটির উল্লেখ আছে। শিল্পকলা একাডেমিতে যখন খালেক দেওয়ানকে পুরস্কৃত করা হয়, তখন মা লো মা গানটি পরিবেশন করা হয়।
খালেক দেওয়ান ও মালেক দেওয়ানের বিচরণ ছিল দেশজুড়ে। তাঁরা ছিলেন বাউলসংগীতের দিকপাল, তাঁদের পরিচিতি ছিল ঘরে ঘরে। এই রেকর্ড ছাড়া বিয়ে-শাদির অনুষ্ঠান হতো না। সারা দেশে এই গানটি আমি গেয়েছি। অন্য শিল্পীরাও গেয়েছেন। আমরা কোনো দিন শুনিনি গানটি রশিদ উদ্দিনের। হঠাৎ করে তারা বলছে এটি রশিদ উদ্দিনের গান। দুজন ব্যক্তিই বেঁচে নাই। দুই সাধকের প্রতিই আমাদের অগাধ শ্রদ্ধা। কে লিখছে তার চেয়ে বড় বিষয় হলো গানটা এখন বিশ্বের দরবারে পৌঁছে গেছে। তাদের কাছে কী প্রমাণ আছে আর আমাদের কাছে কী প্রমাণ আছে, তা নিয়ে বসে সমাধান করা উচিত। আমরা যদি উদার মনের মানুষ হই, তাহলে আর কাদা ছোড়াছুড়ি নয়, উভয়ে উভয়ের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হতে পারে।
বারী সিদ্দিকীও গানটি গাওয়ার সময় বলেছিলেন এটি রশিদ উদ্দিনের গান।
বারী সিদ্দিকীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি, তিনি টেলিভিশনের একজন বংশীবাদক হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিলেন। তিনি গানে এসেছেন হুমায়ূন আহমেদের হাত ধরে। তাঁর গানের বয়স খুব অল্প। খালেক দেওয়ান যখন গানটি রেকর্ড করেন তখন বারী সিদ্দিকীর জন্মও হয়নি। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, একজন গায়কের কথায় আমরা প্রমাণ করতে পারি না এটা কার লেখা। সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো খালেক দেওয়ান পাকিস্তান পিরিয়ডের রয়্যালটিপ্রাপ্ত গীতিকার। রেডিও, টেলিভিশনের আর্কাইভে তাঁর গান আছে। হাজার হাজার শিল্পী দেশ-বিদেশে এই গান গেয়েছেন। বারী সিদ্দিকী কখন কী বললেন, কেবল সেটাই প্রমাণ করে না যে গানটি খালেক দেওয়ানের লেখা না।
গানটির কপিরাইটও তো নেননি আপনারা?
লোকসংগীতশিল্পীরা উদার ও উদাস মনের হয়। দিনদুনিয়ার বিষয়কে প্রাধান্য দেন না। এ কারণেই কপিরাইটের কথা ভাবা হয়নি। বর্তমান সময়ে কপিরাইটের বিষয়টি চালু হয়েছে। একজন সাধকের প্রভাব আরেকজনের ওপর থাকতেই পারে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের ওপর লালন সাঁইয়ের প্রভাব রয়েছে—এমন কথা রবীন্দ্রনাথও বলেছেন। আসলে, কার প্রভাব কার ওপর পড়ছে, সেটা বিবেচ্য বিষয় নয়। তপন বাগচী, যিনি বাংলা একাডেমির একজন সহকারী পরিচালক, তিনিও এই বিষয়ে তাঁর একটি লেখায় পুরো বিষয়টি পরিষ্কারভাবে তুলে ধরেছেন।
আপনি তো অনেক গান লিখেছেন ও সুর করেছেন। সেই সংখ্যাটা কত হতে পারে?
সংগীত পরিবারে জন্ম হওয়ায় একেবারে ছোটবেলা থেকেই গানের সঙ্গে পরিচয়। গান লেখা ও সুর করা শুরু করি ১৯৮৬-৮৭ সাল থেকে। এখন পর্যন্ত দেড় হাজারের মতো গান লিখেছি আমি।
একসময় অডিও ক্যাসেটে অ্যালবাম প্রকাশ হতো। এরপর সিডি। এখন গান প্রকাশ পাচ্ছে ইউটিউব ও বিভিন্ন অ্যাপসে। প্রযুক্তির এই পরিবর্তনের সঙ্গে বাউলশিল্পীরা কি মানিয়ে নিতে পারছেন বলে মনে করেন?
বাউলরা প্রকৃতিগতভাবে বেড়ে ওঠেন। প্রকৃতির কাছ থেকেই তাঁরা শেখেন। সেভাবেই নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন সবাই। তবে এখন বাউলদের চেয়ে ইউটিউবাররা লাভবান বেশি হচ্ছে। ইউটিউবাররা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ভিডিও তাদের চ্যানেলে ছাড়ছে। শিল্পীরা সেখান থেকে কিছুই পাচ্ছেন না। আগে একজন শিল্পীর গান শুনতে হলে অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হতো। ইউটিউবের কল্যাণে এখন সহজেই সেই গান শোনা যাচ্ছে। কিন্তু শিল্পীদের প্রতি আগে সাধারণ মানুষের প্রেমের যে গভীরতা ছিল, সেটা কমে গেছে।
আপনার কি মনে হয় বাউলশিল্পীরা তাঁদের সঠিক মূল্যায়ন পাচ্ছেন?
পাচ্ছেন না। এই ব্যথার জায়গাটা আমাদের রয়েই গেছে। একটা কারাগার কোটি কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা হয়। কাদের জন্য? ক্রিমিনালদের জন্য। অথচ মুক্তচিন্তার মানুষদের গবেষণার জন্য কোনো প্রতিষ্ঠান কি তৈরি হয়েছে? যেখানে গবেষণা হবে, সাধনা হবে, মৌলিক চাহিদা নিয়ে তাদের চিন্তা করতে হবে না। বাউল তো সৃজনশীল কাজের সঙ্গে জড়িত। সে যদি খাবার, পোশাক, থাকার জায়গার চিন্তায় ডুবে থাকে তাহলে তাঁর দ্বারা সৃজনশীল কাজ কীভাবে হবে? যাঁরা এখনো বাউলগানের সঙ্গে জড়িত, তাঁরা ভালোবাসা থেকেই এটা ধরে রেখেছেন।
আপনি তো বিদেশেও গাইতে যান। সেখানে বাউলগান নিয়ে কেমন প্রতিক্রিয়া পান?
সরকারি-বেসরকারিভাবে ৬০টির বেশি দেশে গান গাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। বাংলা লোকসংস্কৃতির যে আবেদন, তার সুরের ও বাণীর যে গভীরতা, এটা ওরা ভাষা দিয়ে না বুঝলেও হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করে।
কোক স্টুডিও বাংলায় প্রকাশিত ‘মা লো মা’ গানটি জনপ্রিয় হয়েছে। কেমন লাগছে?
এটি বাংলা লোকসংস্কৃতির বিজয়। এই বিজয় সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। গৌরবটা সমস্ত বাংলা ভাষার মানুষের। একটি লোকসংগীতের সঙ্গে কত কিছুর সমন্বয় করা হয়েছে! আধুনিক যন্ত্রপাতি, র্যাপ ও আদিকালের ছাদ পেটানো গান। এত কিছুর সমন্বয় করেও গায়কদের স্বকীয়তা রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রীতম হাসানকে ধন্যবাদ ও সাধুবাদ জানাই অত্যন্ত কঠিন একটি কাজকে প্রেম-ভালোবাসা ও সাধনা দিয়ে সহজ করে তুলেছে। এই কারণে বৃদ্ধ থেকে তরুণ—সব মানুষকে গানটি নাড়া দিয়েছে।
কোক স্টুডিওতে যুক্ত হওয়া কীভাবে?
আমার ছোট ভাই সাগর দেওয়ানের মাধ্যমেই তাঁরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং তাদের পরিকল্পনা শোনায়। প্রায় ৮-৯ মাস লেগেছে এটি রূপান্তর করতে। ব্যস্ততার কারণে ভয়েস দিতে দেরি হয় আমার। রেকর্ড করার আগের রাতেও সারা রাত প্রোগ্রাম ছিল। যাওয়ার পর প্রীতম আমাকে জানায় সে কী করতে চাইছে।
কেন মা লো মা গানটি বেছে নিলেন?
কোক স্টুডিও থেকেই গানটি পছন্দ করা হয়েছে। যখন গানটির কথা আমাকে জানানো হলো, তখন তাদের সাধুবাদ জানালাম। তারা আধুনিক জামানার মানুষ হয়েও যে বাংলার শিকড়ের গান চূড়ান্ত করেছে, এটা অনেক বড় বিষয়।
এই গানের রচয়িতা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কী?
১৯৬১ সালে আমার জন্ম। জ্ঞান হওয়ার পর থেকে এই গান শুনে বড় হয়েছি। ষাটের দশকের আগে গানটি রেকর্ড করেন আমার দাদা খালেক দেওয়ান। সে সময় সারা বাংলাদেশে মা লো মা আলোড়ন তৈরি করে। তৎকালীন ঢাকা রেকর্ডের মালিক সালাহউদ্দিন সাহেব এক ইন্টারভিউতে বলেছিলেন, সে সময়ে আবদুল আলীমের গানের চেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে খালেক দেওয়ানের এই গানের রেকর্ড। এ ছাড়া আশির দশকে ওসমান খান, খালেক দেওয়ান, আবদুল লতিফ সাহেবকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছিল জাতীয় গ্রন্থাগারে। সেই অনুষ্ঠানে আমি মা লো মা গানটি গাই। ষাটের দশকে খালেক দেওয়ানের গান নিয়ে বই বের হয়েছে। ১৯৭৫ সালে ‘দেওয়ান গীতিকা’ নামে আরেকটি বই বের হয়। ১৯৯৭ সালে খালেক দেওয়ানের ১ হাজারের বেশি গান নিয়ে ‘খালেক দেওয়ানের গীতিসমগ্র’ নামে বই বের হয়। সব বইয়ে গানটির উল্লেখ আছে। শিল্পকলা একাডেমিতে যখন খালেক দেওয়ানকে পুরস্কৃত করা হয়, তখন মা লো মা গানটি পরিবেশন করা হয়।
খালেক দেওয়ান ও মালেক দেওয়ানের বিচরণ ছিল দেশজুড়ে। তাঁরা ছিলেন বাউলসংগীতের দিকপাল, তাঁদের পরিচিতি ছিল ঘরে ঘরে। এই রেকর্ড ছাড়া বিয়ে-শাদির অনুষ্ঠান হতো না। সারা দেশে এই গানটি আমি গেয়েছি। অন্য শিল্পীরাও গেয়েছেন। আমরা কোনো দিন শুনিনি গানটি রশিদ উদ্দিনের। হঠাৎ করে তারা বলছে এটি রশিদ উদ্দিনের গান। দুজন ব্যক্তিই বেঁচে নাই। দুই সাধকের প্রতিই আমাদের অগাধ শ্রদ্ধা। কে লিখছে তার চেয়ে বড় বিষয় হলো গানটা এখন বিশ্বের দরবারে পৌঁছে গেছে। তাদের কাছে কী প্রমাণ আছে আর আমাদের কাছে কী প্রমাণ আছে, তা নিয়ে বসে সমাধান করা উচিত। আমরা যদি উদার মনের মানুষ হই, তাহলে আর কাদা ছোড়াছুড়ি নয়, উভয়ে উভয়ের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হতে পারে।
বারী সিদ্দিকীও গানটি গাওয়ার সময় বলেছিলেন এটি রশিদ উদ্দিনের গান।
বারী সিদ্দিকীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি, তিনি টেলিভিশনের একজন বংশীবাদক হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিলেন। তিনি গানে এসেছেন হুমায়ূন আহমেদের হাত ধরে। তাঁর গানের বয়স খুব অল্প। খালেক দেওয়ান যখন গানটি রেকর্ড করেন তখন বারী সিদ্দিকীর জন্মও হয়নি। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, একজন গায়কের কথায় আমরা প্রমাণ করতে পারি না এটা কার লেখা। সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো খালেক দেওয়ান পাকিস্তান পিরিয়ডের রয়্যালটিপ্রাপ্ত গীতিকার। রেডিও, টেলিভিশনের আর্কাইভে তাঁর গান আছে। হাজার হাজার শিল্পী দেশ-বিদেশে এই গান গেয়েছেন। বারী সিদ্দিকী কখন কী বললেন, কেবল সেটাই প্রমাণ করে না যে গানটি খালেক দেওয়ানের লেখা না।
গানটির কপিরাইটও তো নেননি আপনারা?
লোকসংগীতশিল্পীরা উদার ও উদাস মনের হয়। দিনদুনিয়ার বিষয়কে প্রাধান্য দেন না। এ কারণেই কপিরাইটের কথা ভাবা হয়নি। বর্তমান সময়ে কপিরাইটের বিষয়টি চালু হয়েছে। একজন সাধকের প্রভাব আরেকজনের ওপর থাকতেই পারে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের ওপর লালন সাঁইয়ের প্রভাব রয়েছে—এমন কথা রবীন্দ্রনাথও বলেছেন। আসলে, কার প্রভাব কার ওপর পড়ছে, সেটা বিবেচ্য বিষয় নয়। তপন বাগচী, যিনি বাংলা একাডেমির একজন সহকারী পরিচালক, তিনিও এই বিষয়ে তাঁর একটি লেখায় পুরো বিষয়টি পরিষ্কারভাবে তুলে ধরেছেন।
আপনি তো অনেক গান লিখেছেন ও সুর করেছেন। সেই সংখ্যাটা কত হতে পারে?
সংগীত পরিবারে জন্ম হওয়ায় একেবারে ছোটবেলা থেকেই গানের সঙ্গে পরিচয়। গান লেখা ও সুর করা শুরু করি ১৯৮৬-৮৭ সাল থেকে। এখন পর্যন্ত দেড় হাজারের মতো গান লিখেছি আমি।
একসময় অডিও ক্যাসেটে অ্যালবাম প্রকাশ হতো। এরপর সিডি। এখন গান প্রকাশ পাচ্ছে ইউটিউব ও বিভিন্ন অ্যাপসে। প্রযুক্তির এই পরিবর্তনের সঙ্গে বাউলশিল্পীরা কি মানিয়ে নিতে পারছেন বলে মনে করেন?
বাউলরা প্রকৃতিগতভাবে বেড়ে ওঠেন। প্রকৃতির কাছ থেকেই তাঁরা শেখেন। সেভাবেই নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন সবাই। তবে এখন বাউলদের চেয়ে ইউটিউবাররা লাভবান বেশি হচ্ছে। ইউটিউবাররা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ভিডিও তাদের চ্যানেলে ছাড়ছে। শিল্পীরা সেখান থেকে কিছুই পাচ্ছেন না। আগে একজন শিল্পীর গান শুনতে হলে অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হতো। ইউটিউবের কল্যাণে এখন সহজেই সেই গান শোনা যাচ্ছে। কিন্তু শিল্পীদের প্রতি আগে সাধারণ মানুষের প্রেমের যে গভীরতা ছিল, সেটা কমে গেছে।
আপনার কি মনে হয় বাউলশিল্পীরা তাঁদের সঠিক মূল্যায়ন পাচ্ছেন?
পাচ্ছেন না। এই ব্যথার জায়গাটা আমাদের রয়েই গেছে। একটা কারাগার কোটি কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা হয়। কাদের জন্য? ক্রিমিনালদের জন্য। অথচ মুক্তচিন্তার মানুষদের গবেষণার জন্য কোনো প্রতিষ্ঠান কি তৈরি হয়েছে? যেখানে গবেষণা হবে, সাধনা হবে, মৌলিক চাহিদা নিয়ে তাদের চিন্তা করতে হবে না। বাউল তো সৃজনশীল কাজের সঙ্গে জড়িত। সে যদি খাবার, পোশাক, থাকার জায়গার চিন্তায় ডুবে থাকে তাহলে তাঁর দ্বারা সৃজনশীল কাজ কীভাবে হবে? যাঁরা এখনো বাউলগানের সঙ্গে জড়িত, তাঁরা ভালোবাসা থেকেই এটা ধরে রেখেছেন।
আপনি তো বিদেশেও গাইতে যান। সেখানে বাউলগান নিয়ে কেমন প্রতিক্রিয়া পান?
সরকারি-বেসরকারিভাবে ৬০টির বেশি দেশে গান গাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। বাংলা লোকসংস্কৃতির যে আবেদন, তার সুরের ও বাণীর যে গভীরতা, এটা ওরা ভাষা দিয়ে না বুঝলেও হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করে।
পর্দার নায়িকারা নিজেদের বয়স আড়ালে রাখা পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে জানান দেন তাঁর বয়স। গতকাল ছিল বাঁধনের ৪১তম জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানালেন এই তথ্য।
২ দিন আগে১০ বছরের বেশি সময় ধরে শোবিজে কাজ করছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা গেছে তাঁকে। সরকারি অনুদানের ‘দেবী’ নামের একটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রশংসিত হলেও সিনেমায় আর দেখা মেলেনি তাঁর। ছোট পর্দাতেও অনেক দিন ধরে অনিয়মিত তিনি। এবার শবনম ফারিয়া হাজির হচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। কমেডি রিয়েলিটি
২ দিন আগেআমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা। গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত এই যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’। আগামী ১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হবে ৭ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ দিন আগে‘বঙ্গবন্ধু’ পদবি বিলীন হবে না। হতে পারে না। যেমনটি ‘দেশবন্ধু’ চিত্তরঞ্জন দাশের পদবি বিলীন হয়নি। ইতিহাসে এসব পদবি অম্লান ও অক্ষয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব ছিল অনন্যসাধারণ। আপনজনকে তো অবশ্যই, শত্রুপক্ষের লোকেরাও ব্যক্তিগত পর্যায়ে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হতেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উচ্চপদের
২ দিন আগে