Ajker Patrika

এক সপ্তাহে ৩ খুন আতঙ্কে বাসিন্দারা

পীরগাছা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ জুন ২০২২, ১৫: ৩৩
এক সপ্তাহে ৩ খুন আতঙ্কে বাসিন্দারা

পীরগাছায় এক সপ্তাহের মধ্যে তিনটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। সবকটি ছিল নারীঘটিত। তবে এসব খুনের ঘটনায় অভিযুক্তরা যেভাবে দাম্ভিকতার সঙ্গে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, তাতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

পরকীয়ার জেরে উপজেলার অনন্তরাম সরকারটারী গ্রামে ২৭ মে রাতে খুন হন ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন (৩৮)। অভিযোগ রয়েছে, বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করেন প্রতিবেশী ফারুক হোসেন। হামলার পর দেলোয়ারের পরিবার ও এলাকাবাসী যখন তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে ব্যস্ত, তখন তাঁর বাড়িতে এসে মা দিলজান বেগমকে ফারুক বলেন, ‘বুড়ি, তোর ছেলেকে মেরে আসলাম।’ 

এই বলে ভুক্তভোগীর বাড়ির নলকূপে হাত-মুখ পরিষ্কার করেন ফারুক। সারা রাত নিজ ঘরে ঘুমিয়ে খুব সকালে বেরিয়ে যান বাড়ি থেকে। যদিও মৃত্যুর আগে দেলোয়ার অনেককে ফারুকের নাম বলে গেছেন। এর তিন দিন পর মিঠাপুকুরে ধরা পড়েন ফারুক। তিনি আদালতে একাই খুন করেছেন বলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

দ্বিতীয় খুনের ঘটনা ঘটে ২ জুন রাতে উপজেলার অন্নদানগর ইউনিয়নের খামার নয়াবাড়ী গ্রামে। স্বামী মাঈনুদ্দিন মিয়া ভালোবেসে বিয়ে করা স্ত্রী আয়শা বেগমকে (৩৬) পরকীয়ার জেরে কুড়াল ও শাবল দিয়ে খুন করেন বলে অভিযোগ উঠে। পরদিন সকালে তিনি থানায় গিয়ে বলেন, ‘আমি আমার স্ত্রীকে খুন করে এসেছি। আমাকে ধরেন, আমি শাস্তি পেতে চাই।’ তিনিও আদালতে স্ত্রী হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেন।

এ ঘটনার একদিন আগে পারুল ইউনিয়নের বীরাহিম কুঠিয়ালপাড়া গ্রামে ঘটে আরেক হত্যাকাণ্ড। তালাকনামায় সই ও দ্বিতীয় বিয়ে মেনে না নেওয়ায় মানিক মিয়া তাঁর প্রথম স্ত্রী মিলি বেগমকে (৩০) বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যা করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

মিলিকে ১ জুন রাতে হত্যা করে বাড়ির পাশে পুকুর পাড়ে গর্ত করে লবণ দিয়ে পুতে রাখা হয়। এরপর মানিকের মা ও ভাই আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে পালিয়ে গেলেও নতুন নাটক সাজান স্বামী মানিক। তিনি শ্বশুর বাড়ি ও এলাকায় প্রচার চালান, তার স্ত্রী নিখোঁজ। শ্বশুর আসাদ আলীকে নিয়ে স্ত্রীকে খুঁজতে থাকেন। তিনি শ্বশুরকে বলেন, ‘চলেন থানায় জিডি করি, মাটির নিচে থাকলেও বের হবে।’

ঘটনার তিন দিন পর মানিক শ্বশুর আসাদকে নিয়ে থানায় যান জিডি করতে। তখন পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, ‘আবার মেরে লুকিয়ে রাখেননি তো!’ উত্তরে মানিক বলেন, ‘আপনারা খুঁজে বের করেন। আমি মারলে আমাকে ধরবেন।’

এরপর পুলিশ জিডি নিয়ে মানিকের বাড়ি দেখতে যাওয়ার পথে খবর পায়, বাড়ির পেছনের গর্ত থেকে কুকুরে মানুষের মরদেহ টেনে তুলছে। তখন মানিককে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁকে নিয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ ঘটনায় মানিকের মা ও ভাইকে এখনো পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

এ ব্যাপারে পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরেস চন্দ্র বলেন, ‘প্রতিটি খুনের পেছনে রয়েছে নারীঘটিত বিষয়। পরকীয়া ও দ্বিতীয় বিয়ে মেনে না নেওয়ায় এ হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটেছে। আমরা দ্রুততম সময়ে খুনিদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। তাঁরা আদালতে খুনের কথা স্বীকারও করেছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বনশ্রীতে স্বর্ণ ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার আমিনুল ছাত্রলীগের, সুমন শ্রমিক দলের নেতা

সামরিক বাহিনীর ৮ সংস্থা ও স্থাপনার নাম পরিবর্তন

থানায় থানায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাদের তালিকা হচ্ছে

ককটেল ফুটতেই সেলুনে লুকায় পুলিশ, রণক্ষেত্র হয় এলাকা

মসজিদে লুকিয়েও রক্ষা পেলেন না স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও তাঁর ভাই, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিল প্রতিপক্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত