মোবাইল ফোনে প্রতারণা লাখ লাখ টাকা গায়েব

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২২, ১৫: ৪৭

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে মোবাইল ফোনে প্রতারণা বেড়েই চলেছে। প্রতারকের খপ্পরে পড়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে অনেকে বিপাকে পড়ছেন। সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন দপ্তর থেকে টাকা নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। তবে প্রশাসন থেকে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।

জানা গেছে, প্রতারক চক্র বিভিন্ন ফাঁদে ফেলে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। অনেক সময় ফোনে মেসেজ দিয়ে, ভুয়া হেল্পলাইন থেকে কল করে অ্যাকাউন্ট হালনাগাদ, নতুন অফার চালুসহ বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে মানুষের কাছে থেকে কৌশলে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

প্রতারণার শিকার মোল্লা ড্রাগসের মালিক হারুন অর রশিদ বলেন, ‘একটি অজ্ঞাত নম্বর থেকে মোবাইল ফোনে এক ব্যক্তি বলেন, “আমি রৌমারী শাখার সোনালী ব্যাংক ম্যানেজার বলছি, আপনার বাবা মুক্তিযোদ্ধা। তিনি মারা গেছেন। আপনার মা ভাতার টাকা তোলেন।

অনেকক্ষণ থেকে আপনার মাকে ফোন দিচ্ছি, তিনি ধরছেন না। আপনাকে বলছি, আপনার মায়ের নামে ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ এসেছে। যেহেতু আপনারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন। আজকে রাত ৮টার মধ্যে ৬০ হাজার টাকা আমার মোবাইল নম্বরে পাঠান।

তা না হলে বরাদ্দের টাকা ফেরত যাবে। আপনি ইউএনওর সঙ্গে কথা বলে দ্রুত টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।” আমাকে তিনি একটি নম্বর দিলে আমি ওই নম্বরে কল দিলে এক ব্যক্তি বলেন, “আমি ইউএনও বলছি। ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যাংক ঋণের টাকা জমা দেন। তা না হলে বরাদ্দের টাকা পাবেন না।” আমি হাওলাত করে ম্যানেজারের দেওয়া নম্বরে ১৮ হাজার টাকা পাঠিয়ে দিই।’

হারুন অর রশিদ আরও বলেন, ‘জানতে পারি, আমি প্রতারণার শিকার হয়েছি। সরকারের কাছে আমার দাবি, মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে নিয়ে এমন প্রতারণাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হোক, যাতে আর কোনো পরিবার আমার মতো প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্বান্ত না হয়।’

এ বিষয়ে রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোন্তাছের বিল্লাহ বলেন, ছয়-সাত বছর ধরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে। এতে প্রতিদিন অনেক মানুষ নিজেদের কষ্টের সঞ্চয় প্রতারকের হাতে তুলে দিচ্ছে। এ জন্য সবার আগে দরকার জনসচেতনতা। অনেকে প্রতারিত হয়ে লজ্জায় অভিযোগ পর্যন্ত করে না। আবার অনেকে টাকার পরিমাণ কম হওয়ায় অভিযোগ দেন না।

ওসি আরও বলেন, ‘যেসব অভিযোগ পাওয়া যায়, সেগুলোর তদন্ত করতে গিয়ে দেখা গেছে, যে নম্বরে টাকা নেওয়া হয়েছে, পরে সন্ধানে গেলে মাঝপথে লোকেশন হারিয়ে যায়। এখন আমাদের এই বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।’

রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘আমার নামে প্রতারণার খবর পেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সতর্ক করা হয়েছে। কেউ আমার নামে কল দিলে ওই নম্বরসহ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত