আর মাত্র ১০ দিন পর নওগাঁর মান্দা উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন। এর মধ্যে ১২ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে দুটি ইউপিতে রয়েছেন তিনজন করে। তিনটিতে আছেন দুজন করে এবং সাতটিতে একজন করে বিদ্রোহী রয়েছেন। দুটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকলেও দলীয় কোনো বিদ্রোহী নেই। বিদ্রোহী প্রার্থীরা নৌকার জয়ের পথে বড় বাধা হতে পারেন বলে আভাস পাওয়া গেছে।

তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচন আগামী ২৮ নভেম্বর। ১৪ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ৯৩ জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৭৩ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৫৪৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সবগুলো ইউপিতে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর পাশাপাশি একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। বাকিরা জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, সিপিবিসহ স্বতন্ত্র প্রার্থী। স্বতন্ত্রদের অধিকাংশ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা।

এর মধ্যে ভারশোঁ ইউপিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন তিনজন। তাঁরা হলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলতাজ উদ্দিন এবং তুহিন আলী ও আল মামুন শাহিন। মৈনম ইউপিতে বিদ্রোহী হলেন আবুল হোসেন, ইয়াছিন আলী রাজা ও আনিছুর রহমান। ভালাইন ইউপিতে দুজন বিদ্রোহী হলেন শরীফুল ইসলাম বাবু ও গোলাম মোস্তফা মণ্ডল। নুরুল্লাবাদে বিদ্রোহী গোলাম মোস্তফা ও গোলাম মোস্তফা প্রামাণিক। কসব ইউপিতে বিদ্রোহী আব্দুস সালাম সরকার ও এজিএম কিবরিয়া।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নির্বাচনকে ঘিরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। প্রতিটি ইউপির মোড় ও রাস্তার ধারে প্রার্থীদের পোস্টার শোভা পাচ্ছে। নৌকার প্রার্থীরা সভা-সমাবেশ করে সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরছেন। পাশাপাশি কর্মীদের নিয়ে সমাবেশ ও উঠান বৈঠক করছেন। তবে বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সভা-সমাবেশ করছেন না। তাঁরা বরং ভোটারদের বাড়ি-বাড়ি যাচ্ছেন। ভোট প্রার্থনা করছেন।

এদিকে সংঘাতের খবরও পাওয়া যাচ্ছে। গণেশপুর ইউপিতে গত শুক্রবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী হানিফ উদ্দিন মণ্ডলের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম বাবুল চৌধুরীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয় প্রার্থীর আটজন কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন।

এ ছাড়া গত ৭ নভেম্বর ভারশোঁ ইউপিতে নৌকার প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের কর্মীরা বিদ্রোহী প্রার্থী আলতাজ উদ্দিনের দুই কর্মীকে পিটিয়ে জখম করেন। নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে রাজি না হওয়ায় গত রোববার রাতে নৌকার প্রার্থী সুমনের হাতে মারধরের শিকার হন ইউনিয়নের সগুনিয়া মৎস্যজীবী পল্লির দুই নারীসহ চারজন।

নুরুল্লাবাদ ইউপির বাসিন্দা আসলাম হোসেন বলেন, ১২টি ইউপিতে বিদ্রোহী প্রার্থীরা নৌকার প্রার্থীদের গলার কাঁটা হতে পারেন।

কাঁশপাড়া ইউপির বাসিন্দা আব্দুল মজিদ বলেন, ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাঁরা নির্বিঘ্নে যেন ভোট দিতে পারেন এবং কেউ যেন তাঁদের বাধা না দেন সেই প্রত্যাশা করছেন তিনি।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। কোনো প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।