স্বাবলম্বী হতে চায় প্রতিবন্ধী সাইফুলের পরিবার

কাজীপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০২১, ০৫: ২৮
আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০২১, ০৯: ৩১

সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার বেলতৈল উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম। চিকিৎসা করাতে সহায়সম্বল বিক্রি করেছেন। সরকারের দেওয়া বাড়িতে কিছুদিন হলো পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাড়ি বাড়ি ঘুরে চাল-টাকা পয়সা তুলে তা দিয়ে চলছে সংসার। স্ত্রী আর সন্তানকে নিয়েই এভাবেই দিন পাড় করা এই পরিবারটি স্বাবলম্বী হতে চায়।

বগুড়ার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করা এই ব্যক্তি চাকরি নেন রাজধানীর সাভার ইপিজেডে। সেখানকার শান্তা ফ্যাক্টরির ডাইং পোস্টে কর্মরত ছিলেন। বেতনের টাকায় সংসার ভালোই চলছিল। হঠাৎ ২০০৮ সালের অক্টোবরের ১৮ তারিখ তাঁর জীবনে নেমে আসে কালোছায়া।

কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরছিলেন মাইক্রোবাসে। গাড়িটি টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলার পাইকুল্যাতে এলে একটি পণ্যবাহী ট্রাকের ধাক্কা কেড়ে নেয় সব স্বপ্ন-আশা। মরণের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া আহত সাইফুলকে চিকিৎসার জন্য রাজধানীর এনাম মেডিকেল, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল ও তৎকালীন পঙ্গু হাসপাতালসহ প্রায় সব হাসপাতালেই ব্যর্থ চিকিৎসা করা হয়।

সবশেষ পঙ্গু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে বগুড়ার শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শজিমেক) চিকিৎসার জন্য রেফার করেন। এখানেই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাঁর দুই পায়ের হাঁটু পর্যন্ত কেটে ফেলা হয়। সে থেকেই তিনি প্রতিবন্ধী।

সাইফুল বলেন, ‘আমার কোনো বাড়ি ঘর বসত ভিটা কিছুই ছিল না। চিকিৎসা করাতে সব বিক্রি করা হয়েছে। সরকার আমাকে একটি ঘর দিয়েছেন। প্রতিবন্ধী কার্ডও করে দিয়েছেন। ছোট্ট এক সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়েই আমার সংসার চলে। সারা দিন বাড়ি বাড়ি চাল উঠিয়ে কয়েক দিন তা খাই। শেষ হলে আবার বের হই। এই চাল ওঠাতে বাড়ি বাড়ি যাওয়া আমার খুব কষ্ট হয়। একটি ভ্যানগাড়ি কেনার অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু হয়ে ওঠেনি। যে কয়টাকা জোগাড় করি চিকিৎসা আর খাওয়া-দাওয়াতেই শেষ হয়ে যায়।’

সাইফুলের স্ত্রী তোলা খাতুন বলেন, ‘অন্যের বাড়ি থেকে পানি এনে যাবতীয় কাজ করতে হত। একটি টিউবওয়েলের বড়ই প্রয়োজন ছিল।’ স্বপ্নফেরী ১৫ কল্যাণ সংস্থার ইতিমধ্যেই তাঁদের টিউবওয়েলের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। তবে সেলাইমেশিনে কাজ করে স্বামীর সংসারের হাল ধরতে চান তিনি। কিন্তু পাবেন কোথায়? কেনার মতো সামর্থ্য যে তাঁদের নেই। তাঁরাও স্বাবলম্বী হতে চান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসান সিদ্দিকী জানান, ‘বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য পল্লিবিদ্যুৎ কার্যলয়কে বলার পর মিটারসহ বিদ্যুতের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত