দিনাজপুরের হিলিতে শীতের কারণে শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন নানা বয়সী মানুষ। বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বয়স্করা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গড়ে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ জন শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত মানুষ ভর্তি হন, আগে যেখানে ২৫ থেকে ৩০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ছিলেন। রোগীদের বাড়তি চাপের কারণে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকসহ নার্সরা।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা পঞ্চাশোর্ধ্ব সফি উদ্দিন বলেন, ‘হিলিতে গত কয়েক দিন ধরেই প্রচুর ঠান্ডা পড়ছে। সঙ্গে কুয়াশা, যার কারণে আমার শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে। শ্বাস নিতে খুব সমস্যা হচ্ছিল। বাধ্য হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।’

অপর রোগী রবিউল হোসেন বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। কয়েক দিন ধরে ঠান্ডা পড়ায় এর মধ্যে কাজে বের হয়ে জ্বর-সর্দি শ্বাসকষ্ট হাঁপানি দেখা দিয়েছে। দুদিন ধরে অবস্থা খুব খারাপ হওয়ার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। এখন কোনো ওষুধপাতি কিনতে পারছি না, খুব কষ্টের মধ্যে আছি।’

হাসপাতালে শিশুকে নিয়ে আসা সুরভী খাতুন বলেন, ‘প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়েছে, সঙ্গে কুয়াশা, যার কারণে বাচ্চাদের ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, জ্বর, সর্দি ও কাশিসহ শীতজনিত নানা রোগ হচ্ছে। শিশুরা খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিচ্ছে, খেলাধুলা করছে না, শরীর দুর্বল হয়ে অবস্থা খারাপ হচ্ছে। ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হওয়ায় শরীর দুর্বল হয়ে পড়ছে। যার কারণে বাচ্চাদের নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসকদের কাছে আসতে হচ্ছে।’

শিশুকে নিয়ে আসা অপর মা হালিমা বেগম বলেন, ‘আমার বাচ্চার ডায়রিয়া হওয়ার কারণে দুদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। খুব ঠান্ডা পড়েছে, সঙ্গে কুয়াশা পড়ায় বাচ্চার সমস্যা হয়েছে। ডাক্তার দেখে ওষুধ দিয়েছে, সেটি খাওয়াচ্ছি। একেবারে ভালো হয়নি, আরও হয়তো কয়েক দিন থাকতে হবে।’

হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. রাকিব হাসান বলেন, গত সাত দিন ধরেই শীতের প্রকোপ বেড়েছে। যার কারণে অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত যেসব রোগ রয়েছে এসব রোগে আক্রান্ত অনেক রোগী পাওয়া যাচ্ছে। সামনের দিনে শীতের মাত্রা আরও বাড়তে পারে। তাই যতটা পারা যায় শীত থেকে বেঁচে থাকতে হবে, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে, শীতকালে প্রচুর শাকসবজি পাওয়া যায়, সেগুলো খেতে হবে, ঠান্ডা পানি পান পরিহার করাসহ শীত যেন না লাগে এ জন্য গরম কাপড় পরার, বিশেষ করে শিশুদের যেন ঠান্ডা না লেগে, সে বিষয়ে নজর দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।