Ajker Patrika

অলিগলিতে ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার

সাবিত আল হাসান, নারায়ণগঞ্জ
আপডেট : ১৭ জুন ২০২২, ১০: ৫৮
অলিগলিতে ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার

নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন অলিগলিতে নামে-বেনামে গড়ে উঠছে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। চিকিৎসাসেবার নামে ব্যবসা করাই এসব প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য। লাভজনক হওয়ায় একক বা যৌথ মালিকানায় অনেকেই এ ব্যবসায় আগ্রহী হচ্ছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের কোনটি বৈধ আর কোনটি অবৈধ, তা বোঝার উপায় নেই রোগীদের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলাজুড়ে অবৈধ অর্ধশতাধিক ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এ ছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্রের বৈধতা রয়েছে, তাদের সেবা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। এ ছাড়া রোগীদের বড় একটি অংশ সেবার মান সম্পর্কে অসচেতন হওয়ায় দালালদের খপ্পরে পড়ে খোয়াচ্ছেন বাড়তি অর্থ।

সম্প্রতি অনিবন্ধিত হাসপাতাল বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের খবর পেয়ে প্রসূতি মা ও নবজাতককে অস্ত্রোপচার টেবিলে রেখেই পালিয়ে যান চিকিৎসক নার্সসহ অন্য কর্মীরা। সিদ্ধিরগঞ্জের পদ্মা জেনারেল হাসপাতালের এমন কাণ্ডের খবর প্রকাশিত হলে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

নুরুল আলম নামে এক সাবেক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক বলেন, ‘ছোট ও মাঝারি মানের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসকের পরিবর্তে নার্স, ওয়ার্ড বয় দ্বারা সেবা দেওয়া হয়। এ ছাড়া ভুল রিপোর্ট, পুরোনো নষ্ট মেশিন কোনোমতে চালিয়ে সেবা দিতে পারলেই ভালো আয় হয়। তবে এসব ক্লিনিকে থাকা স্টাফদের চেয়ে বিভিন্ন ফার্মেসি, দালালদের পেছনেও অর্থ খরচ করতে হয় মালিকদের। এ ছাড়া স্থানীয় প্রভাবশালী লোকদেরও বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে হাতে রাখতে হয়। এভাবেই অবৈধ বা কিছু বৈধ ডায়াগনস্টিক লাভবান হতে থাকে।’

রোগীরা বলছেন, বৈধ ও অবৈধ প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তাঁদের তেমন ধারণা থাকে না। চিকিৎসাসেবা পেয়ে সুফল পেলেই সেখানে বারবার আসা-যাওয়া হয় তাঁদের। এ ছাড়া ফার্মেসির মালিক বা স্থানীয় চিকিৎসাসেবায় বিজ্ঞ এমন কারও মাধ্যমেই ডায়াগনস্টি আসা-যাওয়া হয় তাঁদের। রোগীদের দাবি, অবৈধ প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখলে প্রতারিত হবেন না তাঁরা।

নারায়ণগঞ্জের মেডিহোপ হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. তনয় কুমার সাহা বলেন, ‘অবৈধ ক্লিনিক ও হাসপাতালে রোগীদের ঝুঁকি সব সময়। অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলোর অধিকাংশেরই ডিউটি ডাক্তার থাকে না। সেখানে নার্স বা ওয়ার্ড বয় দিয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। অনেক সময় চিকিৎসকের সঙ্গে ফোনে কথা বলে তারা চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকে। এ ছাড়া ক্লিনিকের যন্ত্রাংশের মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। তাই রোগীদের উচিত কোনো একটি ক্লিনিকে সেবা নেওয়ার আগে খোঁজখবর নেওয়া।’

নাম গোপন রাখার শর্তে এক চিকিৎসক বলেন, ‘অবৈধ ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোর বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার পরেও স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের ম্যানেজ করে ফের চালু হয়। এমনও হয়েছে একাধিকবার জরিমানা বা সিলগালা হওয়ার পরেও সেই প্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু হয়েছে।’

জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. মশিউর রহমান বলেন, ‘সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে ১১টি অবৈধ ক্লিনিক-হাসপাতাল বন্ধ করা হয়েছে। আরও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। জেলাজুড়ে ঠিক কতগুলো অবৈধ ক্লিনিক রয়েছে তার স্পষ্ট তথ্য নেই। তবে বৈধ ৯৯টি ক্লিনিক-হাসপাতাল এবং ৫৫টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে। অনুমোদনহীন ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা নেওয়া স্বাভাবিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। তবু বিভিন্ন চক্রের মাধ্যমে রোগীরা সেখানে যায়। এ ক্ষেত্রে রোগীদের আরও সচেতন হতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত