যশোরে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৩৯ পরিবার ফের টিসিবির পণ্য পাচ্ছে। আজ রোববার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পণ্য বিক্রি শুরু হবে। প্রথম দিনে জেলার ৮ উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন ও পৌরসভার ২১ হাজার ৫৪৬ কার্ডধারী এই পণ্য কিনতে পারবেন। প্রত্যেক পরিবারকে ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য ক্রয় করতে হবে। যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান আনুষ্ঠানিকভাবে পণ্য বিক্রির উদ্বোধন করবেন।

কার্ড ছাড়া কেউ টিসিবির পণ্য কিনতে পারবেন না। প্রতিদিন এই টিসিবি পণ্য পাবেন ১০ হাজারের বেশি পরিবার। কার্ডধারীরা ২২০ টাকায় দুই লিটার সয়াবিন তেল, ১১০ টাকায় দুই কেজি চিনি ও ১৩০ টাকায় দুই কেজি মসুরের ডাল হিসেবে ৪৬০ টাকার প্যাকেজে ক্রয় করবেন। যশোর শহরের ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে এবং উপজেলাতে বিভিন্ন ইউনিয়নের নির্ধারিত স্থান থেকে কার্ডধারীরা এসব পণ্য কিনতে পারবেন।

জেলার আট উপজেলায় ১৮ জন ডিলার টিসিবির এসব পণ্য বিক্রি করবেন। একজন ডিলার দুই দিন করে পণ্য বিক্রি করতে পারবেন। জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় টিসিবির পণ্য বিক্রি করবেন ডিলাররা। প্রতি পরিবারের জন্য বরাদ্দ থাকবে একটি প্যাকেট। প্যাকেটে থাকবে দু’লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি মসুর ডাল ও দুই কেজি চিনি।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৮ উপজেলার এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৩৯ ফ্যামিলি কার্ডধারী পরিবার রয়েছে। ফ্যামিলি কার্ডধারী এসব পরিবার ভর্তুকি মূল্যে পাবে টিসিবির তিন ধরনের পণ্য। এর মধ্যে চৌগাছায় উপজেলার ১১ ইউনিয়ন ও চৌগাছা পৌরসভায় ১১ হাজার ৫৮১, বাঘারপাড়ার ৯ ইউনিয়ন ও ও বাঘারপাড়া পৌরসভায় ১১ হাজার ৮২০, অভয়গরের আট ইউনিয়ন ও নওয়াপাড়া পৌরসভায় ১২ হাজার ১৭২, শার্শার ১১ ইউনিয়ন ও বেনাপোল পৌরসভায় ১৮ হাজার ৪৩৮, মনিরামপুরের ১৭ ইউনিয়ন ও মনিরামপুর পৌরসভায় ২১ হাজার ৬২৬, ঝিকরগাছার ১১ ইউনিয়ন ও ঝিকরগাছা পৌরসভায় ১৩ হাজার ২৫৫, কেশবপুরের ১১ ইউনিয়ন ও কেশবপুর পৌরসভায় ১৪ হাজার ৪৪৫ জন এবং সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও যশোর পৌরসভার ৩৪ হাজার ১০২টি পরিবার ভর্তুকি মূল্যে এসব পণ্য কিনতে পারবেন।

একজন টিসিবি ডিলার জানিয়েছেন, প্রতিটি প্যাকেটে দুই কেজি তেল, দুই কেজি ডাল ও দুই কেজি চিনি থাকবে বলে তাঁদের জানানো হয়েছে। টিসিবির ডিলাররা সয়াবিন তেল ১১০ টাকা লিটারে, ডাল ৬৫ ও চিনি ৫৫ টাকা কেজি দরে সরবরাহ করবেন। তিনি জানান ২৫ জুনের মধ্যেই এসব পণ্য প্যাকেজিং সম্পন্ন করা হয়েছে।

নিত্যপণ্যের এই দুর্মূল্যের সময় ভর্তুকি মূল্যে তিনটি পণ্য পেলে বেশ উপকার হবে বলে মনে করছেন কার্ডধারী মানুষ। তাঁরা বলছেন, ‘রমজান মাসে কার্ডের মাধ্যমে টিসিবির জিনিস পেয়েছিলাম। এখন তেল, ডাল ও চিনির দাম বেশি। আবারও যদি টিসিবির পণ্য তাহলে অনেক উপকার হবে।’

প্রায় তিন মাস পর টিসিবির পণ্য পাওয়ার খবরে ফ্যামিলি কার্ডধারীর অনেকেই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা অনেক ডিলারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। ডিলাররা বলছেন, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে টিসিবির পণ্য বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এই উদ্যোগ কিছুটা হলেও নিম্ন আয়ের মানুষের উপকারে আসবে বলে ডিলাররাও মনে করছেন।

এ বিষয়ে টিসিবি পণ্য সরবরাহ কার্যক্রমের সমন্বয়ক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল হাসান জানান, আজ রোববার থেকে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হবে। এরই মধ্যে ডিলারদের সঙ্গে সভা করে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত নির্ধারিত স্থানে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। অনুপস্থিত কার্ডধারীদের সংখ্যা একই স্থানে তাৎক্ষণিকভাবে উপস্থিত নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে বিক্রি করা হবে বলেও তিনি জানান।