তাঁদের কান্নাভেজা বিদায়

সেরেনার অমীমাংসিত অবসর
গত আগস্টে বিখ্যাত ফ্যাশন ম্যাগাজিন ‘ভোগ’কে বিদায়ের ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন সেরেনা উইলিয়ামস। মা হওয়ার পর বয়সও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল টেনিসের রানির সামনে। ক্যারিয়ারে ২৩টি গ্র্যান্ড স্লাম জিতে নিজেকে অনন্য চূড়ায় নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।  মার্কিন কৃষ্ণকলির শেষ লড়াই দেখার জন্য নিউইয়র্কের আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে ভিড় করেছিলেন অসংখ্য তারকা। তবে তাঁদের অপেক্ষায় রেখে ইউএস ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডে ওঠে যান সেরেনা। আর সেখানেই থামেন। সময়টা ৩ সেপ্টেম্বর। যখন সবাই তাঁর কান্নাভেজা বিদায় সম্ভাষণ শোনার অপেক্ষায়, সেরেনা অবাক করে জানিয়ে দিলেন, এ দেখাই শেষ দেখা নয়। কোনো একসময় ফের ফিরবেন জানিয়ে বিদায়টা রহস্যময় করে রাখলেন ৪১ বছর বয়সী তারকা। 

ফেদেরারের বিদায়ে নাদালের কান্না 
গত সেপ্টেম্বর হয়ে আছে ক্রীড়া বিশ্বের জন্য শোকের মাস। সেরেনার ‘বিদায়’ রহস্যের চাদরে ঢাকা থাকলেও টেনিসকে বিদায় জানান আরেক কিংবদন্তি রজার ফেদেরার। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি বিদায়ের ঘোষণা দেন টেনিসের রাজা। দীর্ঘদিন চোটের সঙ্গে লড়ছিলেন তিনি। অবশেষে এক সপ্তাহ পর এলো সেই শোকের দিন। ফেদেরারের বিদায় উপলক্ষে লন্ডনে রজার কাপে বসল তারার হাট। সুইস তারকার আবেগঘন বিদায় কেবল বিশ্বকে নয়, কাঁদিয়েছিল দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী রাফায়েল নাদালকেও। কোর্টের বাইরে তাঁরা যে অকৃত্রিম বন্ধু! দুজনে এদিন টিম ইউরোপের হয়ে নীল জার্সিতে জুটি বেঁধে নামেন কোর্টে। এ যেন ছিল বেদনার নীল রঙের প্রতীকও। ফেদেরার-নাদালের কান্না জন্ম দেয় ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম এক আইকনিক ছবির।

টেলরের যাত্রার সমাপ্তি
গত এপ্রিলে দীর্ঘ ১৬ বছরের যাত্রা শেষ হয় নিউজিল্যান্ডের  কিংবদন্তিতুল্য ব্যাটার রস টেলরের। আগেই অবসরের ঘোষণা  দিয়েছিলেন তিনি। টেস্টকে বিদায় জানান বছরের শুরুতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। এর চার মাস পর চিরদিনের জন্য তুলে রাখেন ব্যাট-প্যাড। কেবল টেলর নন, আরেক কিউই ক্রিকেটার কলিন ডি গ্রান্ডহোমও বিদায়ের ঘোষণা দেন। ২০২২ সালে ক্রিকেট থেকে বিদায় নেওয়া ক্রিকেটারের সংখ্যা কম নয়। অনেকে বিদায় নিয়েছেন ভিন্ন ভিন্ন ফরম্যাট থেকে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে বিদায় জানান মুশফিকুর রহিম। ওয়ানডে থেকে অবসর নেন অ্যারন ফিঞ্চ ও বেন স্টোকস। টেস্ট থেকে দাসুন গুনাথিলাকা। সব ফরম্যাট থেকে বিদায় নেন মোহাম্মদ হাফিজ, সুরঙ্গা লাকমল, ক্রিস মরিস, ইয়ন মরগান, ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইরন পোলার্ড ও আয়ারল্যান্ডের কেভিন ও’ব্রায়েন। 

রোনালদোর অশ্রুসিক্ত বিশ্বকাপ
ঘোষণা দিয়ে ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ খেলতে এসে শিরোপা নিয়ে ঘরে ফিরেছেন লিওনেল মেসি। কিন্তু সময়ের অন্য দুই তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও নেইমার কাতার থেকে ঘরে ফেরেন কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে হেরে অশ্রুসিক্ত চোখে। রোনালদোরও এটি ছিল শেষ বিশ্বকাপ। পরের বিশ্বকাপে তাঁর বয়স হবে ৪১ বছর। স্বাভাবিকভাবে পরের আসরের পর্তুগাল দলে জায়গা না পাওয়া স্বাভাবিক সিআর সেভেনের জন্য। মরক্কোর বিপক্ষে হারের পর তাঁর কান্নাভেজা চোখ নিয়ে দ্রুত ড্রেসিংরুমের দিকে হেঁটে চলাই বুঝিয়ে দেয়, শিরোপা জিতে বিশ্বকাপ শেষ করতে কেমন উদ্গ্রীব ছিলেন তিনি। হতে পারে নেইমারের এটাই শেষ বিশ্বকাপ। অবশ্য পরের বিশ্বকাপেও খেলার সুযোগ থাকবে তাঁর। শেষ বিশ্বকাপ খেলে ফেলেছেন লুকা মদরিচ ও ইডেন হ্যাজার্ডও।