Ajker Patrika

ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

গাজী আব্দুল কুদ্দুস, ডুমুরিয়া
আপডেট : ২২ জুন ২০২২, ১৫: ২৪
ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১২ জন কনসালট্যান্টের পদ রয়েছে। কিন্তু আছেন মাত্র দুজন (অ্যানেসথেসিয়া ও শিশু)। এখানে নেই অবকাঠামোগত কোনো সুযোগ-সুবিধা। এক্স-রে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম যন্ত্র থাকলেও তিন বছরের বেশি সময় ধরে তা অকেজো হয়ে পড়ে আছে। নতুন যন্ত্রের জন্য দেওয়া হচ্ছে না কোনো চাহিদাপত্রও।

খুলনার সবচেয়ে বড় উপজেলা ডুমুরিয়া। ১৪টি ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত এই উপজেলায় প্রায় চার লাখ লোকের বাস। প্রতিটি ইউনিয়নে রয়েছে একটি করে ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র। যদিও বর্তমানে একটিরও অস্তিত্ব নেই।

গত সপ্তাহে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ৫০ শয্যার এ হাসপাতালটিতে অবলীলায় চরে বেড়াচ্ছে গরু-ছাগল। মাঝেমধ্যে হাসপাতাল ভেতরেও ঢুকে পড়ে। সবচেয়ে সমস্যায় রয়েছে হাসপাতালে প্রবেশের সড়কটি। যেখানে চলাচলকারী সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে যায়। হাসপাতালের মেঝেতে যেখানে সেখানে পানের পিক। টাইলস উঠে গেছে অনেক জায়গায়। পড়ে আছে হাসপাতালের বর্জ্যও। ৫০ শয্যার হাসপাতাল হলেও পুরুষ ও নারী মিলিয়ে রোগী আছেন ১৫-১৬ জন। অথচ আশপাশের ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর সবই চকচকে ঝকঝকে। হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডের একাধিক রোগী বলেন, এখানকার সেবা ভালো না। ডাক্তাররা সময়মতো আসেন না। নার্সরা মাঝেমধ্যে এসে ঘুরে-ফিরে দেখে যান। যাঁদের অর্থ নেই, তাঁরাই শুধু এখানে ভর্তি থাকেন।

হাসপাতালসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা ফিরোজ হোসেন, আতিয়ার রহমান শেখ ও নাসিমা খাতুন বলেন, এখানে কোনো সিজার অপারেশন হয় না। সিজারের রোগী এলে তাঁকে কৌশলে পাঠিয়ে দেওয়া হয় আশপাশের ক্লিনিকে। কিন্তু কেন দেওয়া হয় তা তাঁরা জানেন না। তাঁরা বলেন, হাসপাতালের সড়কেই ২০ থেকে ৩০ গজ দূরে রয়েছে চার-পাঁচটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এই হাসপাতালের একসময়ের প্যাথলজিস্ট রায়হান নিজেই একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে তুলেছেন হাসপাতাল সড়কের বিপরীতে।

তবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শেখ সুফিয়ান রুস্তম জানান ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘আমি তিন বছরের বেশি সময় এখানে যোগদান করেছি। এর আগে থেকেই বিকল হয়ে আছে এক্স-রে ও দুটি আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন। এগুলো মেরামত করার জন্য কোনো চাহিদাপত্র দেওয়া হয়নি। না দেওয়ার কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, এখানে ৪৪০ ভোল্টের বৈদ্যুতিক লাইন নেই। ফলে এক্স-রে মেশিন চলে না।’

এই চিকিৎসক নিজেই অভিযোগ করে বলেন, এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১২ জন কনসালট্যান্টের পদ রয়েছে। কিন্তু আছেন মাত্র দুজন (অ্যানেসথেসিয়া ও শিশু)। এখানে নেই অবকাঠামোগত কোনো সুযোগ-সুবিধা। নতুন ভবন হলেও তা এখনো বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। বর্ষাকালে পানিতে তলিয়ে যায় হাসপাতাল; যা থেকে পরিত্রাণের উপায় নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত