Ajker Patrika

প্রতিবন্ধী মিনা ও তাহমিনার স্বপ্ন ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার

যশোর প্রতিনিধি
প্রতিবন্ধী মিনা ও তাহমিনার স্বপ্ন ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার

যশোরে দুই হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান মিনা খাতুন ও তাহমিনা। দুজনই জন্মগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী। মিনার দুই পায়ে সমস্যা আর তাহমিনার মেরুদণ্ডের তিনটি হাড় নেই। কিন্তু তাঁদের অদম্য মনোবলের কাছে কোনো বাধাই বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।

প্রতিবন্ধী হলেও থেমে থাকেনি এ দুজনের শিক্ষাজীবন। তাঁদের একজন মায়ের কোলে, অন্যজন মায়ের ঘাড়ে ভর করে কেন্দ্রে গিয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। দুজনেরই স্বপ্ন, ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে পরিবারের দুঃখ ঘোচানোর।

মিনা খাতুন (২০) যশোর সদর উপজেলার সিরাজসিংগা গ্রামের ডাব বিক্রেতা আব্দুস সাত্তারের মেয়ে। আর তাহমিনা একই এলাকার দিনমজুর আব্দুল মজিদ সরদারের মেয়ে। দুজনই যশোর মুক্তিযোদ্ধা কলেজের মানবিক বিভাগের ছাত্রী। ৬ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষায় তাঁরা যশোর সরকারি কলেজ পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে অংশ নিচ্ছেন। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় যশোর শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ২০ মিনিট বেশি তাঁদের জন্য ধার্য করেছে।

মিনার মা আছিয়া খাতুন বলেন, ‘জন্ম থেকেই মিনা প্রতিবন্ধী। সে যখন জন্মগ্রহণ করে, প্রতিবেশীরা মিনা আর আমাকে নিয়ে কটু কথা বলে। একটা সময় ওকে দেখে আমি নিজেই সাহস পাওয়া শুরু করি। মিনা ছোটবেলা স্বাভাবিক মানুষের মতো হাঁটাচলা করতে না পারলেও লেখাপড়ার প্রতি তার প্রবল উৎসাহ ছিল। তারপর কোলে করে তাকে প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক পর্যায়ে লেখাপড়া শেষ করাই।’

আছিয়া খাতুন আরও বলেন, ‘এবার সে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। অনেক প্রতিবন্ধকতা জয় করে সে এই পর্যন্ত এসেছে। আমার স্বামী একজন ডাব বিক্রেতা। আমরা স্বামী-স্ত্রী সংগ্রাম করে তাকে এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছি। আমরা বিশ্বাস করি, মিনা অনেক বড় হবে।’

মিনার বাবা আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘আমার যা একটু জমি ছিল ছোটবেলা থেকে মিনার পেছনে চিকিৎসা করাতে গিয়ে শেষ করেছি। এখন আমি নিঃস্ব। মেয়ের চলাচল করতে নানা অসুবিধা। ধারদেনা করে একটা হুইলচেয়ার কিনলেও সেটা তার চালাতে অসুবিধা হয়। সে মোটরচালিত হুইলচেয়ার বা তিন চাকার মোটরসাইকেল কিনে দিতে বলে। কিন্তু অর্থের অভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না।’

মিনা বলেন, ‘আমার স্বপ্ন ম্যাজিস্ট্রেট হব। সবার সহযোগিতা পেলে তা সম্ভব বলে আমি বিশ্বাস করি।’

তাহমিনা তাঁর সম্পর্কে বলেন, ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে ম্যাজিস্ট্রেট হবেন। সেই স্বপ্নকে ধীরে ধীরে বুনে চলেছেন তিনি। পরীক্ষা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নেবেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অন্য শিক্ষার্থীদের দেখলে তো মন খারাপ হয়ই। তারপরও বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখি। আমি জীবনে হার মানতে চাই না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত