সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে

শেখ আবু হাসান, খুলনা
প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২২, ০৬: ০৫
আপডেট : ২৬ জুন ২০২২, ১৩: ৫৮

খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক বলেছেন, সর্বনাশা প্রমত্ত পদ্মা পাড়ি দেওয়ার সেই দুঃসহ যন্ত্রণা, আর সীমাহীন দুর্ভোগ থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ মুক্ত হয়েছে। আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা নয়, সাড়ে ছয় কিলোমিটারের পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন পার হবে মাত্র ৬ থেকে ৭ মিনিটে। যেটা ছিল এত দিনের কল্পনার। আজ সেটি বাস্তব। এর মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল শনিবার দীর্ঘ প্রত্যাশিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর খুলনা সিটি মেয়র তাঁর প্রতিক্রিয়ায় এমন কথা বলেন। খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসক এবং খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদও তাঁর প্রতিক্রিয়ায় প্রায় একই অভিমত প্রকাশ করেছেন।

মেয়র খালেক তাঁর প্রতিক্রিয়ায় আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একক প্রচেষ্টা, তাঁর দৃঢ়তা, সততা, দূরদর্শিতা ও সাহসী নেতৃত্বের কারণে জাতির দীর্ঘদিনের স্বপ্ন, প্রত্যাশা আজ পূরণ হয়েছে। সে জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রাণঢালা অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। মেয়র বলেন, শিল্প ও বন্দর নগরীর খ্যাত খুলনার পাশাপাশি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থায় আসবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। সেই সঙ্গে এই অঞ্চলে গড়ে উঠবে নতুন নতুন শিল্প কারখানা। ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটবে। সহজ যোগাযোগ ও কম সময়ের কারণে মোংলা, পায়রা সমুদ্র বন্দের গতিশীলতা কয়েক গুন বাড়বে। এক কথায় অবহেলিত, বঞ্চিত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নসহ জীবনমানেরও উন্নতি ঘটবে।

খুলনা জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান প্রশাসক এবং খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শুধু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ নয়, সারা দেশের মানুষ এর সুফল ভোগ করবেন এবং উপকৃত হবেন। এখন গাড়ি চলার পাশাপাশি ট্রেনও চলবে। ফলে কম সময়ে এ অঞ্চলের ব্যবসায়ী, কৃষক তাদের সব ধরনের পণ্য রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিতে পারবেন। এতে তারা উপকৃত হবেন।

পদ্মা সেতু চালুর কারণে মোংলা বন্দরে এখন অধিক সংখ্যক জাহাজ আসবে। ফলে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য আশানুরূপভাবে বৃদ্ধি পাবে। পদ্মা সেতুর কারণে ইতিমধ্যে এ অঞ্চলে নতুন শিল্প কারখানা গড়ে ওঠার লক্ষণ শুরু হয়েছে। মোট কথা পদ্মা সেতুর কারণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। আর এই সব কিছু সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে। তিনি প্রধানমন্ত্রী না থাকলে এই বিশাল কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়ন করা অসম্ভব ছিল। শত বাধা, বিপত্তি, ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে তিনি পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন করেছেন। তিনি বলে, যারা এক সময় পদ্মা সেতুর বিরোধিতা করেছিলেন, তারা আজ এই সেতুর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পারছেন। সে জন্য সমগ্র জাতি আজ বঙ্গবন্ধু কন্যাকে স্যালুট জানায়।

খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি কাজী আমিনুল হক বলেছেন, পদ্মা সেতু আমাদের গর্বের সেতু। একটি স্বাধীন দেশের সক্ষমতা ও উন্নয়নের প্রতীক। বাঙালি জাতির জন্য একটি মাইল ফলক। জাতি হিসেবে আজ আমরা বিশ্ব দরবারে সম্মানের অধিকারী। আমাদের প্রিয় নেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো মেগা প্রকল্প করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া এই বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা অসম্ভব ছিল। সমগ্র জাতি আজ তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ।

চেম্বার সভাপতি আরও বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে দেশের ২১ জেলার মানুষ শুধু উপকৃত হবে না, সারা দেশের মানুষ উপকৃত হবে। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের সঙ্গে সহজ যাতায়াত ও ব্যবসা-বাণিজ্যে গতির সঞ্চর হবে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের ব্যাপক আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটবে। রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে যাতায়াতের যে দুর্ভোগ ও ভোগান্তি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ পেয়ে আসছিল পদ্মা সেতু চালু হওয়ার তার অবসান হবে।

ফরিদপুর, শরিয়তপুর, মাদারীপুর খুলনা বিভাগ ও বরিশাল বিভাগে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারসহ নতুন কলকারখানা গড়ে উঠবে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগ থেকেই এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দেশের শিল্পপতি ও উদ্যোক্তারা এ অঞ্চলে শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠার জন্য ইতিমধ্যে জমি কেনা শুরু করেছেন। মোট কথা দেশি বিনিয়োগকারীরা প্রস্তুত হয়ে আছেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত