হাসপাতাল থেকে ‘ছড়াচ্ছে’ করোনা

মেহেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭: ১৬
আপডেট : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৪: ৪৯

মেহেরপুরে জেনারেল হাসপাতালের করোনার নমুনা পরীক্ষার বুথ আর বহির্বিভাগ পাশাপাশি। চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তিদের লম্বা লাইন অনেক সময় চলে যাচ্ছে বুথের প্রাচীর পর্যন্ত। অথচ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অনেকের মুখে থাকে না মাস্ক। কারও কারও থাকলে তা-ও থুতনির নিচে। অনেকেই মানেন না স্বাস্থ্যবিধি। তাহলে হাসপাতাল থেকেই কি করোনা ছড়াচ্ছে প্রশ্ন অনেকের।

বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা সদর উপজেলার আশরাফপুর গ্রামের জমিলা খাতুন মুখে মাস্ক নেই। মাস্ক পরেননি কেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘মাস্ক নিয়ে এসেছি, পরা হয়নি। কারণ, মাস্ক পরলেই শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।’

গোপালপুর গ্রামের সামেনা খাতুন এসেছেন পায়ে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে। কিন্তু তিনিও মাস্ক পরেননি। মাস্ক পরেননি এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘক্ষণ ধরে মাস্ক পরে থাকতে পারিনি। মাস্ক তো সঙ্গেই নিয়ে এসেছি। মাস্ক না পরলেও করোনা আমাদের হবে না। তাই মাস্ক পরি না।’

রামদাসপুর গ্রামের যুবক রনি এসেছেন তাঁর ভাতিজার পায়ের সমস্যা নিয়ে। শত শত মানুষের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন অথচ তাঁর মাস্কটি শার্টের পকেটে। তিনি বলেন, ‘মাস্ক নিয়ে এসেছি কিন্তু পরা হয়নি। দীর্ঘক্ষণ ধরে মাস্ক পরে থাকলে মাথা ব্যথা করে।’ তাঁর সঙ্গে আসা বাকি দুজনের মুখেও নেই মাস্ক। এভাবেই জেলার শত শত মানুষ মাস্ক না পরেই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছে। বাড়ি ফিরে আক্রান্ত হচ্ছেন সর্দি, কাশি ও জ্বরে।

মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আরএমও মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘নাগরিক হিসেবে আমাদেরও কিছু দায়িত্ব আছে। অথচ সেগুলোও আমরা মোটেও মানছি না। আমরা চেষ্টা করছি, তাঁদের বোঝানোর। কিন্তু আমরা চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আগের মতো অবস্থা। এখানে চিকিৎসা নিতে আসা শিক্ষিত মানুষেরও একই অবস্থা। আসলে কেউ নিয়ম মানতে চান না। সরকারি বিধি মোতাবেক প্রতিটি মানুষের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। অথচ মানুষ তা মানছেন না। ফলে হাসপাতালে, বাজার, চায়ের দোকান থেকেই ছড়াচ্ছে করোনা।’

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মানুষের মধ্যে করোনার কোনো ভীতিই নেই। ফলে বেশির ভাগই মানুষ মাস্ক পরছেন না। এমনকি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেও মাস্ক পরছেন না। নিয়ম মানাতে শুধু চিকিৎসক নয়, রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক ও সামাজিক সংগঠনকে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই জনগণকে সচেতন করা সম্ভব। আমরা হাসপাতালের স্টাফদের নিয়ে চেষ্টা করছি, চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তিদের সচেতন করার। মাস্ক পরতে উদ্বুদ্ধ করা। এরপরও সফল হচ্ছি না।’

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় এখন করোনা রোগীর সংখ্যা ১৭৯। গতকাল সোমবার সুস্থ হয়েছেন ৪ জন। তাঁরা সদর উপজেলার বাসিন্দা। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে আরও ৩১ জন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত