ফারুক মেহেদী, ঢাকা
কৃচ্ছ্রসাধনে সরকার যখন মরিয়া, তখন কিছু আমলা দল বেঁধে বিদেশ ‘ভ্রমণে’ বের হচ্ছেন। এসব দলে সচিব, অতিরিক্ত সচিব থেকে শুরু করে তাঁদের জুনিয়ররাও আছেন। তাঁদের কেউ যাচ্ছেন চার-পাঁচ দিনের কোর্স করতে, কেউবা নিজ নিজ মন্ত্রণালয় বা প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, স্থাপনা কিংবা কার্যক্রম দেখতে।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বিদেশ ভ্রমণ-সংক্রান্ত সাম্প্রতিক সরকারি নির্দেশনা (জিও) পর্যালোচনা করে দেখা গেছে শতাধিক আমলা বিদেশ ভ্রমণের পাইপলাইনে আছেন। এর মধ্যে একটি বড় অংশ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের। অথচ কৃচ্ছ্রসাধনে সরকারের সর্বশেষ পদক্ষেপ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে রাশ টানার ঘোষণা এসেছে এ মন্ত্রণালয় থেকে।
ডলার সাশ্রয় এবং খরচ কমানোর চেষ্টায় কয়েক মাস ধরে দফায় দফায় নানা উদ্যোগ ও নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায়, সরকারের খরচ কমানোর স্বার্থে প্রায় নিয়মিতই সবাইকে কৃচ্ছ্রসাধনের অনুরোধ করছেন। অথচ ক্রান্তিকালে দেশের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর এ চাওয়াও আমলে নিচ্ছেন না অনেক আমলা। উল্টো সরকারি নির্দেশনা, প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ, আহ্বান ও নির্দেশনা উপেক্ষা করে অব্যাহতভাবে বিদেশ ভ্রমণ জারি রেখেছেন প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের আমলারা।
এ ব্যাপারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কৃচ্ছ্রসাধনে সরকারের চাওয়া নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। তবে সরকারি কর্মকর্তা যাঁরা নিষেধাজ্ঞার পরও বিদেশ যাচ্ছেন। এটা কীভাবে সম্ভব? দেখার কি কেউ নেই? বিভিন্ন প্রকল্প বা কর্মসূচির আওতায় তাঁরা যে বিদেশ যাচ্ছেন, এসব কর্মসূচির অনুমোদন কে দিচ্ছেন? জিও কীভাবে অনুমোদন হচ্ছে?’
আমলাদের বিদেশ ভ্রমণসংক্রান্ত সরকারি নির্দেশনা বা জিও পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত রোববার জুলাই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় একটি জিও প্রকাশ করেছে। এতে জানানো হয়েছে, মন্ত্রণালয় ও এর বিভিন্ন দপ্তরের ছয় কর্মকর্তা ১৮ জুলাই থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত যুক্তরাজ্য সফর করবেন। তাঁরা মূলত যুক্তরাজ্যে ফ্যাক্টরি অ্যাক্সেপটেন্স টেস্ট দেখতে যাবেন। তালিকায় রয়েছেন বিপিসির পরিচালক কাজী মো. মোজাম্মেল হক, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন, ইস্টার্ন রিফাইনারির এমডি লোকমান হোসেন, একই প্রতিষ্ঠানের ডিজিএম তাজুল ইসলাম, এজিএম মেজবাহ উদ্দীন ও ডেপুটি ম্যানেজার মো. আহমুদ্দুল্লাহ।
রোববার জারি করা আরেকটি জিওতে দেখা যায়, সচিব মর্যাদার পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যসহ ২৫ সিনিয়র আমলা সম্পূর্ণ সরকারি খরচে চার-পাঁচ দিনের একটি কোর্স করতে যাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ায়। তাঁরা আগামী ২৮ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করবেন। তালিকায় আছেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মামুন আল রশীদ, ফ্যামিলি প্ল্যানিং দপ্তরের মহাপরিচালক শাহান আরা বানু, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবুল কালাম, পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার মহাপরিচালক দেলোয়ার হোসেন, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন, অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য খোকন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রওশন আরা বেগম এবং সদ্য বদলি করা বিমানের এমডি আবু সালেহ মোস্তফা কামাল। এর বাইরেও তালিকায় পিপিপি কার্যালয়ের সিইও, স্থানীয় সরকার বিভাগ, ধর্ম মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সব মিলিয়ে ২৫ কর্মকর্তা রয়েছেন।
তবে সরকারের নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পরও বিদেশ সফরে যাওয়া সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার সংখ্যাই বেশি দেখা যাচ্ছে। রোববারই জারি করা জিওতে দেখা যায়, একজন যুগ্ম সচিব একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীর সঙ্গে চলতি মাসের ৩১ তারিখ ফ্রান্স যাবেন।
এর আগে ১২ জুলাই জারি করা একই মন্ত্রণালয়ের আরেকটি জিওতে দেখা যায়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় ও পিডিবির চার কর্মকর্তা ১৭ থেকে ২২ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন গ্যাস টারবাইন পর্যবেক্ষণ করতে। একই মন্ত্রণালয়ের ২৯ জুন জারি করা জিওতে দেখা যায়, মন্ত্রণালয় ও এর একটি প্রতিষ্ঠানের তিন কর্মকর্তাও যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন। তাঁদের ১৪ জুলাই সেখানে যাওয়ার কথা। আর অবস্থান করার কথা ২০ জুলাই পর্যন্ত। এই ভ্রমণে তাঁদের বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রপাতি দেখা ও জ্ঞান আহরণের কথা বলা হয়েছে।
এই রকমভাবে গত ১৫ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত মন্ত্রণালয়টির বেশ কিছু জিও পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এ সময়ে আরও অন্তত ৬০ জন আমলা জাপান, আমেরিকা, ভারত, থাইল্যান্ড, পোল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, সুইজারল্যান্ড, ইতালিসহ আরও বিভিন্ন দেশে যাওয়ার জন্য জিও জারি করে রেখেছেন। তাঁদের অনেকে ভ্রমণ শেষ করে এসেছেন, অনেকে যাওয়ার প্রস্তুতির মধ্যে আছেন।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের বাইরে অন্যান্য মন্ত্রণালয়/দপ্তরের অনেক কর্মকর্তাও এরই মধ্যে জিও করে বিদেশ যাওয়ার পাইপলাইনে আছেন বলে জানা গেছে।
বিভিন্ন সরকারি সূত্র থেকে জানা যায়, শুধু বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ই নয়, কমবেশি প্রায় সব মন্ত্রণালয় থেকেই কর্মকর্তারা বিদেশ যাওয়া অব্যাহত রেখেছেন। তাঁদের ভ্রমণের খরচ নিজ নিজ মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তরের তহবিল থেকে মেটানোর কথা বলা হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ পাওয়া ঠিকাদারদের অর্থায়নে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ঠিকাদারদের সঙ্গে প্রকল্প কাজের চুক্তির সময়ই পণ্য ও সেবা সরবরাহ দেওয়ার আগে তার গুণাগুণ যাচাই করে দেখার অংশ হিসেবে কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ করিয়ে আনার কথা বলা আছে। সে জন্যই তাঁরা যাচ্ছেন। তবে এ ক্ষেত্রে সরকারের টাকা খরচ না হলেও ভ্রমণের খরচ মেটাতে দেশ থেকে ডলার কিনে নিয়েই বিদেশ যাওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রেও ডলার খরচ বন্ধ হচ্ছে না।
এ ছাড়া সম্প্রতি একটি প্রকল্পের আওতায় জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যানসারের স্ক্রিনিং দেখতে সরকারের আরও ৫০ কর্মকর্তা বিদেশ যাচ্ছেন বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। এই প্রকল্পটি গতকাল একনেকে অনুমোদন হয়েছে বলে জানা যায়। এর আগে চরের একটি প্রকল্পে দুই দফায় অন্তত ২১ কর্মকর্তা বিদেশ ভ্রমণের জিও করেন। প্রথম দফায় ১১ জন ভ্রমণ শেষ করে এলেও বাকিরা পরে আর যাননি।
বিদেশ ভ্রমণের তালিকায় নাম থাকা কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় লোডশেডিংয়ের নির্দেশনা দিয়ে যদি ওই মন্ত্রণালয় থেকেই দল বেঁধে কর্মকর্তারা বিদেশে যেতে থাকেন, তবে তা সরকারের ঘোষিত নীতিবিরুদ্ধ হয়। এটা থামানো উচিত।
জানতে চাইলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট কাটানোর একটা উপায় হিসেবে সরকার বিদেশ সফর নিরুৎসাহিত করছে। এর মধ্যেই আবার ঢালাওভাবে বিদেশ সফরের অনুমতি দেওয়া সরকারের সিদ্ধান্তেরই স্ববিরোধিতা এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অমান্য করা। এটা একটা ভুল বার্তা দিচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তহীনতা ও সমন্বয়হীনতা ফুটে ওঠে।
কৃচ্ছ্রসাধনে সরকার যখন মরিয়া, তখন কিছু আমলা দল বেঁধে বিদেশ ‘ভ্রমণে’ বের হচ্ছেন। এসব দলে সচিব, অতিরিক্ত সচিব থেকে শুরু করে তাঁদের জুনিয়ররাও আছেন। তাঁদের কেউ যাচ্ছেন চার-পাঁচ দিনের কোর্স করতে, কেউবা নিজ নিজ মন্ত্রণালয় বা প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, স্থাপনা কিংবা কার্যক্রম দেখতে।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বিদেশ ভ্রমণ-সংক্রান্ত সাম্প্রতিক সরকারি নির্দেশনা (জিও) পর্যালোচনা করে দেখা গেছে শতাধিক আমলা বিদেশ ভ্রমণের পাইপলাইনে আছেন। এর মধ্যে একটি বড় অংশ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের। অথচ কৃচ্ছ্রসাধনে সরকারের সর্বশেষ পদক্ষেপ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে রাশ টানার ঘোষণা এসেছে এ মন্ত্রণালয় থেকে।
ডলার সাশ্রয় এবং খরচ কমানোর চেষ্টায় কয়েক মাস ধরে দফায় দফায় নানা উদ্যোগ ও নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায়, সরকারের খরচ কমানোর স্বার্থে প্রায় নিয়মিতই সবাইকে কৃচ্ছ্রসাধনের অনুরোধ করছেন। অথচ ক্রান্তিকালে দেশের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর এ চাওয়াও আমলে নিচ্ছেন না অনেক আমলা। উল্টো সরকারি নির্দেশনা, প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ, আহ্বান ও নির্দেশনা উপেক্ষা করে অব্যাহতভাবে বিদেশ ভ্রমণ জারি রেখেছেন প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের আমলারা।
এ ব্যাপারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কৃচ্ছ্রসাধনে সরকারের চাওয়া নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। তবে সরকারি কর্মকর্তা যাঁরা নিষেধাজ্ঞার পরও বিদেশ যাচ্ছেন। এটা কীভাবে সম্ভব? দেখার কি কেউ নেই? বিভিন্ন প্রকল্প বা কর্মসূচির আওতায় তাঁরা যে বিদেশ যাচ্ছেন, এসব কর্মসূচির অনুমোদন কে দিচ্ছেন? জিও কীভাবে অনুমোদন হচ্ছে?’
আমলাদের বিদেশ ভ্রমণসংক্রান্ত সরকারি নির্দেশনা বা জিও পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত রোববার জুলাই বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় একটি জিও প্রকাশ করেছে। এতে জানানো হয়েছে, মন্ত্রণালয় ও এর বিভিন্ন দপ্তরের ছয় কর্মকর্তা ১৮ জুলাই থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত যুক্তরাজ্য সফর করবেন। তাঁরা মূলত যুক্তরাজ্যে ফ্যাক্টরি অ্যাক্সেপটেন্স টেস্ট দেখতে যাবেন। তালিকায় রয়েছেন বিপিসির পরিচালক কাজী মো. মোজাম্মেল হক, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন, ইস্টার্ন রিফাইনারির এমডি লোকমান হোসেন, একই প্রতিষ্ঠানের ডিজিএম তাজুল ইসলাম, এজিএম মেজবাহ উদ্দীন ও ডেপুটি ম্যানেজার মো. আহমুদ্দুল্লাহ।
রোববার জারি করা আরেকটি জিওতে দেখা যায়, সচিব মর্যাদার পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যসহ ২৫ সিনিয়র আমলা সম্পূর্ণ সরকারি খরচে চার-পাঁচ দিনের একটি কোর্স করতে যাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ায়। তাঁরা আগামী ২৮ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করবেন। তালিকায় আছেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মামুন আল রশীদ, ফ্যামিলি প্ল্যানিং দপ্তরের মহাপরিচালক শাহান আরা বানু, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবুল কালাম, পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার মহাপরিচালক দেলোয়ার হোসেন, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন, অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য খোকন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রওশন আরা বেগম এবং সদ্য বদলি করা বিমানের এমডি আবু সালেহ মোস্তফা কামাল। এর বাইরেও তালিকায় পিপিপি কার্যালয়ের সিইও, স্থানীয় সরকার বিভাগ, ধর্ম মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সব মিলিয়ে ২৫ কর্মকর্তা রয়েছেন।
তবে সরকারের নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পরও বিদেশ সফরে যাওয়া সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার সংখ্যাই বেশি দেখা যাচ্ছে। রোববারই জারি করা জিওতে দেখা যায়, একজন যুগ্ম সচিব একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীর সঙ্গে চলতি মাসের ৩১ তারিখ ফ্রান্স যাবেন।
এর আগে ১২ জুলাই জারি করা একই মন্ত্রণালয়ের আরেকটি জিওতে দেখা যায়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় ও পিডিবির চার কর্মকর্তা ১৭ থেকে ২২ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন গ্যাস টারবাইন পর্যবেক্ষণ করতে। একই মন্ত্রণালয়ের ২৯ জুন জারি করা জিওতে দেখা যায়, মন্ত্রণালয় ও এর একটি প্রতিষ্ঠানের তিন কর্মকর্তাও যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন। তাঁদের ১৪ জুলাই সেখানে যাওয়ার কথা। আর অবস্থান করার কথা ২০ জুলাই পর্যন্ত। এই ভ্রমণে তাঁদের বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রপাতি দেখা ও জ্ঞান আহরণের কথা বলা হয়েছে।
এই রকমভাবে গত ১৫ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত মন্ত্রণালয়টির বেশ কিছু জিও পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এ সময়ে আরও অন্তত ৬০ জন আমলা জাপান, আমেরিকা, ভারত, থাইল্যান্ড, পোল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, সুইজারল্যান্ড, ইতালিসহ আরও বিভিন্ন দেশে যাওয়ার জন্য জিও জারি করে রেখেছেন। তাঁদের অনেকে ভ্রমণ শেষ করে এসেছেন, অনেকে যাওয়ার প্রস্তুতির মধ্যে আছেন।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের বাইরে অন্যান্য মন্ত্রণালয়/দপ্তরের অনেক কর্মকর্তাও এরই মধ্যে জিও করে বিদেশ যাওয়ার পাইপলাইনে আছেন বলে জানা গেছে।
বিভিন্ন সরকারি সূত্র থেকে জানা যায়, শুধু বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ই নয়, কমবেশি প্রায় সব মন্ত্রণালয় থেকেই কর্মকর্তারা বিদেশ যাওয়া অব্যাহত রেখেছেন। তাঁদের ভ্রমণের খরচ নিজ নিজ মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তরের তহবিল থেকে মেটানোর কথা বলা হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ পাওয়া ঠিকাদারদের অর্থায়নে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ঠিকাদারদের সঙ্গে প্রকল্প কাজের চুক্তির সময়ই পণ্য ও সেবা সরবরাহ দেওয়ার আগে তার গুণাগুণ যাচাই করে দেখার অংশ হিসেবে কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ করিয়ে আনার কথা বলা আছে। সে জন্যই তাঁরা যাচ্ছেন। তবে এ ক্ষেত্রে সরকারের টাকা খরচ না হলেও ভ্রমণের খরচ মেটাতে দেশ থেকে ডলার কিনে নিয়েই বিদেশ যাওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রেও ডলার খরচ বন্ধ হচ্ছে না।
এ ছাড়া সম্প্রতি একটি প্রকল্পের আওতায় জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যানসারের স্ক্রিনিং দেখতে সরকারের আরও ৫০ কর্মকর্তা বিদেশ যাচ্ছেন বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। এই প্রকল্পটি গতকাল একনেকে অনুমোদন হয়েছে বলে জানা যায়। এর আগে চরের একটি প্রকল্পে দুই দফায় অন্তত ২১ কর্মকর্তা বিদেশ ভ্রমণের জিও করেন। প্রথম দফায় ১১ জন ভ্রমণ শেষ করে এলেও বাকিরা পরে আর যাননি।
বিদেশ ভ্রমণের তালিকায় নাম থাকা কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় লোডশেডিংয়ের নির্দেশনা দিয়ে যদি ওই মন্ত্রণালয় থেকেই দল বেঁধে কর্মকর্তারা বিদেশে যেতে থাকেন, তবে তা সরকারের ঘোষিত নীতিবিরুদ্ধ হয়। এটা থামানো উচিত।
জানতে চাইলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট কাটানোর একটা উপায় হিসেবে সরকার বিদেশ সফর নিরুৎসাহিত করছে। এর মধ্যেই আবার ঢালাওভাবে বিদেশ সফরের অনুমতি দেওয়া সরকারের সিদ্ধান্তেরই স্ববিরোধিতা এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অমান্য করা। এটা একটা ভুল বার্তা দিচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তহীনতা ও সমন্বয়হীনতা ফুটে ওঠে।
১০ বছর ধরে নিজের আত্মজীবনী লিখেছেন বরেণ্য অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্মাতা আবুল হায়াত। নাম দিয়েছেন ‘রবি পথ’। অবশেষে প্রকাশ হচ্ছে তাঁর আত্মজীবনী। আগামী ২ নভেম্বর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজন করা হয়েছে রবি পথের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান।
৩ ঘণ্টা আগেপর্দার নায়িকারা নিজেদের বয়স আড়ালে রাখা পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আজমেরী হক বাঁধন। প্রতিবছর নিজের জন্মদিনে জানান দেন তাঁর বয়স। গতকাল ছিল বাঁধনের ৪১তম জন্মদিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানালেন এই তথ্য।
২ দিন আগে১০ বছরের বেশি সময় ধরে শোবিজে কাজ করছেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। নাটকের পাশাপাশি ওটিটিতে দেখা গেছে তাঁকে। সরকারি অনুদানের ‘দেবী’ নামের একটি সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন। প্রশংসিত হলেও সিনেমায় আর দেখা মেলেনি তাঁর। ছোট পর্দাতেও অনেক দিন ধরে অনিয়মিত তিনি। এবার শবনম ফারিয়া হাজির হচ্ছেন নতুন পরিচয়ে। কমেডি রিয়েলিটি
২ দিন আগেআমাদের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা। গণমানুষের সংস্কৃতি হিসেবে বিবেচিত এই যাত্রাপালা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে ‘যাত্রা উৎসব-২০২৪’। আগামী ১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে শুরু হবে ৭ দিনব্যাপী এই উৎসব।
২ দিন আগে