Ajker Patrika

সরকারি গুদামে ধান দিতে অনীহা কৃষকের

সাখাওয়াত হোসেন হৃদয়, পাকুন্দিয়া
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২২, ১৪: ০৮
সরকারি গুদামে ধান দিতে অনীহা কৃষকের

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় চলতি মৌসুমে সরকারি খাদ্যগুদামের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানে সরকারনির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সম্ভাবনা নেই বলে জানা গেছে। নির্ধারিত সময়ের আর মাত্র দিন কয়েক বাকি থাকলেও ধানের সংগ্রহ তেমন হয়নি। তবে চালকলমালিকদের সহযোগিতায় চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়েছে বলে খাদ্যগুদাম সূত্রে জানা গেছে।

গুদামে চাল দিতে ভোগান্তি, হয়রানি আর শ্রমিক খরচ মেটাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে কৃষকদের। সরকারনির্ধারিত দামেই স্থানীয় বাজারে ধান বেচতে সুবিধা হওয়ার কারণেই কৃষকেরা গুদামবিমুখ হয়েছেন বলে জানান কৃষক ও খুচরা পাইকারেরা।

উপজেলা খাদ্যগুদাম সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে সরকার ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু করে গত মে মাসের প্রথম দিকে। যেখানে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৪৪১ মেট্রিক টন। আর চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২ হাজার ২২৮ মেট্রিক টন। প্রতি কেজি ধানের দাম ধরা হয়েছিল ২৭ টাকা এবং চাল ছিল ৪০ টাকা। ৩১ আগস্ট অভিযান শেষ হওয়ার কথা।

ইতিমধ্যে মাত্র ৪৮০ মেট্রিক টন ধান কেনা সম্ভব হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র এক-তৃতীয়াংশ। অন্যদিকে চালকলমালিকদের সহযোগিতায় এবং কিছু বাধ্যবাধকতা থাকায় চালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কাছাকাছি রয়েছে খাদ্যগুদাম। ইতিমধ্যে ২ হাজার ৬৭ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা গেছে। বাকি সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার পুরোটাই অর্জিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় বাজার ঘুরে জানা গেছে, প্রতি মণ মোটা ধান ১০০০-১০৫০ টাকা এবং চিকন ধান ১২৫০-১৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ভোগান্তি ছাড়াই সহজে ধান বিক্রির সুবিধা থাকায় কৃষকেরা গুদামমুখী না হয়ে স্থানীয় বাজার ও পাইকারদের কাছে সমমূল্যে এসব ধান বিক্রি করছেন।

কৃষকেরা জানান, গুদামে ধান দিতে গিয়ে তাঁদের অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ভেজা-শুকনা, বাছাই, মণে দুই কেজি বেশিসহ শ্রমিক খরচ মিটিয়ে যে দরে বিক্রি করতে হয়, তাতে লোকসান হয়। বাধ্য হয়ে তাঁরা একই মূল্যে সহজ উপায়ে স্থানীয় বাজার ও পাইকারের কাছে ধান বিক্রি করছেন। এতে তাঁদের সময়ের অপচয় যেমন হচ্ছে না, তেমনি ভোগান্তিতেও পড়তে হচ্ছে না।

পৌর সদর বাজারের খুচরা ধানের পাইকার মোহাম্মদ আলী ও সুমন মিয়া জানান, সরকারি খাদ্যগুদামে যে দামে ধান ক্রয় করা হয়, একই দাম স্থানীয় বাজারগুলোতেও। ক্ষেত্রবিশেষে দাম কিছুটা কম-বেশি হয়ে থাকে।

পাকুন্দিয়া উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক মো. হাসান আলী বলেন, সরকারনির্ধারিত দামের চেয়ে স্থানীয় বাজারে ধানের দাম কিছুটা বেশি। এ জন্য কৃষকেরা খাদ্যগুদামে ধান না বেচে পাইকার কিংবা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন। তাই ধানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হচ্ছে না। গুদামে ধান বেচতে কৃষকের ভোগান্তির বিষয়ে তিনি বলেন, নিয়ম মেনে ধান কিনতে হয়। তাই কিছুটা সময়ক্ষেপণ হয়ে থাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত