ঢাকার খামারগুলোই এখন হাট

আবির হাকিম, ঢাকা
প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২২, ০৯: ৫০

ঢাকায় এখনো হাট শুরুই হয়নি, অথচ এরই মধ্যে কোরবানির পশু কিনে রেখেছেন অনেক কোরবানিদাতা। কীভাবে? এই প্রশ্নের উত্তর মিলবে নগরীর অদূরে কেরানীগঞ্জে গেলে। সেখানে গড়ে ওঠা খামারগুলো যেন একেকটা ছোট হাট। কদিন ধরে এসব খামারে চলছে কোরবানির পশুর জমজমাট বেচাকেনা।

শুধু কেরানীগঞ্জ নয়, রাজধানীর মোহাম্মদপুরের খামারগুলোতেও সমানতালে চলছে বিকিকিনি।

খামারিরা জানিয়েছেন, এরই মধ্যে তাঁদের ৯০ ভাগ পশু বিক্রি হয়ে গেছে। এতে তারা যেমন বেশ খুশি, তেমনি ক্রেতারাও আছেন স্বাচ্ছন্দ্যে।

গতকাল কেরানীগঞ্জের অন্তত পাঁচটি খামার ঘুরে পশু কেনাবেচা হতে দেখা গেছে। সেখানকার খামারিরা জানিয়েছেন, তাঁরা আট-দশ বছর ধরেই পশুপালনের সঙ্গে যুক্ত।  বেশির ভাগই ঢাকায় নিজস্ব খামারে পশু লালনপালন করেন।

নবাবচর এলাকায় আলম ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী হাজি শাহ আলম জানান, তিনি সারা বছর নিজস্ব খামারে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের গরু-ছাগল পালন করে থাকেন। এবারের কোরবানির জন্য আড়াই শ গরু প্রস্তুত করেছেন। এর মধ্যে দুই শটির বেশি ইতিমধ্যে বিক্রিও হয়ে গেছে।

চারুলতা নামে একটি খামারে গরু কিনছিলেন যাত্রাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা আবদুল হাই। তিনি জানালেন, একজনের কাছে শুনে খামারে গরু দেখতে এসেছেন। এসেই পছন্দ হওয়াতে দুটি গরু কিনে ফেলেছেন। একটির দাম ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা, আরেকটি কিনেছেন ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায়।

হাটের বদলে খামার থেকে গরু কেনার কারণ জানতে চাইলে এই ক্রেতা আজকের পত্রিকাকে বলেন, সব সময় হাট থেকেই গরু কিনি, কিন্তু খামার থেকে কেনা অপেক্ষাকৃত স্বস্তির মনে হলো। এখানে একটা নিশ্চয়তাও পাওয়া যায়। যেমন-কিনে নেওয়া গরু অসুস্থ হয়ে পড়লে সেটি আবার বদলে দেওয়ার কথা বলেছেন খামারের ব্যবস্থাপক। হাটে তো এই সুবিধা পাওয়া যাবে না। আর ঈদের আগে আগে খামারি নিজেই গরু বাসায় পৌঁছে দেবেন।

মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডের পাশে সাদেক অ্যাগ্রোর ভেতরে গিয়ে দেখা যায়। সেখানেও ক্রেতারা আসছেন প্রতিনিয়ত। গরু দেখছেন, দরদাম করছেন। পছন্দ হলে কিনেও নিচ্ছেন।

খামারটির মালিক ইমরান হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকার অনেক হাটের চেয়ে এ খামারে বেশি ক্রেতা আসেন। ক্রেতাদের সঙ্গে আমাদের একটা পারিবারিক সম্পর্ক তৈরি হয়ে গেছে। এখান থেকে যাঁরা একবার কোরবানির পশু কেনেন, তাঁরা আর কখনোই অন্য কোনো হাটে যান না। ক্রেতাদের কী ধরনের সুবিধা দিয়ে থাকেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখান থেকে কেউ গরু কিনলে ঈদ পর্যন্ত আমরা বিনা মূল্যে যত্ন নেই। ঈদের আগে কোনো ডেলিভারি চার্জ ছাড়াই ক্রেতার বাসায় আমরা পৌঁছে দিই। প্রয়োজনে সঙ্গে আমরা এক-দুই দিনের খাবারও দিয়ে দিই।

মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধে আল-মদিনা ক্যাটেল ফার্ম নামে খামারে গিয়েও দেখা গেছে  ক্রেতাদের সমাগম। অনেকে পশু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তবে অধিকাংশই বুকিং করে রেকে যাচ্ছেন খামারেই।

ফার্মের কর্মী নাহিদ খান জানান, আমাদের এখানে চারশর মতো পশু আছে। ক্রেতারা যেহেতু কেনার পর আমাদের কাছেই রেখে যেতে পারছেন এ কারণে তারা হাট বাদ দিয়ে ফার্ম থেকে পশু কিনেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন। 
 
 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত