Ajker Patrika

ডোবে বগুড়ায়, উদ্ধারে আসেন রাজশাহীর ডুবুরি

শাপলা খন্দকার, বগুড়া
ডোবে বগুড়ায়, উদ্ধারে আসেন রাজশাহীর ডুবুরি

করতোয়া, ইছামতী, যমুনা ও বাঙ্গালী নদী বয়ে গেছে বগুড়া জেলায়। এগুলোর  মধ্যে বাঙ্গালী ও যমুনা একই সঙ্গে প্রশস্ত, গভীর এবং খরস্রোতা। ছোট-বড় এই চার নদীর জেলায় নেই কোনো ডুবুরি দল। এখানে নদীতে কেউ ডুবে গেলে তাদের উদ্ধার করতে খবর দেওয়া হয় রাজশাহীর ডুবুরি দলকে। আর বগুড়া থেকে রাজশাহীর দূরত্ব ১১০ দশমিক ৬ কিলোমিটার। ডুবুরি দল পৌঁছাতে সময় লাগে অন্তত আড়াই ঘণ্টা। ততক্ষণে দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার স্থান থেকে অনেক দূরে সরে যায় মরদেহ।

বগুড়ায় ডুবুরি দল না থাকাকে দুঃখজনক বলছেন সংশ্লিষ্টরা। বগুড়ায় ডুবুরি দল নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন বগুড়াবাসীসহ বগুড়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের কর্মকর্তারা।

বগুড়া সদর, সোনাতলা, সারিয়াকান্দি, ধুনট, শিবগঞ্জ ও শেরপুর ফায়ার স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের জুলাই থেকে বর্তমান পর্যন্ত মোট ১৪টি পানিতে ডোবার ঘটনা ঘটেছে। মারা গেছে শিশু-কিশোর, বৃদ্ধাসহ ১৫ জন। এদের মধ্যে বগুড়া সদরের ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দুজনের লাশ উদ্ধার করে। বাকি ১৩ জনের লাশ উদ্ধার করে রাজশাহী ডুবুরি দল। মরদেহ উদ্ধার করতে তাদের সময় লাগে সর্বনিম্ন পাঁচ ঘণ্টা থেকে সর্বোচ্চ ২৫ ঘণ্টা পর্যন্ত।

চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল সারিয়াকান্দির চর বাটিয়া গ্রামের ১৩ বছরের কিশোরী নিরা আক্তার তার ছোট ভাই ৮ বছরের শিশু জিসান মিয়ার সঙ্গে যমুনা নদীতে গোসল করতে নেমে হারিয়ে যায়। তাদের ডোবার খবর বগুড়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনে আসে এদিন বেলা তিনটার দিকে। কিন্তু তাদের উদ্ধার করতে ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায় রাত ১০টায়। সহোদর এই ভাইবোনের লাশ উদ্ধার করা হয় পরদিন দুপুর ১২টায়।

সদরের জলেশ্বরীতলার ১৪ বছরের শিশু মুগনিউ আলী সারিয়াকান্দির যমুনা নদীতে তলিয়ে যায় ৭ মে সন্ধ্যা ৬টায়। ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায় রাত ১১টা ১০ মিনিটে। আর এই কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয় ৯ মে বেলা ২টায়।

ধুনটের ৬৫ বছর বয়সী জালাল উদ্দিন সরকারেও হয় একই পরিণতি। ১৭ জুন সন্ধ্যায় নদীতে ডোবার পর তাঁর লাশ উদ্ধার হয় ১৮ জুন সন্ধ্যায়। আর তাঁদের সবার লাশ উদ্ধার করে রাজশাহী থেকে আসা ডুবুরি দল।

সারিয়াকান্দির হাওড়াখালি গ্রামের প্রবীণ আজাহার আলী বলেন, ‘এক দ্যাশে ডুবলে আরেক দ্যাশ থাকে উদ্ধার করবার আসে। সময়মতো এলে তো জ্যান্ত উদ্ধার না হোক-লাশডা তো তাড়াতাড়ি পাওয়া যাবি।’

বগুড়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশন জানায়, খবর পেয়ে প্রাথমিকভাবে বগুড়া স্টেশনের কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে গেলেও উদ্ধার অভিযান চালাতে পারেন না তাঁরা। করতোয়া এবং ইছামতী খরস্রোতা না হলেও নদীর গভীর অংশে নেমে মরদেহ উদ্ধার করতেও অক্ষম তাঁরা। এসব স্থানে অভিযানের জন্য প্রয়োজন প্রশিক্ষিত ডুবুরি দল। কিন্তু বগুড়ায় কোনো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডুবুরি দল নেই।

বগুড়া ফায়ার স্টেশনের উপসহকারী পরিচালক কামরুল হাসান বলেন, ‘পুকুর কিংবা অগভীর নদীতে দুর্ঘটনা ঘটলে আমরা উদ্ধার করতে পারি। কিন্তু গভীর ও বড় নদীতে উদ্ধার তৎপরতা চালানোর জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডুবুরি দল লাগে। যেহেতু বগুড়ায় ঘন ঘন দুর্ঘটনা ঘটে থাকে তাই এখানে অন্তত দুজনের একটি ডুবুরি দল থাকা দরকার।’
সদ্য সাবেক সহকারী পরিচালক এমডি আব্দুল মালেক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বগুড়ায় ডুবুরি দল নিয়োগের জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। মন্ত্রণালয় ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। আশা করি শিগগিরই ডুবুরি দল পাবে বগুড়া স্টেশন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত