Ajker Patrika

যাত্রীছাউনিতে দোকান, থামে না গাড়ি

আবির হাকিম, ঢাকা
আপডেট : ১১ জুন ২০২২, ১৪: ৪১
যাত্রীছাউনিতে দোকান, থামে না গাড়ি

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের অধীনে ঢাকায় যাত্রীছাউনি রয়েছে দেড় শতাধিক। এগুলোর মধ্যে সিটি করপোরেশনের রয়েছে প্রায় ১০০টি এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিংবা অন্য প্রতিষ্ঠানের তৈরি করা যাত্রীছাউনি রয়েছে ৫০টিরও বেশি।

যাত্রীদের বিশ্রাম এবং বাসে ওঠানামার জন্য এসব ছাউনি নির্মাণ করা হলেও কর্তৃপক্ষের অবহেলা, নজরদারির অভাব, হকার ও মাদকসেবীদের দখলে এগুলো এখন ব্যবহারের অযোগ্য। বেশির ভাগ যাত্রীছাউনির বিভিন্ন অংশ খুলে নিয়ে গেছে মাদকাসক্ত ও ভবঘুরেরা। অধিকাংশ ছাউনিতেই প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় গড়ে উঠেছে চা দোকান। এমনকি এসব ছাউনির সামনে দাঁড়ায় না বাসও।

নির্মল বায়ু ও টেকসই পরিবেশ (কেইস) প্রকল্পের অধীনে রাজধানীতে যাত্রীসেবা বৃদ্ধি ও গণপরিবহনের নৈরাজ্য ঠেকাতে রাস্তার পাশে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নির্দেশিত স্থানে ঢাকা দক্ষিণে ৭০টি ও উত্তরে ৬০টি যাত্রীছাউনি নির্মাণ করার কথা। এর মধ্যে মেট্রোরেলের কাজ চলমান থাকায় মিরপুর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত কোনো যাত্রীছাউনি তৈরি করা হয়নি। বাকিগুলোর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ৪০টি এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ৯টি যাত্রীছাউনি তৈরি করেছে।

সরেজমিনে শাহবাগ, আজিমপুর, মহাখালী, বনানীসহ বেশ কিছু যাত্রীছাউনি ঘুরে দেখা গেছে, এসব যাত্রীছাউনির সামনে বাস স্টপেজ থাকলেও, সেখানে বাস থামে না। যাত্রীছাউনির আগে বা পরে বাস দাঁড়ায়। এ জন্য যাত্রীরাও ছাউনিতে না দাঁড়িয়ে অন্য জায়গাতেই অপেক্ষা করেন।

আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন যাত্রীছাউনিতে দেখা যায়, এক অংশে চা দোকান এবং অন্য অংশে ফাস্ট ফুডের দোকান। বাসের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীরা রাস্তার ওপর দাঁড়াতে বাধ্য হচ্ছেন। মহাখালী মোড়ে যাত্রীছাউনির সামনে কোনো বাসই থামে না। এ ছাউনির এক পাশে পান-সিগারেটের দোকান এবং অন্য পাশে কয়েকজন ভবঘুরেকে ঘুমাতে দেখা যায়। শাহবাগে ঢাকা ক্লাবের পাশের ছাউনির অংশবিশেষ খুলে নিয়ে গেছে মাদকাসক্তেরা। এ ছাড়া গুলিস্তান এলাকার কিছু যাত্রীছাউনি শেডহীন অবস্থায় দেখা গেছে।

যাত্রীছাউনিগুলোর এমন অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, নির্মাণের পর ছাউনিগুলো যেভাবে ফেলে রাখা হয়, মনে হয় এগুলো দেখার কোনো লোক নেই। পর্যাপ্ত নজরদারির অভাবে ছাউনিগুলো দোকানে পরিণত হয়েছে।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ এবং কেইস প্রকল্পের পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রাফিক পুলিশ ও ডিএমপির চাহিদা অনুযায়ী তাদের ঠিক করা জায়গায় আমরা যাত্রীছাউনি করেছি। সড়কের শৃঙ্খলাসহ এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করার দায়িত্ব পুলিশের। এ ছাড়া রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় জনবলও আমাদের নেই। বিভিন্ন জায়গায় মাদকাসক্তরা যাত্রীছাউনির সরঞ্জাম খুলে নিয়ে যায়। স্থানীয় জনসাধারণ সচেতন হলে এগুলো রোধ করা যেত।’

এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যাত্রীছাউনি অনুযায়ী বাস সার্ভিস নিশ্চিত করলেই এগুলোর সঠিক ব্যবহার হবে এবং দখলমুক্ত থাকবে। গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সামছুল হক বলেন, পর্যাপ্ত নজরদারির মাধ্যমে ছাউনি অনুযায়ী বাস সার্ভিস নিশ্চিত করলে এগুলো বেদখল হওয়ার আশঙ্কা কমে আসবে। এ জন্য যেসব বাস ছাউনি থেকে যাত্রী তুলবে না, তাদের শাস্তির আওতায় আনলে তারা এ অনিয়ম থেকে বের হয়ে আসবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত