মীর রাকিব হাসান, ঢাকা
সংস্কৃতি খাতে সরকারের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বিগত বছরগুলোর মতো এবারও হতাশার কথা শোনা গেল সংস্কৃতি অঙ্গনের বরেণ্য ব্যক্তিদের মুখে। তাঁদের মতে, সারা দেশের সংস্কৃতিচর্চার জন্য এই বাজেট অপ্রতুল। তাঁরা কথা বলেছেন সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দকৃত বাজেটের যথাযথ ব্যবহার নিয়েও।
অনেক বছর ধরেই সংস্কৃতিকর্মীদের চাওয়া, দেশের মোট বাজেটের ১ শতাংশ হোক সংস্কৃতির। সেই চাওয়া আজও পূরণ হয়নি। ক্ষেত্রবিশেষে সংস্কৃতির বাজেট যেন কোনো কোনো বছরে আগের বছরের চেয়েও কমে যায়। বাজেটে সংস্কৃতি বরাবরই উপেক্ষিত হয় বলে মনে করছেন সংস্কৃতি অঙ্গনের বরেণ্য ব্যক্তিরা। তাঁদের বেশির ভাগেরই বক্তব্য, সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দেওয়ার কথা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলেও তা শুধু মুখে মুখেই থেকে যায়। বাস্তবে এর প্রতিফলন দেখা যায় না। এবারও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৬৩৭ কোটি টাকা মাত্র, যা প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের ০.৯ শতাংশের মতো।
২০২১-২২ অর্থবছরে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত বাজেট ছিল ৫৮৭ কোটি টাকা; যা সংশোধিত হয়ে দাঁড়ায় ৫৭৯ কোটি টাকায়। ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট প্রস্তাব সংসদে পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ২০২২-২৩ অর্থবছরে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত বাজেট ধরা হয়েছে ৬৩৭ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের চেয়ে ৫৮ কোটি টাকা বেশি। এবার পরিচালনা খাতে দেওয়া হয়েছে ৩৯০ কোটি টাকা এবং উন্নয়ন খাতে ২৪৭ কোটি টাকা। সংস্কৃতিকর্মীরা মনে করেন, গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত সাংস্কৃতিক জাগরণের প্রণোদনা হিসেবে এই বাজেট অপ্রতুল। পর্যাপ্ত বাজেট না হলে সাংস্কৃতিক জাগরণ সম্ভব হবে না। তাঁরা আশা করছেন, এখনো সেই সুযোগ আছে। তাঁদের বিশ্বাস, শিগগিরই প্রস্তাবিত বাজেট সংশোধন করে সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ বাড়াবে সরকার।
অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় বলেন, ‘সরকার বাঙালি সংস্কৃতির অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং জাতীয় ভাষা, সাহিত্য, শিল্প, সংগীত, নাটক ইত্যাদি সুকুমার শিল্পের সৃজনশীল উন্নয়ন ও বিকাশে কাজ করে যাচ্ছে। দেশজ সংস্কৃতি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বিকাশ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সমকালীন শিল্প-সাহিত্যের গবেষণা, প্রদর্শন, প্রকাশনা, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো চিহ্নিতকরণ, খনন, সংস্কার, সংরক্ষণ ও প্রদর্শন, সৃজনশীল সৃষ্টিকর্মের কপিরাইট সংরক্ষণসহ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদ্যাপন, একুশে পদক প্রদান, বাংলা নববর্ষসহ জাতীয় দিবসগুলো উদ্যাপনে নিয়মিত অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে। প্রতি অর্থবছরে অসচ্ছল সংস্কৃতিসেবী ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে সনাতন পদ্ধতির স্থলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে চলচ্চিত্র সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন করা হয়েছে। চলচ্চিত্র শিল্পীদের কল্যাণের জন্য ২০২১ সালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে।’
তৃণমূলে প্রণোদনা দিতে হবে
রামেন্দু মজুমদার
একটি সুস্থ সমাজ বিনির্মাণ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়া, জঙ্গিবাদ ও মাদকের ভয়াবহতা দূরীকরণের লক্ষ্যে সংস্কৃতি খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো অত্যাবশ্যক ছিল। কিন্তু বাজেট প্রণেতারা এতে গুরুত্ব দেননি। আমি মনে করি, এ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়েরও অক্ষমতা আছে। বাজেটে বরাদ্দ করা টাকাও তারা ঠিকমতো খরচ করতে পারে না। কেন পারেনি সেটা সরকারের গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। তা ছাড়া ব্যবহার না করতে পারলেই যে আর বাড়ানো হবে না, সেটাও ঠিক নয়। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় তাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই অর্থ খরচ করে। তৃণমূল পর্যায়ে যাতে সংস্কৃতিচর্চাটা বাড়ে, সে জন্য সেখানে অর্থ বিনিয়োগ করা প্রয়োজন। দেশব্যাপী সংস্কৃতির জাগরণ দরকার। তৃণমূলে যেসব সাংস্কৃতিক সংগঠন কিংবা ব্যক্তিও হতে পারে, সেখানে প্রণোদনা দিতে হবে, যাতে তারা নিজেদের মতো করে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারে। তার জন্য মোট বাজেটের কমপক্ষে ১ শতাংশ সংস্কৃতি ক্ষেত্রে দেওয়া উচিত।
সংস্কৃতিমান না হলে শিক্ষিত হওয়া যায় না
মামুনুর রশীদ
আমরা তো প্রতিবছরই বলে যাচ্ছি বাজেট বাড়ান। বাজেট তো বাড়ছেই না, বরং অন্যান্য খাতের তুলনায় কমছে। সংস্কৃতির বাজেট বাড়লে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করা সম্ভব হবে। আমাদের নাটক, সংগীত, নৃত্যকলা, চিত্রকলা একদম শিকড় থেকে গড়ে তুলতে হবে। গৎবাঁধা কাজ চলছে সব সময়। আপামর মানুষের সংস্কৃতির উন্নয়নে যে অর্থ দরকার, সেটা আমরা কখনোই পাই না। সংস্কৃতির উন্নয়নের ফলে যে অনেক কিছু পরিবর্তন সম্ভব, সেটা কেন যেন বুঝতে চাওয়া হয় না। সংস্কৃতি বলতে শুধু নাচ–গান না, মানুষকে ভেতর থেকে চিন্তার পরিবর্তন করার জন্য সংস্কৃতির ভূমিকা দরকার। সংস্কৃতিমান না হলে শিক্ষিত হওয়া যায় না। তৃণমূল পর্যায়ে সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলা উচিত। কিছু ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট হচ্ছে। টাকাপয়সা ব্যবসায়ীদের হাতে চলে যাচ্ছে। সাধারণ সংস্কৃতিকর্মীদের যে আশা-আকাঙ্ক্ষায়, তার প্রতিফলন ঘটেনি। বাজেটে সংস্কৃতির ওপর যে দৃষ্টিভঙ্গি, তার ওপর আমি ক্ষুব্ধ।
সংস্কৃতি খাতকে উপেক্ষা করা হয়েছে
গোলাম কুদ্দুছ
বাজেটে সংস্কৃতি খাতে যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তাতে আমরা ভীষণভাবে হতাশ। আমরা মনে করি, এই বাজেটে সংস্কৃতি খাতকে উপেক্ষা করা হয়েছে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের ভিত্তিতে একটা অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ গড়ে তুলতে চাই, যে সমাজে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যাবে। গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত মূল্যবোধ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন সাংস্কৃতিক জাগরণ। প্রতিবছর সাংস্কৃতিক খাতে বরাদ্দ কম দেওয়া সংস্কৃতির জন্য অশনিসংকেত। এই খাতে কম বরাদ্দ দেওয়া মানে শিল্প-সংস্কৃতিকে পেছনে ফেলে দেওয়া। আশা করি, বাজেট পাস হওয়ার আগে সরকার পুনর্বিবেচনা করবে। সংস্কৃতির বাজেট কম হলে পিছিয়ে পড়বে রাষ্ট্র। রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এটুকু বোঝা উচিত। সংস্কৃতিকর্মীরা এই বাজেটে খুবই হতাশ। সাংস্কৃতিক জোট সারা দেশের সংস্কৃতিকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। শুধু এটুকু বলব, সংস্কৃতির প্রতি এই অবহেলা রাষ্ট্রের জন্য ভালো কিছু হবে না।
সিনেমার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব চাই
মুশফিকুর রহমান গুলজার
প্রথমত, সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই যে কিছুটা হলেও সাংস্কৃতিক খাতে বাজেট বাড়িয়েছে। তবে সেখানে আমাদের সিনেমার অবস্থা কোথায়, তা ভাবতে হবে। এই সময়ে সরকারকে অবশ্যই সিনেমার দিকে গভীর মনোযোগ দিতে হবে। সিনেমাকে বাদ দিয়ে সংস্কৃতি হবে না। সিনেমা বানিয়ে দেখানোর জায়গা নেই। বাজেটে সিনেমা হল-সিনেপ্লেক্স নির্মাণ নিয়ে সুনির্দিষ্ট কথা প্রত্যাশা করেছিলাম। কীভাবে সিনেমা নির্মাণ বাড়ানো যায়, সেই পৃষ্ঠপোষকতাও দরকার। করোনা মহামারির পর সিনেমা ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য আরও বেশি বাজেট এই খাতে দেওয়া দরকার ছিল। বাজেটে সিনেমার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব চাই। চলচ্চিত্র শিল্পকে এই বিপর্যস্ত অবস্থা থেকে রক্ষা করতে সরকারি বাজেট থেকে একটা বড় অঙ্ক চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য দেয়া হোক। যারা নিয়মিত চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন সেসব প্রযােজক এবং নতুন প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণ ও পুরোনো প্রেক্ষাগৃহগুলি সংস্কার করার জন্য পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ দিলে চলচ্চিত্রশিল্পের উন্নয়ন সম্ভব।
সংস্কৃতি খাতে সরকারের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বিগত বছরগুলোর মতো এবারও হতাশার কথা শোনা গেল সংস্কৃতি অঙ্গনের বরেণ্য ব্যক্তিদের মুখে। তাঁদের মতে, সারা দেশের সংস্কৃতিচর্চার জন্য এই বাজেট অপ্রতুল। তাঁরা কথা বলেছেন সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দকৃত বাজেটের যথাযথ ব্যবহার নিয়েও।
অনেক বছর ধরেই সংস্কৃতিকর্মীদের চাওয়া, দেশের মোট বাজেটের ১ শতাংশ হোক সংস্কৃতির। সেই চাওয়া আজও পূরণ হয়নি। ক্ষেত্রবিশেষে সংস্কৃতির বাজেট যেন কোনো কোনো বছরে আগের বছরের চেয়েও কমে যায়। বাজেটে সংস্কৃতি বরাবরই উপেক্ষিত হয় বলে মনে করছেন সংস্কৃতি অঙ্গনের বরেণ্য ব্যক্তিরা। তাঁদের বেশির ভাগেরই বক্তব্য, সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দেওয়ার কথা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলেও তা শুধু মুখে মুখেই থেকে যায়। বাস্তবে এর প্রতিফলন দেখা যায় না। এবারও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৬৩৭ কোটি টাকা মাত্র, যা প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের ০.৯ শতাংশের মতো।
২০২১-২২ অর্থবছরে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত বাজেট ছিল ৫৮৭ কোটি টাকা; যা সংশোধিত হয়ে দাঁড়ায় ৫৭৯ কোটি টাকায়। ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট প্রস্তাব সংসদে পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ২০২২-২৩ অর্থবছরে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত বাজেট ধরা হয়েছে ৬৩৭ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের চেয়ে ৫৮ কোটি টাকা বেশি। এবার পরিচালনা খাতে দেওয়া হয়েছে ৩৯০ কোটি টাকা এবং উন্নয়ন খাতে ২৪৭ কোটি টাকা। সংস্কৃতিকর্মীরা মনে করেন, গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত সাংস্কৃতিক জাগরণের প্রণোদনা হিসেবে এই বাজেট অপ্রতুল। পর্যাপ্ত বাজেট না হলে সাংস্কৃতিক জাগরণ সম্ভব হবে না। তাঁরা আশা করছেন, এখনো সেই সুযোগ আছে। তাঁদের বিশ্বাস, শিগগিরই প্রস্তাবিত বাজেট সংশোধন করে সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ বাড়াবে সরকার।
অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় বলেন, ‘সরকার বাঙালি সংস্কৃতির অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং জাতীয় ভাষা, সাহিত্য, শিল্প, সংগীত, নাটক ইত্যাদি সুকুমার শিল্পের সৃজনশীল উন্নয়ন ও বিকাশে কাজ করে যাচ্ছে। দেশজ সংস্কৃতি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বিকাশ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সমকালীন শিল্প-সাহিত্যের গবেষণা, প্রদর্শন, প্রকাশনা, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো চিহ্নিতকরণ, খনন, সংস্কার, সংরক্ষণ ও প্রদর্শন, সৃজনশীল সৃষ্টিকর্মের কপিরাইট সংরক্ষণসহ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদ্যাপন, একুশে পদক প্রদান, বাংলা নববর্ষসহ জাতীয় দিবসগুলো উদ্যাপনে নিয়মিত অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে। প্রতি অর্থবছরে অসচ্ছল সংস্কৃতিসেবী ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে সনাতন পদ্ধতির স্থলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে চলচ্চিত্র সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন করা হয়েছে। চলচ্চিত্র শিল্পীদের কল্যাণের জন্য ২০২১ সালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে।’
তৃণমূলে প্রণোদনা দিতে হবে
রামেন্দু মজুমদার
একটি সুস্থ সমাজ বিনির্মাণ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়া, জঙ্গিবাদ ও মাদকের ভয়াবহতা দূরীকরণের লক্ষ্যে সংস্কৃতি খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো অত্যাবশ্যক ছিল। কিন্তু বাজেট প্রণেতারা এতে গুরুত্ব দেননি। আমি মনে করি, এ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়েরও অক্ষমতা আছে। বাজেটে বরাদ্দ করা টাকাও তারা ঠিকমতো খরচ করতে পারে না। কেন পারেনি সেটা সরকারের গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। তা ছাড়া ব্যবহার না করতে পারলেই যে আর বাড়ানো হবে না, সেটাও ঠিক নয়। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় তাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই অর্থ খরচ করে। তৃণমূল পর্যায়ে যাতে সংস্কৃতিচর্চাটা বাড়ে, সে জন্য সেখানে অর্থ বিনিয়োগ করা প্রয়োজন। দেশব্যাপী সংস্কৃতির জাগরণ দরকার। তৃণমূলে যেসব সাংস্কৃতিক সংগঠন কিংবা ব্যক্তিও হতে পারে, সেখানে প্রণোদনা দিতে হবে, যাতে তারা নিজেদের মতো করে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারে। তার জন্য মোট বাজেটের কমপক্ষে ১ শতাংশ সংস্কৃতি ক্ষেত্রে দেওয়া উচিত।
সংস্কৃতিমান না হলে শিক্ষিত হওয়া যায় না
মামুনুর রশীদ
আমরা তো প্রতিবছরই বলে যাচ্ছি বাজেট বাড়ান। বাজেট তো বাড়ছেই না, বরং অন্যান্য খাতের তুলনায় কমছে। সংস্কৃতির বাজেট বাড়লে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করা সম্ভব হবে। আমাদের নাটক, সংগীত, নৃত্যকলা, চিত্রকলা একদম শিকড় থেকে গড়ে তুলতে হবে। গৎবাঁধা কাজ চলছে সব সময়। আপামর মানুষের সংস্কৃতির উন্নয়নে যে অর্থ দরকার, সেটা আমরা কখনোই পাই না। সংস্কৃতির উন্নয়নের ফলে যে অনেক কিছু পরিবর্তন সম্ভব, সেটা কেন যেন বুঝতে চাওয়া হয় না। সংস্কৃতি বলতে শুধু নাচ–গান না, মানুষকে ভেতর থেকে চিন্তার পরিবর্তন করার জন্য সংস্কৃতির ভূমিকা দরকার। সংস্কৃতিমান না হলে শিক্ষিত হওয়া যায় না। তৃণমূল পর্যায়ে সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলা উচিত। কিছু ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট হচ্ছে। টাকাপয়সা ব্যবসায়ীদের হাতে চলে যাচ্ছে। সাধারণ সংস্কৃতিকর্মীদের যে আশা-আকাঙ্ক্ষায়, তার প্রতিফলন ঘটেনি। বাজেটে সংস্কৃতির ওপর যে দৃষ্টিভঙ্গি, তার ওপর আমি ক্ষুব্ধ।
সংস্কৃতি খাতকে উপেক্ষা করা হয়েছে
গোলাম কুদ্দুছ
বাজেটে সংস্কৃতি খাতে যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তাতে আমরা ভীষণভাবে হতাশ। আমরা মনে করি, এই বাজেটে সংস্কৃতি খাতকে উপেক্ষা করা হয়েছে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের ভিত্তিতে একটা অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ গড়ে তুলতে চাই, যে সমাজে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যাবে। গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত মূল্যবোধ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন সাংস্কৃতিক জাগরণ। প্রতিবছর সাংস্কৃতিক খাতে বরাদ্দ কম দেওয়া সংস্কৃতির জন্য অশনিসংকেত। এই খাতে কম বরাদ্দ দেওয়া মানে শিল্প-সংস্কৃতিকে পেছনে ফেলে দেওয়া। আশা করি, বাজেট পাস হওয়ার আগে সরকার পুনর্বিবেচনা করবে। সংস্কৃতির বাজেট কম হলে পিছিয়ে পড়বে রাষ্ট্র। রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এটুকু বোঝা উচিত। সংস্কৃতিকর্মীরা এই বাজেটে খুবই হতাশ। সাংস্কৃতিক জোট সারা দেশের সংস্কৃতিকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। শুধু এটুকু বলব, সংস্কৃতির প্রতি এই অবহেলা রাষ্ট্রের জন্য ভালো কিছু হবে না।
সিনেমার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব চাই
মুশফিকুর রহমান গুলজার
প্রথমত, সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই যে কিছুটা হলেও সাংস্কৃতিক খাতে বাজেট বাড়িয়েছে। তবে সেখানে আমাদের সিনেমার অবস্থা কোথায়, তা ভাবতে হবে। এই সময়ে সরকারকে অবশ্যই সিনেমার দিকে গভীর মনোযোগ দিতে হবে। সিনেমাকে বাদ দিয়ে সংস্কৃতি হবে না। সিনেমা বানিয়ে দেখানোর জায়গা নেই। বাজেটে সিনেমা হল-সিনেপ্লেক্স নির্মাণ নিয়ে সুনির্দিষ্ট কথা প্রত্যাশা করেছিলাম। কীভাবে সিনেমা নির্মাণ বাড়ানো যায়, সেই পৃষ্ঠপোষকতাও দরকার। করোনা মহামারির পর সিনেমা ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য আরও বেশি বাজেট এই খাতে দেওয়া দরকার ছিল। বাজেটে সিনেমার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব চাই। চলচ্চিত্র শিল্পকে এই বিপর্যস্ত অবস্থা থেকে রক্ষা করতে সরকারি বাজেট থেকে একটা বড় অঙ্ক চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য দেয়া হোক। যারা নিয়মিত চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন সেসব প্রযােজক এবং নতুন প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণ ও পুরোনো প্রেক্ষাগৃহগুলি সংস্কার করার জন্য পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ দিলে চলচ্চিত্রশিল্পের উন্নয়ন সম্ভব।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৪ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৪ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৪ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৪ দিন আগে