Ajker Patrika

বাঁধ ভেঙে ডুবছে ধানখেত

গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ মে ২০২২, ১৬: ২৬
বাঁধ ভেঙে ডুবছে ধানখেত

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের বিল কুজাইনের পর এবার একই ইউনিয়নের বিবিষন গ্রামের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ফলে ৫০০ একর জমির ধান ডুবে গেছে। কৃষকেরা ধান কেটে নিরাপদ স্থানে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে শ্রমিক-সংকট আর অতিরিক্ত মজুরির কারণে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকেরা। এ ছাড়া ঢলের পানিতে বিলের সংযোগ সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত বাঁধটি ভেঙে গেছে। ফলে ধানবোঝাই করা ট্রাক্টর আটকা পড়েছে।

জানা গেছে, উজানের ঢলে পুনর্ভবা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে সেই পানি বিলের নিম্নাঞ্চল এলাকায় ঢুকে ডুবে যায় একই ইউনিয়নের বিল কুজাইন এলাকার তিন হাজার বিঘা জমি। এদিকে উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের বিবিষন গ্রামের (লালমাটিয়া) খালের ওপর নির্মিত অস্থায়ী বাঁধ ভেঙে গেছে। ফলে সিঙ্গাবাদ পাথার বিলে নতুন করে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। ওই বিলে থাকা শত শত একর জমির বোরো ধান নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন কৃষক।

কৃষি কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নে পাঁচ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়। এর মধ্যে ওই ইউনিয়নের বিল কুজাইন এলাকায় ৩৭০ হেক্টর ও বিবিষনের বিল পাথার এলাকার ৭৬ হেক্টর জমির ধান ডুবে গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাঁধ ভেঙে বিলের সঙ্গে সড়কপথের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এতে কৃষকেরা আটকে পড়া ধান পরিবহন করতে পারছেন না। ডুবে যাওয়া ফসল ঘরে তুলতে পারবেন কিনা, এ নিয়ে কৃষকেরা শঙ্কায় পড়েছেন। এ সময় তাঁরা বাঁধটি সংস্কার করে বিলের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ পুনঃস্থাপনের দাবি জানান।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শ্রমিক-সংকটের কারণে তাঁরা সময়মতো ধান কাটতে পারেননি। তাঁর ওপর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় কাটা ধান জমি থেকে সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। ফলে বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, জশৈল-বিবিষন (চালনা) খালের ঘাটে সেতু বা কালভার্ট নির্মাণ করা হোক। যাতে বিল অঞ্চল থেকে ধান সংগ্রহ করতে কৃষকদের দুর্ভোগ পোহাতে না হয়।

বিবিষন গ্রামের কৃষক নেফাউর রহমান বলেন, দিন দিন পুনর্ভবা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের বিল এলাকার বোরো ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন শত শত কৃষক। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতের কারণে আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে বিলগুলোতে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সাজ্জাদ আলী বলেন, তাঁর কয়েক বিঘা জমির ধান ডুবে গেছে। বাকি ধানগুলো কেটে রাখা আছে। গাড়ি চলাচল না করায় তিনি ধান নিয়ে আসতে পারছেন না। তিনি আরও বলেন, নৌকায় ধান নিয়ে আসতে বিঘাপ্রতি দুই হাজার টাকা চাচ্ছেন মাঝিরা। আর একজন শ্রমিক নিচ্ছেন এক হাজার টাকা। এভাবে চলতে থাকলে ও ধানের দাম না পেলে পথে বসে যাবেন তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান নুহু বলেন, উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় বর্ষা মৌসুমে বিল অঞ্চলের দুরবস্থার কথা তুলে ধরা হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আগামী বছরে বাঁধটি মেরামতসহ কৃষকের অন্য দাবির বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, এলজিইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাবেন তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ সরকার বলেন, ওই ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলগুলো ঢলের পানিতে নিমজ্জিত হচ্ছে। বিল কুজাইনের পর বিবিষন এলাকার একটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কৃষকের এ দুরবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। কষ্ট ও অধিক ব্যয় হলেও কৃষকেরা নৌকায় করে ধান নিয়ে আসছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত