পুলিশি হয়রানির অভিযোগ!

সাবিত আল হাসান, নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০২২, ০৭: ০৬
আপডেট : ১২ জানুয়ারি ২০২২, ১০: ২৯

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ তুলেছেন স্বতন্ত্র মেয়র পদপ্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার। সেই অভিযোগে মাত্রা যুক্ত করেছেন সদ্য বিলুপ্ত মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ। ক্ষমতাসীন ও সরকারবিরোধী দলের নেতার মুখে একই অভিযোগ ওঠায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। তবে জেলা পুলিশ বলছে, নির্বাচন সুষ্ঠু রাখতে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করছে তারা।

গত কয়েক দিন ধরে প্রতিটি বক্তব্য, সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ দিয়ে তাঁর নেতা-কর্মীদের হয়রানি করার অভিযোগ তোলেন তৈমুর। তবে এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে জেলা নির্বাচন অফিসে কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি তিনি।

পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে এমন অভিযোগ সূচনা হয় নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদের বাসায় পুলিশের উপস্থিতির মধ্য দিয়ে। ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করার রাতেই প্রায় ১৫ গাড়ি পুলিশ উপস্থিত হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। রিয়াদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমার বাসায় ১৫ গাড়ি প্রশাসনের লোকজন এসেছিল। ডিবি, পুলিশ অন্যান্য বাহিনীর লোকজন এসেছিল। এসে প্রচারণা করার জন্য চাপ দিল। আমি ছাত্রলীগ করি। সেই হিসেবে আমি বরাবরই নৌকার পক্ষে কাজ করব এটাই স্বাভাবিক। প্রশাসন কেন বাসায় এসে এমন করল জানি না।’

শনিবার দিবাগত রাতেই বিএনপি নেতা জুলহাসের মিশনপাড়ার বাসায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অভিযান চালানোর অভিযোগ ওঠে। সেখানেও তাঁদের ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তৈমুর আলম খন্দকার। রোববার সংবাদ সম্মেলন করে তৈমুর বলেন, ‘সরকারদলীয় প্রার্থীর পায়ের নিচে মাটি এতটাই সরে গেছে যে, পুলিশ প্রশাসনের লোক দিয়ে ভয়ভীতি দেখাতে হচ্ছে। যাঁরা হাতির পক্ষে নেমেছে তাঁদের বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে সরকারি প্রতীকের পক্ষে কাজ করতে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমার নির্বাচনী পথসভায় অংশগ্রহণ করায় ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল হোসেনের বাসায় তল্লাশি করেছে পুলিশ। একইভাবে ২৭টি ওয়ার্ডে আমার সমর্থক ও নেতৃবৃন্দকে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।’

গত সোমবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবিকে তাঁর বাসা থেকে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁকে দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান। মনিরুল ইসলাম রবি তৈমুর আলম খন্দকারের সিদ্ধিরগঞ্জের নির্বাচন সমন্বয়কারী।

এদিকে পুলিশের অভিযোগের বিষয়ে রিটার্নিং অফিসারকে লিখিত অভিযোগ দেবেন কি না, জানতে চাইলে গতকাল মঙ্গলবার বলেন, ‘আমি এই পর্যন্ত তাদের তিনটা চিঠি দিয়েছি। একটি চিঠিরও উত্তর পাইনি, কোনো পদক্ষেপও দেখিনি। এরপর আর চিঠি দিয়ে কী হবে?’

এই বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ পুলিশ কাউকে হয়রানি করার জন্য নয়, পুলিশ নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। কোনো দল বা ব্যক্তিকে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ কোনো ধরনের হয়রানি করে না। তবে যারা সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত বা সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতে পারে, যাদের পুরোনো ইতিহাস রয়েছে, একাধিক মামলার আসামি ও চিহ্নিত সন্ত্রাসী তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে।’

এসব অভিযোগের বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মতিয়ুর রহমান বলেন, ‘আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি। তারা নির্বাচন সুষ্ঠু করতে কাজ করে যাচ্ছে। যারা এসব অভিযোগ করছে, তারা কোনো লিখিত অভিযোগ আমাদের কাছে দেয়নি।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত