Ajker Patrika

চোখ হারানোর ঘটনা টাকায় মীমাংসা

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ৪৬
চোখ হারানোর ঘটনা টাকায় মীমাংসা

ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলায় ভুল চিকিৎসায় চোখ হারানো ইজিবাইক মেরামতকারী মো. ইমদাদ হোসেন ও চিকিৎসক ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চক্ষু সার্জন মীর্জা মাহাবুবুর রহমানের মধ্যে টাকার বিনিময়ে মীমাংসার অভিযোগ উঠেছে। মাত্র ৭৫ হাজার টাকায় ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ওই চিকিৎসকের কক্ষে এ মীমাংসা হয়। আর এ কাজে সহযোগিতা করেন কাঠালিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. এমাদুল হক ও আমুয়া ইউপির চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম ফোরকান সিকদার।

এ বিষয়ে ঝালকাঠি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চক্ষু সার্জন মীর্জা মাহাবুবুর রহমানের নামে একটি মামলা তদন্তাধীন রয়েছে।

এলাকাবাসী ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ৩০ অক্টোবর উপজেলার আমুয়া বাজারে ইজিবাইক মেরামতের সময় ইমদাদ হোসেনের ডান চোখে লোহার টুকরো ঢুকে যায়। ওই দিন বিকেলে তিনি ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের চক্ষু সার্জন মীর্জা মাহাবুবুর রহমানের চেম্বারে যান চিকিৎসা নিতে। সেখানে মীর্জা মাহাবুবের ভুল চিকিৎসায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় চোখ। পরে ইমদাদ রাজধানীর ইস্পাহানি ইসলামিয়া আই ইনস্টিটিউটে চিকিৎসার জন্য যান। তখন চিকিৎসক জানান, ভুল চিকিৎসায় চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। পরে ওই হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ইমদাদের ডান চোখ তুলে ফেলা হয়।

চোখ হারিয়ে গত ৩০ নভেম্বর ঝালকাঠি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের চক্ষু সার্জন মীর্জা মাহাবুবুর রহমানের নামে মামলা করেন ইমদাদ। বিচারক এ এইচ এম ইমরানুর রহমান মামলা তদন্তের জন্য ঝালকাঠি সদর থানায় পাঠান। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গৌতম কুমার ঘোষ এ ঘটনার সত্যতা খুঁজে পান। এদিকে চক্ষু সার্জন মীর্জা মাহাবুবুর রহমান মামলা তুলে নিতে ইমদাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। পাশাপাশি স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারস্থ হন। তখন আপসে সহায়তা করেন কাঠালিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. এমাদুল হক ও আমুয়া ইউপির চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম সিকদার। তাঁরা দুজন ভুক্তভোগী মো. ইমদাদ হোসেনকে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে মামলা তুলে নিতে চাপ দেন। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে ইমদাদ আপস করতে রাজি হন। গত বুধবার সকালে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের চক্ষু সার্জনের কক্ষে ৭৫ হাজার টাকায় আপস হয়। তবে এখনো মামলা তুলে নেননি ইমদাদ।

ভুক্তভোগী মো. ইমদাদ হোসেন বলেন, ‘আমুয়ায় আমাকে কাজ করতে হবে। তাই স্থানীয় রাজনীতিবিদদের কথা ফেলতে পারিনি। বাধ্য হয়ে আপস করেছি।’

চক্ষু সার্জন মীর্জা মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘ভুল যা করার তা করে ফেলেছি। এখন তো আমাকে ফাঁসি দিলেও তাঁর চোখ ফিরিয়ে দিতে পারব না। আমাকে ক্ষমা করে দিন।’

এ বিষয়ে কাঠালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানকে বারবার মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

আমুয়া ইউপি চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম ফোরকান সিকদার বলেন, ‘ভুক্তভোগী আপস করতে রাজি হয়েছেন। আমরা শুধু মধ্যস্থতা করেছি।’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গৌতম কুমার ঘোষ বলেন, ‘এ ঘটনার সত্যতা খুঁজে পেয়েছি। শিগগিরই আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হবে। তবে মামলায় আপস-মীমাংসার বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত