Ajker Patrika

কর্মসৃজনের শ্রমিক দিয়ে আশ্রয়ণের ঘরের কাজ

আব্দুর রহিম পায়েল,  গঙ্গাচড়া
আপডেট : ০২ জুন ২০২২, ১৩: ৩৪
কর্মসৃজনের শ্রমিক দিয়ে আশ্রয়ণের ঘরের কাজ

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় কর্মসৃজনের শ্রমিক দিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মাণাধীন ঘরে মাটি কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, উপজেলার পূর্ব ইচলিতে ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ৫০টি টিনশেড ঘর নির্মাণের কাজ চলছে। এ জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২ লাখ ৩৩ হাজার ৬০০ টাকা। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে ঘরগুলোতে কর্মসৃজনের ২৭ জন শ্রমিক দিয়ে মাটি ভরাট করে নেওয়া হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, প্রকল্পের ঘর থেকে ৪০০ মিটার দূরে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রকল্প ঘরের সামনের একটি ফাঁকা জায়গা থেকে কর্মসৃজনের শ্রমিকেরা দল বেঁধে বালু কেটে প্রকল্পের ঘর ভরাট করছেন। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, আশ্রয়ণ প্রকল্পের বরাদ্দের টাকা বাঁচাতে সেখানে অবৈধভাবে কর্মসৃজনের শ্রমিক দিয়ে মাটি ভরাট করা হচ্ছে।

শ্রমিক নাজমা বেগম বলেন, ‘চেয়ারম্যানকে নাকি ইউএনও স্যার আশ্রয়ণের ঘরে মাটি কাটতে বলেছেন, তাই আমরা গত সোমবার থেকে মাটি কাটছি ঘরগুলোতে। রংপুর শহর থেকে নাকি ডিসি স্যার আসবে, এ জন্য সবাই মিলে মাটি কাটছি।’

পূর্ব ইচলি গ্রামের আছির উদ্দিন বলেন, ‘সরকার গরিব মানুষের জন্য যে ঘর বরাদ্দ দিছে তার টাকাও তো দিছে, হামার গ্রামের রাস্তা-ঘাট ভাঙি যায় তার কোনো খবর নাই। চল্লিশ দিনের মাটি কাটা শ্রমিক দিয়া আশ্রয়ণের ঘরত মাটি কাটে। সরকার ঘরগুলা তৈরি করার জন্য কি টাকা দেয় নাই? পাশের ফসলি জমি নষ্ট করি মেশিন দিয়া মাটি কাটে। সরকারি লোকজন ফসলি জমি নষ্ট করি মাটি কাটলে দোষ নাই, হামার থাকার জন্য ঘরে যদি মাটি তুলি তাহলে দোষ।’

পূর্ব ইচলি গ্রামের কৃষক মমিনুর ইসলাম বলেন, ‘হামরা গরিব মানুষ। কষ্ট করি আবাদ করি খাই। ২৫-৩০ হাজার টাকা খরচ করি বাদাম লাগাইছি। বাদাম এখনো পরিপক্ব হয় নাই। সেই বাদাম খেত নষ্ট করি ইউএনও বালু উত্তোলন করতেছে। এ বিষয় ইউএনও স্যারকে বলছিলাম এ জন্য গ্রামের চৌকিদার দিয়া মোক (আমাক) ধরি নিয়া যাইতে ধরছিল।’

কৃষাণী শহিজন বেওয়া (৬৫) বলেন, ‘নদীত চরে কষ্ট করি আবাদ করি কোনো রকম জীবন বাঁচাই। সরকারি লোকজন আসি জোর করি বাদাম খেত নষ্ট করি মেশিন দিয়া বালু তোলে। শেখের বেটি হাসিনা কি ওমাক গুলাক কইছে যে আবাদি জমি নষ্ট করি বাড়ি বানান।’

সৃজনের শ্রমিক দিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের কাজ করার বিষয়ে জানতে চাইলে ট্যাগ অফিসার লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমারও তো একই প্রশ্ন—শ্রমিকেরা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে কেন কাজ করছেন? বিষয়টি আমি ইউএনও স্যারকে বলব।’

এ বিষয়ে লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদি বলেন, ‘আমাকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুনিমুল হক বলেছেন মাটি কাটার জন্য। এ জন্য আমি চল্লিশ দিনের শ্রমিক দিয়ে মাটি কাটছি। পিআইও সাহেব বলেছেন ডিসি স্যার আসবেন আশ্রয়ণ ঘরগুলো দেখার জন্য, তাই শ্রমিক দিয়ে কাজ করা হচ্ছে।’ 
তবে চেয়ারম্যানের বক্তব্য অস্বীকার করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুনিমুল হক জানান, ‘আমি চেয়ারম্যানকে এ ধরনের কথা বলিনি।’

কর্মসৃজনের শ্রমিক দিয়ে মাটি কাটার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এরশাদ উদ্দিনের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি চড়াও হয়ে বলেন, ‘আপনার সমস্যা কোথায়? আপনার কি কোনো সমস্যা হচ্ছে? আপনার কোনো সমস্যা হলে নিউজ করে দেন।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

পাগল বেশে রাস্তায় মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা কন্টেন্ট ক্রিয়েটর সম্পর্কে যা জানা গেল

প্রধান উপদেষ্টার নতুন বিশেষ সহকারী কে এই আনিসুজ্জামান চৌধুরী

সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে জাতিসংঘের ফলকার তুর্কের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল আইএসপিআর

হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত