Ajker Patrika

‘তদারকি নেই’ কমিউনিটি ক্লিনিকে, মিলছে না সেবা

মুলাদী (বরিশাল) প্রতিনিধি
‘তদারকি নেই’ কমিউনিটি ক্লিনিকে, মিলছে না সেবা

মুলাদীতে কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা মিলছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে কার্যক্রম অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা। উপজেলার ২৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকের অনেকগুলোই নিয়মিত খোলা হয় না বলে দাবি করেছে সাধারণ মানুষ। কোনো কোনো কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) সপ্তাহে ২-১ দিন ক্লিনিকে যান বলেও অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, স্বাস্থ্যসেবা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ তৃণমূলে পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো স্থাপন করা হয়। এসব ক্লিনিকে নিয়োগ দেওয়া হয় সিএইচসিপিদের। চাহিদা অনুযায়ী বছরে ৩-৪ বার ওষুধ সরবরাহ করা হয়। সরকার প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকে টাকা খরচ করলেও মুলাদী উপজেলাবাসী সেবা পাচ্ছেন না।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, মুলাদীতে ২৭টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার রয়েছেন ২৫ জন। প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকে সিএইচসিপিদের সপ্তাহে ৬ দিন দায়িত্ব পালন করার কথা। এর সঙ্গে ইউনিয়নভিত্তিক স্বাস্থ্য সহকারীদের ৩ দিন এবং পরিবার পরিকল্পনা সহকারীদের (এফডব্লিউএ) ৩ দিন কমিউনিটি ক্লিনিকে বসে সেবা দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। সে হিসাবে প্রতিদিন কমিউনিটি ক্লিনিকে দুজনের সেবা দেওয়ার কথা।

২২ সেপ্টেম্বর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের জালালপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে দেখা গেছে, প্রধান ফটকে তালা দেওয়া রয়েছে। ক্লিনিকের সামনে অপেক্ষা করছেন চারজন সেবাপ্রত্যাশী। অনেক রোগী ফিরে গেছেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

সফিপুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের মো. জাকির হোসেন বলেন, বোয়ালিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে এলাকার মানুষ সেবা পাচ্ছে না। উপজেলার ২৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে ৪-৫টি ক্লিনিকে নিয়মিত কার্যক্রম চললেও বাকিগুলো অনেক সময় বন্ধ থাকে। সরকার নিয়মিত ওষুধ দিচ্ছে, কর্মকর্তাদের বেতন দিচ্ছে কিন্তু সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে।

উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামের রহিমা বেগম বলেন, জালালপুর কমিউনিটি ক্লিনিকটি সপ্তাহের অধিকাংশ দিনই বন্ধ থাকে। ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরপর তিন দিন ক্লিনিকে এসে তালাবদ্ধ পেয়েছেন। ক্লিনিকের সামনে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি।

জালালপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মো. বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘গত সপ্তাহে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিন দিন প্রশিক্ষণে থাকায় রোগীদের সেবা দিতে পারিনি। ওই সময় ক্লিনিক খোলার জন্য স্বাস্থ্য সহকারীর কাছে চাবি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি কী কারণে ক্লিনিক খোলেননি, তা আমার জানা নেই।’
গাছুয়া ইউনিয়নের পদ্মারহাট কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমি প্রতিদিন ক্লিনিকে বসি এবং রোগীদের সেবা দিই। অনেক সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সভা কিংবা দাপ্তরিক কাজে যেতে হয়। তখন স্বাস্থ্য সহকারী কিংবা পরিবার পরিকল্পনা সহকারীর কাছে দায়িত্ব থাকে। তাঁরা অনেক সময় ক্লিনিকে তালা লাগিয়ে এলাকা পরিদর্শনে যান। এতে হয়তো মাসে ২-১ দিন ক্লিনিক বন্ধ থাকতে পারে।’

উপজেলার সমন্বিত টিকাদান সমন্বয়কারী ও কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা মো. আল মামুন কবির মিয়া বলেন, টিকাদান কার্যক্রম এবং দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি উপজেলার সব কমিউনিটি ক্লিনিক তদারকি করা সম্ভব নয়। তবে সব ক্লিনিকে নিয়মিত ওষুধ সরবরাহ করা হয় এবং সিএইচসিপিদের নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত