Ajker Patrika

বকশিশ কম পেয়ে অক্সিজেন মাস্ক খুলে রোগীকে হত্যা

বগুড়া প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ৪৬
বকশিশ কম পেয়ে অক্সিজেন মাস্ক খুলে রোগীকে হত্যা

বগুড়ায় হাসপাতালের কর্মচারীকে বকশিশ কম দেওয়ায় অক্সিজেন মাস্ক খুলে নিয়ে রোগীকে হত্যার মতো নির্মম ঘটনার সাক্ষী হতে হয়েছে বিদায়ী বছরে। শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ৯ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে এই ঘটনা ঘটেছিল। এতে অভিযুক্ত আসাদুল ইসলাম মীর ধলু এখন গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে আছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত বিকাশ বিশ্বাস কর্মকারকে (১৮) ঘটনার সময় নিচ তলার জরুরি বিভাগ থেকে স্ট্রেচারে করে তৃতীয় তলায় সার্জারি বিভাগে নেন কর্মচারী ধলু। তিনি পরে বিকাশের বাবা বিশু বিশ্বাস কর্মকারের কাছে বকশিশ হিসেবে ২০০ টাকা দাবি করেন। বিশু ১৫০ টাকা দেন। ধলু এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিকাশের অক্সিজেন মাস্ক খুলে দিলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি মারা যান। তখনই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান ধলু।

এ ঘটনায় পরদিন বুধবার জরুরি বিভাগের খণ্ডকালীন (অস্থায়ী) কর্মচারী ধলুর বিরুদ্ধে ওয়ার্ড নির্বাহী বাদী হয়ে মামলা করেন। একই সঙ্গে জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তাকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরদিন বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকার আব্দুল্লাহপুর থেকে ধলুকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

বিকাশের বাড়ি গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার পুটিমারী গ্রামে। তিনি ৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় সাঘাটায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন।

বাবা বিশু বলেন, ‘বিকাশকে হাসপাতালের কর্মচারী ধলু স্ট্রেচারে করে সার্জারি বিভাগে নিয়ে মেঝেতে শুইয়ে দেন। পরে ধলু বকশিশ হিসেবে আমার কাছে ২০০ টাকা দাবি করেন। ওই সময় আমি ১৫০ টাকা দিয়ে বলি ৫০ টাকা পরে দেব। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অক্সিজেনের দাম বেশি বলে বিকাশের অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেন ধলু। এ সময় বিকাশের নাক দিয়ে ফেনা উঠতে থাকে। একবার হেঁচকি দিয়ে নিথর হয়ে যায় তার শরীর। পরে বিকাশের মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগিয়ে দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান ধলু।’

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মহসীন বলেন, ঘটনা তদন্তে জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা মনির আলী আকন্দকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে সে ব্যাপারে তৎপর থাকবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, ‘ঘটনাটিকে আমরা খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিই। এক দিনের মধ্যে আসামিকে ধরতে সক্ষম হয় র‍্যাব।’

র‍্যাব কর্মকর্তা মো. সোহরাব জানান, গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চিকিৎসাধীন বিকাশের অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন ধলু। তিনি ছয় বছর ধরে হাসপাতালে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মী হিসেবে অস্থায়ীভাবে পরিচ্ছন্নতার কাজ করছিলেন। তিনি প্রতিদিন দুপুর ২টা পর্যন্ত নির্ধারিত কাজ করার পর বিকেল থেকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে থাকতেন। সেখানে রোগীদের স্ট্রেচারে করে পৌঁছে দেওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের দালালি করতেন। এসব কাজে তিনি রোগী ও স্বজনদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ আদায় করতেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) ওসমান গণি বলেন, ‘ধলু এখন জেলহাজতে আছেন। লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এখনো পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত