Ajker Patrika

পুরো এলাকা থমথমে পুরুষেরা এলাকাছাড়া

রংপুর প্রতিনিধি
পুরো এলাকা থমথমে পুরুষেরা এলাকাছাড়া

তিন সন্তানের সবাই ছেলে। বড় ছেলে বাড়ির বাইরে থাকেন আর ছোট ছেলের বয়স ৫ বছর। আর তাই সংসারের কাজে মায়ের সঙ্গী ছিল অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া রমজান আলী আকাশ। সেই সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা মা গোলাপী। এখন তাঁর প্রশ্ন—কে তাঁকে টুকটাক সাহায্য করবে বা অসুস্থ হলে সেবা দেবে?

রমজান রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চৈত্রকোল ইউনিয়নের অনন্তরামপুর কলোনিপাড়া গ্রামের আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে। গত সোমবার দুপুরে খেতাবেরপাড়া পল্লী মঙ্গল উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি নিয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের দুই পক্ষের সংঘর্ষকালে সে নিহত হয়।

এ ঘটনায় পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষেরা আত্মগোপন করেছেন। সড়কের ধারের অধিকাংশ বাড়িতে তালা ঝুলতে দেখা গেছে।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১টার দিকে রমজানদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শত শত মানুষের ভিড়। সবার লক্ষ্য সড়কের দিকে। দেড়টা বাজতেই সাইরেন বাজিয়ে অ্যাম্বুলেন্স আসে বাড়ির পথে। কান্নার শব্দে ভারী হয়ে উঠে পুরো এলাকা। রমজানের লাশ নামিয়ে নেওয়া হয় উঠানে। সন্তানের লাশ দেখে মূর্ছা যান গোলাপী ও আনোয়ারুল।

পানির ছিটা দিয়ে জ্ঞান ফেরাতেই স্বামী আনোয়ারুলকে জড়িয়ে বিলাপ করেন গোলাপী, ‘কলিজাটাক হারায় ফেলানু। তোমার কথা থুবার পানু না। মোর অসুখ হইলে এ্যালা কায় দেখপে, কায় মোর যত্ন নিবে? বাবা, ছাড়া মুই কেমন করি বাঁচিম? তোমরা মোর বাবাক আনি দেও।’ বলেই ফের মূর্ছা যান তিনি।

গতকাল ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরে রমজানের লাশ বাড়িতে আনা হয়। বেলা ৩টার দিকে স্থানীয় কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।

পরিবার ও প্রতিবেশী সূত্রে জানা যায়, রমজানের বাবা কুমিল্লা ও নোয়াখালী গিয়ে কাজ করেন। রমজানের কোনো বোন না থাকায় লেখাপড়ার পাশাপাশি সে সংসারের কাজে নিয়মিত মাকে সহায়তা করত।

প্রতিবেশী ফরিদা বেগম বলেন, ‘রমজান খুব শান্তপ্রকৃতির ছিল। তার মায়ের সংসারে সব কাজে সহায়তা করত। তার মৃত্যু পুরো এলাকায় কেউ মানতে পারছে না। তার মা-বাবা পাগলপ্রায়। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।’

মদনখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জু হোসেন বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে আতঙ্কে বাগেরভিটা, খেতাবেরপাড়া ও পণ্ডিতপাড়া গ্রামের অনেক পুরুষই বাড়ি থেকে পালিয়েছেন। পুলিশ প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি, যাতে নিরপরাধ মানুষকে আটক না করে।’

যোগাযোগ করা হলে রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডি-সার্কেল) মো. কামরুজ্জামান বলেন, শিক্ষকদের দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। পুলিশ ২৫ জনকে আসামি করে একটি এবং নিহত শিক্ষার্থীর মা বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে আরেকটি মামলা করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত