Ajker Patrika

মহাসড়কে রিকশার লেন চালু ও জরিমানা বন্ধের দাবি

অরূপ রায়, সাভার
আপডেট : ২৬ জুন ২০২২, ১০: ৫১
মহাসড়কে রিকশার লেন চালু ও জরিমানা বন্ধের দাবি

‘আইজও আমার রিকশাটা দিল না। রিকশার জন্য আমি দুই দিন ধইরা বাসায় যাই না। আমার বউ-পোলাপান বাসায় কেমনে চলতাছে জানি না। রিকশা না পাইলে পরিবার নিয়া আমার না খাইয়া মরতে অইবো।’ গত শুক্রবার সাভার হাইওয়ে থানার সামনে দাঁড়িয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এসব কথা বলছিলেন রিকশাচালক সালাম বাবু।

সাভার হাইওয়ে থানা-পুলিশ গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের গেন্ডা বাসস্ট্যান্ড থেকে সালাম বাবুর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এর পর থেকে ওই থানার সামনেই অবস্থান করছিলেন বাবু। কিন্তু জরিমানার টাকা জোগাড় করতে না পারায় রিকশা ছাড়াতে পারছিলেন না। সেই কষ্ট থেকে কান্না করে ক্ষোভ প্রকাশ করছিলেন সালাম বাবু। পরে পুলিশ তাঁর রিকশাটি ছেড়ে দেয়।

শুধু সালাম বাবু নন, তাঁর মতো আরও অনেককেই রিকশার জন্য প্রতিদিন সাভার হাইওয়ে থানার সামনে ভিড় করতে দেখা যায়। তবে হাতেগোনা দু-একজন ছাড়া বাকি সকলকেই জরিমানা দিয়ে রিকশা ছাড়াতে হয়।

হাইওয়ে পুলিশ ও রিকশাচালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহাসড়কে রিকশা চালানো নিষেধ থাকলেও অনেকে না বুঝে অথবা যাত্রীদের অনুরোধে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও রিকশাভ্যান নিয়ে মহাসড়কে উঠে পড়েন। নজরে এলে পুলিশ রিকশা আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এভাবে প্রতিদিন অর্ধশত রিকশা আটক করা হয়। পরে রিকশাপ্রতি ২ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করে ছেড়ে দেওয়া হয়।

সাভার পৌর এলাকার একটি রিকশা গ্যারাজের মালিক মনির হোসেন বলেন, সাভারে যাঁরা রিকশা চালান তাঁদের প্রায় সবাই দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের লোক। এলাকায় কাজ না পেয়ে সাভার এসে তাঁরা রিকশা চালাচ্ছেন। প্রতিদিনের গ্যারাজ ভাড়া ও জমার টাকা দিয়ে যে টাকা উদ্বৃত্ত থাকে তা দিয়ে তাঁদের সংসার চালানোই কষ্টকর। এ অবস্থায় জরিমানার টাকার জন্য তাঁদের ধার করতে হয়।

গত শুক্রবার থানার সামনে দেখা হওয়ার পর রিকশা আটকের কারণ জানতে চাইলে সালাম বাবু বলেন, ‘আমি সাধারণত রিকশা নিয়ে হাইওয়েতে উঠি না। দেড় মাসের মধ্যে গত বৃহস্পতিবারই প্রথম গ্যান্ডা বাসস্ট্যান্ডে যাইয়া ধরা খাইচি। স্যারেরে হাত-পা ধইরা কত কান্নাকাটি করলাম। আমার কষ্টের কাহিনি শুনাইলাম। তার পরেও হ্যাগো মন গলল না। আমার রিকশাটা নিয়া আইল।’

আশুলিয়া থানা রিকশা ও ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের আইন বিষয়ক সম্পাদক কে এম মিন্টু বলেন, ‘যাঁরা পোশাক কারখানা বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ পান না তাঁরা রিকশা চালানোকে বিকল্প পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। রিকশায় সাভার ও আশুলিয়ায় অন্তত দেড় লাখ লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র লোকজন এই বাহন ব্যবহার করে উপকৃত হচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। অনতিবিলম্বে মহাসড়কের পাশে রিকশার জন্য আলাদা লেন, জরিমানা ও চাঁদা আদায় বন্ধের দাবি জানান তিনি।

হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন, ‘মহাসড়কে ত্রিহুইলার চলাচল নিষেধ। এ জন্য এসব আটক করা হয়। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আটকের পর জরিমানা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে মানবিক কারণে জরিমানা ছাড়াও ছাড়া হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত