Ajker Patrika

৫০ বছরেও অরক্ষিত ৭০ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সমাধি

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ২৩
৫০ বছরেও অরক্ষিত ৭০ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সমাধি

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও অরক্ষিত ৭০ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সমাধি। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধি সংরক্ষণে সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। দেশের এই বীরসন্তানদের সমাধি সংরক্ষণের পাশাপাশি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মাখন লাল বড়ুয়া বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের হত্যাযজ্ঞের পর থেকে সীতাকুণ্ড ও কুমিরা রেলস্টেশন এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বিভিন্ন গ্রুপে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করে যুদ্ধকে ত্বরান্বিত করেন সীতাকুণ্ডের বীর মুক্তিযোদ্ধারা। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে ৭০ বীর মুক্তিযোদ্ধার জীবনের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর হানাদারমুক্ত হয় সীতাকুণ্ড। স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫০ বছর অতিক্রম হলেও শহীদদের সমাধি চিহ্নিত না করায় ক্ষোভ আর হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল গনি বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিরা নামক স্থানে গাছ ফেলে ব্যারিকেড দিয়ে প্রথম প্রতিরোধ সৃষ্টি করা হয়। এ সময় পাকিস্তানি বাহিনী এলোপাতাড়ি গুলি করে। নৃশংসভাবে হত্যা করেন বদিউল আলম বাদশাকে। স্থানীয় বাসিন্দারা সেখানে বাদশাকে সমাধিস্থ করেন। পাকিস্তানি সেনাদের সাঁজোয়া বহরকে বাধা দিলে কুমিরার মসজিদ্যায় কামাল উদ্দিন নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে হত্যা করেন। ৩০ মার্চ সোনাইছড়ির জোরামতল এলাকার জামে মসজিদে নামাজপড়া অবস্থায় ১১ মুসল্লিকে হত্যা করেন পাকিস্তানি সেনারা। পরে মসজিদের সামনে তাঁদের কবর দেওয়া হয়।

মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ডা. মো. এখলাস উদ্দিন বলেন, সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ মন্দিরে ওঠার ২ নম্বর পুলসংলগ্ন পাহাড়, সীতাকুণ্ড পৌরসদরস্থ রেলস্টেশনের পূর্বে তাঁতিপাড়া, পন্থিছিলা বাজার, বশরত নগরছড়ার পাশ, উপজেলা পরিষদসংলগ্ন পেশকারপাড়া, কুমিরা রেলস্টেশনের পাশ, সলিমপুর ওভার ব্রিজ-সংলগ্ন এলাকা, কুমিরা গুল আহমদ মিলের ভেতরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের নির্যাতন চালান। তাঁরা নির্যাতনের পর তাঁদের মেরে সেখানে ফেলে রাখত। পরে তাঁদের সেখানে সমাধি দেওয়া হয়।

কাদেরিয়া বাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান ও সীতাকুণ্ড পৌরসভার সাবেক মেয়র নায়েক (অব.) শফিউল আলম বলেন, সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে ও কুমিরা রেলস্টেশন-সংলগ্ন যক্ষ্মা হাসপাতালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্যাতনকক্ষ ছিল। সেখানে অনেকের ওপর নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে কবর দেওয়া হয়েছে। চন্দ্রনাথ পাহাড়ের পাদদেশে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হলেও এখনো অধিকাংশ স্মৃতিবিজড়িত স্থান সংরক্ষণে কোনো উদ্যোগ নেই।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘গণকবরে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কুমিরা ও সীতাকুণ্ড পৌরসদরে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর গণকবর চিহ্নিত করে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া যুদ্ধে শহীদদের বধ্যভূমির মালিক ও দখলদারদের বিবরণ, গণকবরের মানচিত্র তৈরি ও ভূমি অধিকরণের কাজ চলছে। অচিরেই গণকবরগুলো দখলমুক্ত করে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত