Ajker Patrika

মুমূর্ষু রোগীকে রক্ত দিলেন দায়িত্বরত চিকিৎসক

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ৫৪
মুমূর্ষু রোগীকে রক্ত দিলেন দায়িত্বরত চিকিৎসক

সকাল থেকে জরুরি বিভাগে দায়িত্ব পালন করছেন। চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীর হঠাৎ রক্তের প্রয়োজন হয়। চিকিৎসকের পরামর্শে রক্ত দেওয়ার জন্য লোকও ঠিক করা হয়। কিন্তু সেই লোক না আসায় রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। পরে রোগীকে বাঁচাতে চিকিৎসক নিজেই রক্ত দান করলেন।

এ সময় পাশে বসে থাকা কয়েকজন কয়েকটি ছবি তুলে ফেসবুকে ছেড়ে দেন। যা মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকে সেই চিকিৎসককে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে পোস্টও দেন। গত রোববার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

সেই চিকিৎসক হলেন হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বিমান চন্দ্র আচার্য। যাকে রক্ত দেওয়া হলো তিনি মিতা সাহা (৪৫)। মিতা সাহা হাতিয়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যবসায়ী নান্টু সাহার স্ত্রী।

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায়, জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের চেয়ারে বসা বিমান চন্দ্র আচার্য। হাতে রক্ত নেওয়ার জন্য স্যালাইনের সুঁই লাগানো। পাশে একটি টেবিলে রাখা ব্যাগে রক্ত এসে জমা হচ্ছে। সামনের টেবিলে জরুরি বিভাগের রেজিস্ট্রার বই ও পেশার মাপার যন্ত্র পড়ে আছে। মুখে ক্লান্তি নেই, আছে মুমূর্ষু রোগীকে জীবন ফিরিয়ে দেওয়া আনন্দের ছাপ।

বিমান চন্দ্র আচার্য জানান, রোগীটি তাদের প্রতিবেশী। দীর্ঘদিন ধরে তিনি লিভার সমস্যা ও রক্ত শূন্যতায় ভুগছেন। জরুরি বিভাগে দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় হাসপাতালে আসেন তিনি। কাগজপত্র ও শরীরের বিভিন্ন অংশ দেখে দ্রুত তাঁকে রক্ত দিতে বলা হয়। কিন্তু দীর্ঘ তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও রোগীর জন্য রক্তের ব্যবস্থা করতে পারেনি স্বজনেরা। ইতিমধ্যে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। রক্তের গ্রুপ দেখে নিজের রক্তের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় পরে নিজেই রোগীকে রক্ত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

বিমান চন্দ্র আচার্য আরও জানান, আগে তিনি আরও ১৪ বার বিভিন্ন সময় মুমূর্ষু রোগীদের রক্ত দান করেছেন। করোনাকালীন দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি নিজেই করোনায় আক্রান্ত হন।

রোগী মিতা সাহার মেয়ের জামাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিলাস জানান, তাঁর শাশুড়ি দীর্ঘদিন ধরে লিভারের সমস্যায় ভুগছেন। দেশে আসার পর হঠাৎ তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। তখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়।

এ ব্যাপারে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘ডা. বিমান জরুরি বিভাগে দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় এক রোগীকে রক্ত দিয়েছেন। বিষয়টি শোনার পরপরই তাঁকে ছুটি দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছি। বিষয়টি মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত