Ajker Patrika

‘খুচরা বিক্রেতারা ডাকাত!’

আজিজুর রহমান, চৌগাছা
আপডেট : ১২ মার্চ ২০২২, ১৩: ২৯
‘খুচরা বিক্রেতারা ডাকাত!’

চৌগাছায় লাগামহীন হয়ে পড়েছে খুচরা সবজির বাজার। ইতিমধ্যে সেঞ্চুরি ছাড়িয়েছে কাঁচামরিচ, পটোল, উচ্ছে, ঢ্যাঁড়স ও পুঁইশাকের ফল (মেচড়ি) ও কচুর লতি। গতকাল শুক্রবার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারি থেকে তিন থেকে সাড়ে তিন গুণ দাম বাড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন সবজি। অথচ, চৌগাছাতে ধানের চেয়ে সবজির চাষই বেশি হয়।

পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সবজির সরবরাহ কম হওয়ায় দাম কিছুটা বেশি। তবে খুচরা বিক্রেতারা ক্রেতাদের কাছ থেকে ডাকাতি করছেন।

শুক্রবার চৌগাছা সরকারি শাহাদৎ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বড় পাইকারি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, স্থানীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজি পাইকারি বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৪২ টাকায়, মেহেরপুরি পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৩২ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ থেকে ৬৫, ফুলকপি ৩৪ থেকে ৩৬, স্থানীয় আলু ১৬ থেকে ১৮, শিম ১৪ থেকে ১৫, ধনেপাতা ১৮ থেকে ২০, কচুর লতি ৪২ থেকে ৫৪, বাঁধাকপি প্রতিটি ১৫ থেকে ১৮, লাউ মাঝারি প্রতিটি ৩০ থেকে ৩৫, উচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

তবে খুচরা বাজারগুলোতে এই সবজিরই দাম দ্বিগুণ থেকে আড়াই গুণ, ক্ষেত্রবিশেষ তিন গুণ পর্যন্ত অতিরিক্ত দামে কিনতে হচ্ছে  ক্রেতাদের। শাহাদৎ পাইলট বিদ্যালয় মাঠের বড় পাইকারি কাঁচাবাজারের মধ্যেই খুচরা বাজার, শহরের মূল খুচরা কাঁচাবাজার, মৃধাপাড়া মহিলা কলেজ-সংলগ্ন কাঁচাবাজার ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়-সংলগ্ন কাঁচা বাজারে এই দামে সবজি বিক্রি হতে দেখা গেছে।

কাঁচাবাজারের মধ্যেই খুচরা বাজার এবং ২০০ মিটার দূরের অন্য খুচরা বাজারে স্থানীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫, মেহেরপুরি পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫, কাঁচামরিচ ৮০ থেকে ১০০, ফুলকপি ৪৫ থেকে ৫৫, স্থানীয় আলু ২০ থেকে ২৫, শিম ৩০, ধনেপাতা ৩৫ থেকে ৪৫, কচুর লতি ৮০ থেকে ১০০, বাঁধাকপি প্রতিটি ২০ থেকে ৩০, লাউ মাঝারি প্রতিটি ৪৫ থেকে ৫৫, উচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।

বড় বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী আয়নাল হক বলেন, ‘খুচরা বিক্রেতারা ডাকাতি করছেন। আমাদের কাছ থেকে কম টাকায় কিনে আমাদের সামনেই তাঁরা দ্বিগুণ-তিন গুণ পর্যন্ত দামে বিক্রি করছেন।’

বাজারের আরেক পাইকারি বিক্রেতা মজনুর রহমান বলেন, ‘আমি সকালে মরিচ ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা পর্যন্ত পাইকারি বিক্রি করেছি। পরে বাড়ির জন্য খুচরা মরিচ কিনেছি ৭০ টাকা কেজি দরে।

নারায়ণপুর ইউনিয়নের হাজরাখানা গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মনিরুজ্জামান মিলন বলেন, ‘সবজির পাইকারি বা খুচরা বাজারে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। কোথাও কোনো পণ্যের মূল্যতালিকা টাঙানো নেই। পাইকারি দোকানের সামনে বসে বিক্রেতারা দ্বিগুণ-তিন গুণ মূল্য নিচ্ছেন। কেউ দেখছেন না। একই সবজি পাইকারি বাজারের মধ্যের খুচরা দোকানের চেয়ে সদরের মূল্য খুচরা বাজারে কিছুটা হলেও কম। এই নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থা দেখবে কে?’

চৌগাছা পাইকারি কাঁচা বাজারের আড়তদার (ব্যবসায়ী) মুকুল হোসেন বলেন, ‘বাজারে সবজির সরবরাহ তুলনামূলক কম। এ জন্য দাম কিছুটা বেশি। প্রতি দিনই পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, আলুসহ অন্য সবজির দাম বেড়েছে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ্বাস বলেন, ‘ডিসেম্বরের বর্ষণে উপজেলার বিপুল পরিমাণ জমির সবজি নষ্ট হওয়ার প্রভাব বাজারে কিছুটা পড়েছে। নতুন সবজি বাজারে আসতে শুরু করলে সবজির দাম কমে যাবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, ‘সদরের সব দোকানিকে নিজ নিজ দোকানে মূল্যতালিকা টাঙাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিনিয়ত বাজার তদারকি করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা অনৈতিকতার আশ্রয় নিলে প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চার মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের সেবা ডিজিটাইজ করার নির্দেশ দিল সরকার

গত দশ বছর ভিসা না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে আসতে পারিনি: মাইলাম

তিন নারী আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: তারেক রহমান

একাত্তর ও এক-এগারোর সময় বাংলাদেশ বিষয়ে মার্কিন নীতি ভুল ছিল: ড্যানিলোভিচ

সীতাকুণ্ডে সৈকতে বন্ধুকে বেঁধে রেখে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত