Ajker Patrika

সূর্যমুখীর ভালো ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

শিমুল চৌধুরী, ভোলা
আপডেট : ৩১ মার্চ ২০২২, ১০: ২০
সূর্যমুখীর ভালো ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

ভোলার মনপুরা উপজেলার কলাতলী চরে পতিত জমিতে সূর্যমুখীর ভালো ফলন হয়েছে। চলতি মৌসুমে এ চরে সূর্যমুখীর চাষ করে লাভের আশা দেখছেন চাষি শাহ জালাল।

কৃষক শাহ জালাল জানান, নদীর লবণাক্ত পানি কলাতলী চরে প্রবেশ করায় এ চরে গত কয়েক বছর ধরে তেমন কোনো ফসল হচ্ছিল না। ফলে পতিতই পড়েছিল সেই জমি। চলতি মৌসুমে স্থানীয় এনজিও গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা থেকে বিনা মূল্যে সূর্যমুখীর বীজ ও জৈব সার এবং প্রশিক্ষণ নিয়ে এবার সূর্যমুখী চাষ করে লাভের আশা দেখছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া ঠিক থাকলে ও বাজারে সূর্যমুখীর দাম ভালো পেলে গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি লাভবান হতে পারবেন বলে মনে করছেন তিনি।

তাঁর সাফল্য দেখে স্থানীয় অর্ধশতাধিক কৃষক সূর্যমুখী চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। তাঁরা ভবিষ্যতে গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা থেকে বীজ, সার ও প্রশিক্ষণ নিয়ে সূর্যমুখীর চাষ করবেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয় কৃষক সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘শাহ জালালের সূর্যমুখী চাষে সাফল্য দেখে আমাদেরও এ চাষে আগ্রহ বেড়েছে। ভবিষ্যতে আমরাও গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা থেকে বীজ, সার ও প্রশিক্ষণ নিয়ে সূর্যমুখী চাষ করব বলে আশা করছি।’

এ বিষয়ে গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার কলাতলী চরের শাখা ব্যবস্থাপক মো. মাহবুব জানান, তাঁরা ২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে কলাতলী চরে কার্যক্রম শুরু করেন। লবণাক্ত পানি চরে প্রবেশ করায় ফসলি জমি নষ্ট হয়ে গেছে। তাই এ চরে বিকল্প পরিবেশবান্ধব চাষাবাদ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

সংস্থাটির কৃষিবিদ আনিছুর রহমান টিপু বলেন, ‘কলাতলী চরে এ বছর থেকে পরীক্ষামূলক পরিবেশবান্ধব ফসল চাষ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় এবং গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষামূলকভাবে এ প্রকল্প শুরু করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘লবণাক্ত এ জমিতে যাতে কৃষকেরা তাঁদের ফলন ভালো ফলাতে পারের, সে জন্য চরের কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫০০ জনকে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বিনা মূল্যে বারি সূর্যমুখী-৩ ও বিভিন্ন জাতের সবজির বীজ, জৈব সার, কেঁচো সার দেওয়াসহ অন্যান্য সহযোগিতা করা হয়েছে। কেঁচো সার উৎপাদন করার জন্য ৫০ জনকে রিং স্ল্যাব ও ড্রাম দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনেকটা অনুকূলে থাকায় এ বছর দ্বিগুণ ফলনের আশা করছি। মনপুরার কলাতলীর চর ছাড়াও ভোলা সদর, চরফ্যাশন, দৌলতখান, বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ, বাবুগঞ্জ, পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলায় এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।’

এ বিষয়ে গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন বলেন, ‘আমরা কলাতলীর চরে এখন পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করলেও ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করার ইচ্ছা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে চাষিদের বসতভিটা ও তাঁদের বাড়ির আঙিনার জমি উঁচু করতে হবে।’

এ বিষয়ে মনপুরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকাশ বৈরাগী বলেন, ‘কলাতলীর চরে কোনো বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের লবণাক্ত পানি ভেতরে ঢোকে। ফলে ওই চরে গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা কৃষকদের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত