মুদির দোকানে দিন বদলের আশা বৃদ্ধা মনোয়ারার

ভেদরগঞ্জ (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৬: ৪১
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৬: ০১

শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার ডিএমখালী ইউনিয়নের মুন্সিকান্দিতে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৩০টি পরিবারের বসবাস। এ প্রকল্পের ১১ নম্বর ঘরে বসবাস করেন বৃদ্ধা মনোয়ারা বেগম। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘরের পাশে তিনি নির্মাণ করেছেন একটি ছোট্ট মুদি দোকান। এতে ঘুরেছে তাঁর ভাগ্যের চাকা। এখন তিনি স্বাবলম্বী।

মনোয়ারা বেগমের ভিটেমাটি ছিল কুমিল্লার পার্কের চরে। কিন্তু প্রায় দুই যুগ আগে নদী ভাঙনের শিকার হয়ে ভূমিহীন হন। পরে ছেলেকে নিয়ে চলে আসেন এই ডিএমখালি এলাকায়। এখানে একজনের জায়গায় ঘর তুলে থাকতেন। পরেই স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে তিনি এই সরকারি ঘর পান। এতে তাঁর থাকা নিয়ে ভাবনা দূর হয়। আর একটু রোজগারের জন্য ঘরের সঙ্গেই তিনি দেন ওই মুদি দোকান। প্রতিদিন তাঁর দোকানে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার নানা পণ্য বিক্রি হয়। এই দোকানের আয় দিয়ে সংসারের খরচ চালান। আর তাঁর একমাত্র মেয়ের দিকের নাতনি মাদ্রাসায় পড়ান।

মনোয়ারার এই উদ্যোগ দেখে একই আশ্রয়ণ প্রকল্পের আরেক বাসিন্দা আল আমিন একটি চায়ের দোকান দিয়েছেন। আবার কেউ কেউ করছেন সবজি চাষ। হাঁস-মুরগি থেকে শুরু করে পশু-পাখি পালন শুরু করেছেন অনেকে। এভাবেই বদলে যাচ্ছে প্রকল্পের বাসিন্দাদের জীবনচিত্র।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা সারু মুন্সি বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করি। তিনি আমাদের জীবনের স্বপ্নের বিল্ডিং ঘরে থাকতে দিছেন। আর মনোয়ারা আপা নিজেই তাঁর ঘরের সঙ্গে দোকান দিছেন। আমাদের কিছু কিনতে হলে বাজারে যেতে হয় না।’

স্থানীয় বাসিন্দা শাহালম পাজুরী বলেন, ‘মনোয়ারা থেমে নেই। তিনি তাঁর সংগ্রামী জীবনে সফল হতে চান। আমরা তাঁর দোকানে মাঝেমধ্যে কেনাকাটা করি। প্রধানমন্ত্রী ঘর দিয়েছেন। আশা করি, এখন এঁদের কর্মসংস্থান ও স্বল্প মেয়াদে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’

ডিএমখালি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মহসিন হক আবু ব্যাপারী বলেন, ‘মনোয়ারা আপার মাথা গোঁজার ব্যবস্থা হয়েছে। এখন তিনি পাকা ঘরে থাকেন। দেখলাম, তিনি সেখানে তাঁর ঘরের সঙ্গে একটি দোকান দিছেন। এটা ভালো উদ্যোগ। কর্ম করে খাওয়া আমাদের সকলের জন্য মঙ্গল।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর আল নাসীফ বলেন, ‘আমরা মোট ৬২৫ জন ভূমি ও গৃহহীনকে ঘর দেব। এ পর্যন্ত ৫০৭টি ঘর হস্তান্তর করতে পেরেছি। ডিএমখালি মুন্সিকান্দিতে ৩০টি ঘর করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ডিসি স্যার ডিএমখালির এই প্রকল্প পরিদর্শন করেন, সেদিন দেখলাম মনোয়ারা নামের ওই বাসিন্দা তাঁর ঘরের সঙ্গে ছোট দোকান দিয়েছেন। দোকানের আয় দিয়ে তাঁর সংসার চলছে। তার এই উদ্যোগে আমরা মুগ্ধ। সর্বদা প্রধান মন্ত্রীর পক্ষ থেকে আমাদের উপজেলা প্রশাসন এই মানুষদের পাশে থাকবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত