ফরিদপুরের ভাঙ্গায় একটি বাঁশ ও কাঠের সেতুতে পাল্টে গেছে কয়েক গ্রাম মানুষের ভাগ্য। সেতুটি নির্মাণের ফলে ৮/১০টি গ্রামের মানুষের উপজেলা ও জেলার সঙ্গে যোগাযোগ অনেক সহজ হয়েছে। উপজেলার কৃষি প্রধান একটি ইউনিয়ন আলগী। এ ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে কুমার নদের একটি শাখা থেকে একটি খাল বয়ে গেছে। খালটির এক প্রান্তে তালকান্দা ও অপর প্রান্তে ছোট খারদিয়া গ্রাম।

দীর্ঘদিন এ দুটি গ্রামের মধ্যকার খালে খেয়া নৌকার প্রচলন ছিল। ২০০৫ সাল পর্যন্ত ওই দুই গ্রামসহ আশপাশের ৮ / ১০টি গ্রামের লোকজন খেয়া পার হয়ে উপজেলা শহরসহ আশপাশের হাট-বাজার, স্কুল-কলেজে যাতায়াত করত। ২০০৫ সালের পর খালের ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে এলাকাবাসী। সেটিও গত বছর ভেঙে যায়। এরপর এলাকাবাসীর দুর্ভোগ বেড়ে যায়। অবশেষে বাঁশ ও কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়। এতে এলাকাবাসীর স্বস্তি ফিরেছে। তবে এখন ওই এলাকায় একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি করেন তাঁরা।

সরেজমিন দেখা গেছে, কুমার নদের শাখা খালের পশ্চিম পাশে আলগী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ছোট খারদিয়া গ্রাম। পূর্বপাশে তালকান্দা গ্রাম ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড। এই দুই ওয়ার্ডের সংযোগ সড়কে খালের ওপর পাঁচ ফুট চওড়া ২৬৯টি কাঠের তক্তা দিয়ে এ সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের অর্থায়নে গত বছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সেতুটি তৈরি শুরু হয়। এ মাসের প্রথম সপ্তায় সেতুটির কাজ শেষ হয়।

এলাকাবাসী জানায়, এ খাল পার হয়ে আলগী ইউনিয়নের ছোট খারদিয়া, মানিকদী, নগরমানিকদী, ভরমানিকদী, বালিয়া, সুকনি, বিদ্যানন্দী গ্রামের লোকজন উপজেলা শহরে যাতায়াত করে। প্রতিদিন শত শত লোক এ খাল পার হন।

ছোট খারদিয়া গ্রামের বাসিন্দা হাজী ওহিদুজ্জামান বলেন, তাঁদের গ্রামের অধিকাংশ লোকের জমি খালের ওপারে তালকান্দা গ্রামের মাঠে। তাঁদের দিনে বেশ কয়েকবার এ খাল পার হতে হয়। এ খাল পার হয়েই বাজার-ঘাট করতে হয়। কাঠের সেতু তৈরি করায় তাঁরা অনেক খুশি।

ভাঙ্গার পীরেরচর উচ্চবিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী রুমাইয়া আক্তার বলে, ‘এ সেতু হওয়ায় আমরা অনেক খুশি। আগে অনেক পথ ঘুরে আমাদের স্কুলে যেতে হতো। এখন সহজেই খাল পার হয়ে যেতে পারছি।’

ছোট খারদিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও সেতুটির তত্ত্বাবধানকারী লুৎফর মোল্লা জানান, এ সেতুটি তিন হাত চওড়া, ১২০ হাত লম্বা। তাঁদের ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ম ম ছিদ্দিক নির্বাচিত হয়েই নিজস্ব অর্থায়নে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে এ সেতুটি নির্মাণ করেছেন। ইতিমধ্যে সেতুটি চালু হয়েছে।

আলগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ম ম ছিদ্দিক মিয়া বলেন, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েই নিজস্ব অর্থায়নে এ সেতুটি নির্মাণ করেন। এতে প্রায় তিন লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। ভবিষ্যতে একটি পাকা সেতু নির্মাণের চেষ্টা করবেন।