Ajker Patrika

দীর্ঘ ২০ বছর চাকরির পরও অস্থায়ী কর্মচারী তাঁরা

হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০: ৫২
দীর্ঘ ২০ বছর চাকরির পরও অস্থায়ী কর্মচারী তাঁরা

১৯৯৪ সালে ওয়ার্ড সচিব হিসেবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) যোগদান করেন তারেক সুলতান। এরপর দীর্ঘ ২৭ বছর পার হয়েছে। তবে তাঁকে এখনো স্থায়ী করেনি কর্তৃপক্ষ। যোগদানের পর থেকে এখন পর্যন্ত তিনি একই পদে রয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারেক সুলতান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা বৈষম্যের শিকার। স্থায়ী কর্মকর্তাদের মতো আমরাও একই কাজ করছি। কিন্তু তাঁরা বেতন-ভাতা বেশি পাচ্ছেন। আর সাত বছর পর অবসরে যাব। অবসরে গেলেও তেমন কোনো টাকা পাব না। অথচ একই পদে কাজ করে স্থায়ী কর্মকর্তারা পাবেন ২৫ থেকে ২৬ লাখ টাকা। চাকরিজীবনে প্রাপ্তি বলে কিছু নেই। পুরো সময়টাই হয়তো অস্থায়ী হিসেবে কাটিয়ে দিতে হবে।’

তারেক সুলতান বর্তমানে সিটি করপোরেশনের চকবাজার ওয়ার্ডে ওয়ার্ড সচিব হিসেবে কাজ করছেন। তিনি প্রতি মাসে বেতন-ভাতা বাবদ পান ১৭ হাজার টাকা। অন্যদিকে একই পদে থাকা করপোরেশনের একজন স্থায়ী কর্মকর্তা পান প্রায় ৩০ হাজার টাকা।

তারেক সুলতানের মতো আরও ৭ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী অস্থায়ী ভিত্তিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে কাজ করছেন। তাঁদের অনেকেই ২০ থেকে ২৫ বছর কাজ করার পরও এখনো স্থায়ী হতে পারেননি। বারবার আশ্বাস দিয়েও করপোরেশন তাঁদের স্থায়ী করছে না বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।

তাঁরা বলছেন, করপোরেশনে এখন এক হাজারের বেশি শূন্য পদ আছে। তারপরও তাঁদের অস্থায়ী হিসেবে কাজ করতে হচ্ছে।

তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, করপোরেশনের নিয়োগ বিধিমালায় অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্থায়ী করার বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্থায়ী করার বিষয়টি পুরোপুরি মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, সিটি করপোরেশনের অনুকূলে ১৯৮৮ সালের অনুমোদিত একটি সাংগঠনিক কাঠামো রয়েছে। কিন্তু সাংগঠনিক কাঠামোর বিপরীতে কোনো নিয়োগ বিধি না থাকায় করপোরেশনে দীর্ঘদিন স্থায়ীভাবে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু এর বিপরীতে করপোরেশনের কাজের পরিধি বেড়েছে। তাই জরুরি প্রয়োজনে, কখনো কখনো তাৎক্ষণিক আবেদন গ্রহণের মাধ্যমে দৈনিকভিত্তিক ও নির্ধারিত বেতনে অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

দীর্ঘদিন কাজ করার পরও স্থায়ী না করায় এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। যে কারণে সম্প্রতি চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী।

চসিক অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিষদের সদস্যসচিব সাজু মহাজন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বারবার বলার পরও করপোরেশনের পক্ষ থেকে আমাদের স্থায়ী করার বিষয়ে কোনো তোড়জোড় দেখছি না। শূন্য পদগুলো পূরণের জন্য ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরপর চারবার সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। সর্বশেষ আগামী ৩০ জুনের মধ্যে শূন্যপদ পূরণ করার কথা বলা হলেও করপোরেশন এখনো কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।’

এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্থায়ী করার জন্য আমার আগ্রহের কোনো কমতি নেই। ব্যক্তিগতভাবে আমি তাঁদের স্থায়ী করার পক্ষে। কিন্তু তাঁদের স্থায়ী করার বিষয়টি করপোরেশনের এখতিয়ারে নেই। অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্থায়ী করার জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। সচিবকে আমি নিজে বলেছি। এখন মন্ত্রণালয় থেকে যে নির্দেশনা দেবে, সে অনুযায়ী আমরা কাজ করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত