সংক্রমণ বাড়লেও বেপরোয়া

শামীম রেজা, রাজবাড়ী
আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ১৪: ০৫
Thumbnail image

করোনার তৃতীয় ধাপে প্রতিদিন বাড়ছে শনাক্তের সংখ্যা। সংক্রমণ রোধে সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কিছু বিধিনিষেধ দেওয়া হলেও তা মানছেন না রাজবাড়ীর অধিকাংশ মানুষ। স্বাভাবিক সময়ের মতো হাটবাজার, চায়ের দোকানে চলছে আড্ডা। যানবাহনেও আসনসংখ্যার বেশি যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। সরকারের বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা তৎপর থাকলেও সাধারণ মানুষ সচেতন হচ্ছেন না।

গতকাল বুধবার শহরের মুরগির ফার্ম এলাকায় দেখা যায়, সেখান থেকে দৌলতদিয়া, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন জেলায় বাস ছেড়ে যাচ্ছে। বেশির ভাগ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। অধিকাংশ মানুষের মুখে মাস্ক নেই। অনেক পরিবহনে আসনসংখ্যার বেশি যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। অনেক যাত্রীই মুখে মাস্ক নেই, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার না করেই বাসে উঠছেন তাঁরা।

জামাল মোল্লা বলেন, তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। কুষ্টিয়া থেকে লোকাল বাসে দৌলতদিয়া যাবেন। তিনি মাস্ক পরে আসলেও তাঁর আশপাশের অনেকেই মাস্ক পরেননি। যাত্রী ওঠানোর সময় হ্যান্ড স্যানিটাইজও করা হচ্ছে না।

শহরের বিভিন্ন চায়ের দোকানগুলোতে স্বাভাবিক সময়ের মতো আড্ডা চলছে। এসব দোকানের ক্রেতারা ঘেঁষাঘেঁষি করে বসছেন। অধিকাংশের মুখে নেই মাস্ক। এমনকি একই সিগারেট কয়েকজন ভাগাভাগি করছেন। বিক্রেতাদের মুখেও নেই মাস্ক।

হাট-বাজারের অবস্থা আরও নাজুক। দেখে বোঝার উপায় নেই দেশে আবারও করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। অধিকাংশ মানুষই মানছে না স্বাস্থ্যবিধি। বেশির ভাগ ক্রেতা-বিক্রেতার মুখেই মাস্ক নেই। অনেকের মাস্ক থাকলেও তা থুতনিতে।

পথচারী ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘একটু আগে এখানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছেন। কিছু মানুষকে মাস্ক দিয়েছেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট যত সময় ছিলেন, সবাই মাস্ক পরা ছিল। চলে যাওয়ার পরেই আবার আগের অবস্থা। প্রশাসন তো আমাদের ভালোর জন্যই কাজ করছে। কিন্তু আমরাই সচেতন না।’

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে সামাজিক দূরত্ব তো দূরের কথা, অধিকাংশের মুখে নেই মাস্ক। চিকিৎসকের দরজার সামনে রোগীরা লম্বা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁরা মানছে না সামাজিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি। হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোতে ভর্তি রোগীসহ তাঁদের স্বজনদেরও মাস্ক ছাড়া থাকতে দেখা গেছে।

সদর হাসপাতালে আসা রোগীর স্বজন পাপিয়া বলেন, হাসপাতালে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। চিকিৎসকের কক্ষের সামনে লম্বা সারি। রোগীরা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে 
আছেন। এদিকে কর্তৃপক্ষের নজরদারি দেওয়া উচিত।

সিভিল সাজন ইব্রাহিম টিটোন বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে শনাক্তের হার ৩০ থেকে ৫০ শতাংশে ওঠানামা করছে। সংক্রমণ রোধে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলেই সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, সংক্রমণ বাড়লেও আশার কথা হচ্ছে, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। আক্রান্ত মানুষেরা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বাড়িতে চিকিৎসা নিলেই সুস্থ হচ্ছেন। যারা এখনো করোনার টিকা নেননি তাঁদের শিগগিরই টিকা নেওয়ার আহ্বান করেন তিনি।

জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান বলেন, সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে রয়েছেন। যারা স্বাস্থ্যবিধি মানছে না তাদের জরিমানা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে মানুষকে সচেতন করার জন্য প্রচারণা চালানো হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত