তেরখাদায় ৬ মাস ধরে এসি ল্যান্ড বা সহকারী কমিশনার (ভূমি) না থাকায় উপজেলা ভূমি অফিসে এসে সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এ অবস্থায় জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে এই উপজেলায় দ্রুত একজন সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে উপজেলাবাসী।

ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, তেরখাদায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদটি খালি থাকায় রূপসার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাজ্জাদ হোসেনকে তেরখাদার সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নিজ উপজেলার দায়িত্ব পালনের পর সাজ্জাদ হোসেনের পক্ষে তেরখাদায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

আরও জানা গেছে, তেরখাদায় প্রায় ২ লাখ মানুষের বসবাস। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে সাধারণ জমির মালিকেরা বিভিন্ন প্রয়োজনে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাঁরা জমির খাজনা, নামজারি, নামপত্তন, বন্দোবস্ত, ইজারা, খাসজমি ডিসিআর সেবা ঠিকমতো পাচ্ছেন না।

ভূমি কমিশনার না থাকায় জমির নামজারি, মিস কেস, ভূমি-সংক্রান্ত শুনানি সবই বন্ধ রয়েছে। জমির খাজনা খারিজ সময়মতো করতে না পারায় জমির ক্রয়-বিক্রয় কমে গেছে। জমি নামজারি করতে আসা ভুক্তভোগীরা জানান, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ঘুরছেন কিন্তু জমির নামজারির কাজ করতে পারছেন না।

গোপাল বসু নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমি চাচাকে নিয়ে অনেক দিন ভূমি অফিসে গিয়েছি একটি জমির নামজারির জন্য। কিন্তু ভূমি কমিশনার না থাকায় নামজারি করাতে পারিনি। এমন অনেককেই ভূমি অফিসে এসে কোনো সমাধান না পেয়ে ফিরে যেতে দেখেছি।’

সেবা নিতে আসা সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা হাফিজুর রহমান বলেন, ‘উপজেলা ভূমি অফিসে এসি ল্যান্ড না থাকায় অফিসের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। তাই দ্রুত একজন ভূমি কমিশনার নিয়োগদানের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

তেরখাদা দলিল লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি এম ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘নামজারি কাজ বন্ধ থাকায় অনেকেই জমি বিক্রি করতে পারছেন না। এতে একদিকে সরকার বড় ধরনের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে নামজারি না করতে পারায় রেজিস্ট্রি অফিস প্রায় বন্ধের উপক্রম। এতে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। তাই এ উপজেলায় জনগণের দুর্দশা লাঘবে একজন ভূমি কমিশনার নিয়োগের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবিদা সুলতানা বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে অল্পদিনের মধ্যে এ উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদটি নিয়োগ দেওয়া হবে।’