অসময়ে প্রণোদনার সার, ক্ষোভ

মিজান মাহী, দুর্গাপুর (রাজশাহী) 
প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০২৩, ১০: ৪৪

রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় এবার ১ হাজার ৭৫২ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে। পাটগাছ কাটার উপযোগী হয়ে গেছে। অনেক কৃষক তাঁদের খেতের পাটগাছ কাটতে শুরু করেছেন। আবার অনেকে কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই যখন প্রেক্ষাপট, কৃষকেরা জানতে পারলেন তাঁদের পাট চাষে উদ্বুদ্ধ করতে সরকারের বরাদ্দ বিনা মূল্যের সার এসেছে। উপজেলার ৩ হাজার পাটচাষি পাবেন এই প্রণোদনার সার। অনেক পাটচাষি সার নিতে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলছেন, সময়ের সার অসময়ে এল। এই সার পাট চাষের কী কাজে লাগবে! এখন তো পাটগাছ কেটে জাগ দেওয়ার সময়। এরপর পাটগাছ থেকে সোনালি আঁশ ছাড়াবেন চাষিরা।

কয়েকজন পাটচাষি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পাটবীজ বপনের শুরু থেকেই তাঁরা প্রণোদনার সারের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু সরকারি সার তাঁরা পাননি।তাই নিজেদের গাঁটের টাকা খরচ করে সার কিনে খেতে ছিটিয়েছেন। এত দিনে পাটগাছ বড় হয়ে গেছে। আবার অনেকেই প্রণোদনার পাটবীজ বপন করে সার না পেয়ে পাটখেতের যত্নই নেননি। কৃষকেরা এখন পাটগাছ কাটা শুরু করেছেন। এখন পাট চাষে প্রণোদনার সার এসেছে। এ কেমন কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণ! সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা উদ্যোগ নিলে তাঁরা সময়মতো সার পেতেন। তাতে পাটের ফলন ভালো হতো।

দুর্গাপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১ হাজার ৭৫২ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। গত বছর পাটের আবাদ করা হয়েছিল প্রায় ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। প্রণোদনার সারের আশায় এবার উপজেলায় ২৫০ হেক্টর বেশি জমিতে পাট চাষ হয়েছে। গত এপ্রিল মাসে উপজেলার ৩ হাজার পাটচাষিকে ১ কেজি করে বীজ, আড়াই কেজি টিএসপি, ৫ কেজি ইউরিয়া ও ২ কেজি করে এমওপি সার দেওয়া হয়। তবে পাটবীজ পেলেও সময়মতো প্রণোদনার সার পাননি সাড়ে ৩ হাজার চাষি। তাঁদের এখন সার দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, পাটচাষিরা তাঁদের প্রণোদনার সার নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। কার্যালয়ের সামনেই কথা হয় কয়েকজন চাষির সঙ্গে। তাঁদের অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। প্রণোদনার সার নিতে আসা উপজেলার মাড়িয়া গ্রামের আফতাব আহম্মেদ বলেন, আর ৫ থেকে ৭ দিন পর তাঁর খেতের পাটগাছ কাটা শুরু করবেন। তিনি প্রণোদনার সাড়ে ৯ কেজি সার এখন পেয়েছেন। তিনি এ সার দিয়ে কী করবেন জানতে চাইলে আফতাব বলেন, এখন পাটগাছ কাটার সময়, সার দেওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই। তবে তাঁর ধানখেত আছে। এখন এ সার ধান চাষে কাজে লাগাবেন। এ কারণেই সার নিতে এসেছেন।

পৌর এলাকার দেবীপুর গ্রামের মসলেম উদ্দিন নামের আরেক পাটচাষি বলেন, এত দিন পর প্রণোদনার সার পেয়েছেন। এ সার পাটখেতে দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তবু বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। কারণ, তাঁর পুকুর আছে। সেখানে মাছ চাষ করছেন। এই সার তিনি ওই পুকুরে ছিটিয়ে দেবেন।

জানতে চাইলে উপজেলা উপসহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা রুবেল রানা বলেন, ‘দেরিতে সার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। গত ২৮ মে পাটচাষিদের প্রণোদনার সার বিতরণের নির্দেশনা পাই। তার পর থেকে বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়। এখনো পাটচাষিরা তাঁদের প্রণোদনার সার নিয়ে যাচ্ছেন।’

এই অসময়ে প্রণোদনার সার দিয়ে পাটচাষিরা কী করবেন, জানতে চাইলে রুবেল রানা বলেন, ‘গত বছর সার ও বীজ একসঙ্গে দেওয়া হয়েছিল। এবার একসঙ্গে দিতে পারিনি। সব জায়গায় একই অবস্থা হয়েছে। আমাদের কিছু করার নেই। সার সময়মতো পেলে আমরা কৃষকদের কাছে বিতরণ করতাম।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত