Ajker Patrika

৩ জেলার কৃষকের কপালে ভাঁজ

শাল্লা ও ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২২, ১০: ৪৭
৩ জেলার কৃষকের কপালে ভাঁজ

নদীর পানি কমে আসায় ধান কাটা জোরদার করেছিলেন চাষিরা। আর কটা দিন সময় পেলেই শতভাগ ধান কাটা হবে। তত দিন বাঁধে কোনো ভাঙন যেন না ঘটে, সেদিকেই চোখ ছিল সবার। কিন্তু সেটা আর হলো না। গতকাল রোববার ভোরে ভেঙে গেছে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় মাউতির বাঁধ। এতে পানি ঢুকে তলিয়ে গেছে ছায়ার হাওরের বোরো ধান।

মাউতির বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তিন জেলার কৃষকদের কপালে। কারণ ছায়ার হাওরে কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা ও নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলার কৃষকদের জমিও রয়েছে। বাঁধ ভাঙার খবর পেয়ে গতকাল নারী-পুরুষ সবাই নেমেছেন হাওরের ধান কাটতে। এমনকি স্কুলপড়ুয়া ছোট শিক্ষার্থীরাও বসে নেই।

শাল্লার সুখলাইন গ্রামের সুমন দাস বলেন, এমনিতেই পাহাড়ি ঢলের পানিতে বাঁধটি ঝুঁকিতে ছিল। এরপর শনিবার দিবাগত রাত থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এতে বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি ঢুকতে থাকে। চোখের সামনেই নিমেষে তলিয়ে যাচ্ছে হাওরের ফসল।

গতকাল ভেঙে যাওয়া অংশ সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন। এ সময় ভেঙে যাওয়া বাঁধের সভাপতি ও সদস্যসচিবের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, যদি তাঁদের কোনো গাফিলতি পাওয়া যায় তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে উপজেলা কৃষি অফিস ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কার্যালয় দাবি করেছে, ছায়ার হাওরের ৯৫ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। তবে স্থানীয় কৃষকেরা এটা মানতে নারাজ। তাঁরা বলছেন, হাওরের ৭০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। বাকি ৩০ ভাগ ধান বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য পিআইসির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের গাফিলতিকে দায়ী করছেন কৃষকেরা।

ধর্মপাশায় বিকল্প বাঁধে রক্ষা: চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার চন্দ্রসোনারথাল হাওরে পাউবোর ৭৫ নম্বর প্রকল্পের ডুবাইল বাঁধটি ভেঙে প্রায় ২০০ হেক্টর জমির ধান ডুবে যায়। এ অবস্থায় ওই হাওরের আরও ২ হাজার ৭০০ হেক্টর জমির ধান রক্ষা করতে নির্মাণ করা হয় ৫ কিলোমিটার বিকল্প বাঁধ। এতে কৃষকের ২ হাজার ৭০০ হেক্টর জমির ধানসহ রক্ষা পেয়েছে আশপাশের কয়েকটি হাওরের ধান। ধান কাটতে পেরে খুশি স্থানীয় কৃষকেরা।

গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কাউনাই নদীর পাড় পর্যন্ত এলজিইডি রাস্তার পাশে বিকল্প পাঁচ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ধারাম, টগা, কাইঞ্জা, মহিষাখালীসহ পাশের দুই উপজেলার ১০/১২ হাজার হেক্টর জমির ফসল রক্ষা পেয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা।

স্থানীয় কৃষক মঞ্জুরুল হক বলেন, ‘ডুবাইল বাঁধটি ভেঙে যাওয়ার পর যদি এই বাঁধটি রাতারাতি করা না হতো, তাহলে আমাদের পরিবার না খেয়ে থাকত। ডুবাইল বাঁধটির কোনো বিশ্বাস নাই, তাই সরকারের কাছে দাবি দৌলতপুর থেকে রাজাপুর পর্যন্ত এই ফসল রক্ষা বাঁধটি যেন প্রতিবছর হয়।’

কৃষক মোহন বলেন, এই বাঁধটি ধারামসহ ৭/৮টি হাওরের ধান রক্ষা করেছে। প্রতিবছর এই বাঁধটি দেওয়ার জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুনতাসির হাসান বলেন, ‘আমাদের ডুবাইল বাঁধটি ভেঙে যাওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শে বিকল্প পাঁচ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করি এর ফলে ২ হাজার ৭০০ হেক্টর জমির ফসল রক্ষা করতে পেরেছি। এই সিদ্ধান্তের ফলে কৃষকেরা বোরো ধান কাটতে পেরেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত