Ajker Patrika

চিকিৎসার টাকা জোগাতে উপহারের ঘর বিক্রি

সাইফুল আলম তুহিন, ত্রিশাল
আপডেট : ২২ মে ২০২২, ১৪: ৪৭
চিকিৎসার টাকা জোগাতে উপহারের ঘর বিক্রি

ময়মনসিংহের ত্রিশালে পঙ্গু স্ত্রীর চিকিৎসার টাকা জোগাতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বিক্রি করে দেন দ্বীন মোহাম্মদ নামের এক বৃদ্ধ। পরে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ঘর খালি করে সেই ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।

গত ৭ এপ্রিল ৫০ হাজার টাকা মূল্য ধার্য করে ১০০ টাকা মূল্যের স্ট্যাম্পে না-দাবি দলিলমূলে উপহারের ঘরটি পাশের ইছামতি গ্রামের মোছা. ছাহেরা খাতুনকে লিখে দেন উপজেলার বিয়ারা গ্রামের দ্বীন মোহাম্মদ।

কেনার পর ঘরে বসবাস শুরু করেছিলেন অসহায় বৃদ্ধ ছাহেরা খাতুন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হলে বৃদ্ধ ছাহেরা খাতুনকে ঘর থেকে সরিয়ে ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। একদিকে অভাবের তাড়নায় এবং স্ত্রীর চিকিৎসায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বিক্রি, অন্যদিকে মাথার ওপর একটি ঠাঁই পাওয়ার জন্য অনেক আকুতির পর পাওয়া ঘর ছেড়ে বাধ্য হয়ে অন্যত্র জায়গা নেওয়া এই দুই অসহায়ের বিষয়টি বেশ নাড়া দিচ্ছে স্থানীয়দের।

তবে স্থানীয় কয়েকজন এ বিষয়ে অভিযোগ করে বলেন, সরকারি ঘর বিক্রি করার কোনো বিধান না থাকলেও সুবিধাবাদী কয়েকজন ঘর ক্রয়-বিক্রয়ে উৎসাহিত করে এখান থেকে উভয় পক্ষের সরলতা ও অসচ্ছলতার সুযোগে বেশ কিছু টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

তা বলেছিলেন, ৮০ হাজার টাকায় তিনি ঘর কিনেছেন এবং বিক্রেতা বলেছিলেন, ১ লাখ টাকায় ঘর বিক্রি করেছেন। তবে স্থানীয় কয়েকজন বলেন, ‘আমরা শুনেছি, ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় ঘর ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে। এখান থেকে মধ্যস্থতাকারীরাও সুবিধা নিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের বিয়ারা গ্রামে। এখানে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে সরকারি খাসজমির ওপর ১২টি পরিবার একসঙ্গে মাথা গোঁজার ঠাঁই পায়। সরকারি খরচে করে দেওয়া হয়েছে পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা।

এ বিষয়ে ঘর বিক্রেতা দ্বীন মোহাম্মদ প্রথমে সব অস্বীকার করেছিলেন। পরে স্ট্যাম্পের না-দাবি দলিলের কপি দেখালে সব স্বীকার করে বলেন, ‘আমি অভাবে পড়ে ঘর বিক্রি করেছি। আমার স্ত্রী ৪ বছর যাবৎ পঙ্গু হয়ে ঘরে পড়ে রয়েছে। আমিও এখন আগের মতো কাজ করতে পারি না। বিপদে পড়েই ঘর বিক্রি করেছি।’

এ বিষয়ে বালিপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ বাদল বলেন, ‘সরকারি ঘর বিক্রির নিয়ম না থাকলেও দ্বীন মোহাম্মদ অভাবের তাড়নায় পড়ে এ কাজ করেছিল। আমি আগে বিষয়টি জানতাম না। জানতে পেরে সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নির্দেশে ঘরে তালা দিয়ে ঘর বিক্রির টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করি। ওর স্ত্রী প্যারালাইসিসে আক্রান্ত। মূলত স্ত্রীর চিকিৎসার জন্যই সে ঘর বিক্রি করেছিল। আর যে ঘর কিনেছিল, তারও কিছু নাই। মানুষের কাছে চেয়ে, ভিক্ষা করে কিছু টাকা জমিয়েছিল। জমানো টাকা দিয়ে সে আমাকে না জানিয়েই ঘরটি কিনেছিল।’

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ‘আমরা জানতে পারি যে আগে এই ঘরে যে থাকতো এখন সে থাকে না। আমাদের অনুমতি ছাড়া আরেকজন উঠে গেছে ঘরে। এটা জানার পর আমরা আমাদের ঘর বুঝে নিয়েছি। এখন নতুন কাউকে বন্দবস্ত দেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ভিসা নীতি দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কে প্রভাব ফেলছে: বলছেন কূটনীতিকেরা

ফাইনালে ভারতের ‘যম’কে খেলানো নিয়ে দোটানায় নিউজিল্যান্ড

বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ছাত্রদল ও এনসিপি

নিষিদ্ধ হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিল, পুলিশের টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেডে ছত্রভঙ্গ

ভারত ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত