Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

কম নাটকেই অভিনয়ের সুযোগ থাকে

কম নাটকেই অভিনয়ের সুযোগ থাকে

৪ সেপ্টেম্বর ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বিঞ্জে মুক্তি পায় ভিকি জাহেদের স্বল্পদৈর্ঘ্য ‘একটি খোলা জানালা’। এক সপ্তাহের ব্যবধানে গতকাল প্ল্যাটফর্মটির ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ পেয়েছে স্বল্পদৈর্ঘ্যটি। এতে নার্সের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সালহা খানম নাদিয়া। নতুন এই স্বল্পদৈর্ঘ্য ও অন্যান্য বিষয়ে নাদিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন শিহাব আহমেদ

‘একটি খোলা জানালা’ নিয়ে বলুন। কেমন সাড়া পাচ্ছেন প্রকাশের পর? 
স্বল্পদৈর্ঘ্যটি থ্রিলারের পাশাপাশি কিছুটা ভৌতিকও। ভিকি জাহেদের গল্পগুলো সারপ্রাইজিং হয়। এটাও তাই। তাঁর পরিচালনায় ২০১৬ সালে অভিনয় করেছিলাম। তখন ভাইয়া ছোট ছিলেন, আমিও ছোট ছিলাম। এখন দুজনেই বড় হয়েছি। কাজের পরিধি, ম্যাচিউরিটি বেড়েছে। তিনি জানেন আমাকে দিয়ে কী সম্ভব। রিলিজের পর থেকে অনেকেই প্রশংসা করছেন। তবে আমার ভক্তরা একটু কষ্ট পেয়েছেন। আমার চরিত্রটির মৃত্যু মানতে পারছেন না তাঁরা। 

গতকাল স্বল্পদৈর্ঘ্যটি ইউটিউবে মুক্তি পেয়েছে। সাধারণত এত অল্প সময়ে কোনো ওটিটি কনটেন্ট ইউটিউবে দেখা যায় না। এর পেছনে কী কারণ? ওটিটিতে সাবস্ক্রাইব করে কনটেন্ট দেখা আমাদের দেশে এখনো জটিল। অনেকেই বুঝতে পারেন না কীভাবে ওটিটিতে কনটেন্ট দেখবেন। প্রথমবার আমারও সমস্যা হয়েছিল। স্বল্পদৈর্ঘ্যটি সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতেই ইউটিউবে মুক্তি দেওয়া। ইউটিউবে আসার কারণে এর হাইপ আরও বাড়বে। 

নার্সের চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তুতি কেমন ছিল আপনার? 
প্রথমবার দর্শক আমাকে এমন বোল্ড নার্স চরিত্রে দেখল। চরিত্রটি রপ্ত করতে বেশ সময় দিতে হয়েছে। হলিউড মুভি ও সিরিজ দেখেছি।যাতে আমি নার্সদের মতো আচার-আচরণ, কথাবার্তা বলতে পারি। কারণ, আমি তো প্রশিক্ষিত নার্স নই। স্ক্রিপ্ট পড়ার পর থেকেই জানতাম যে, এতে ভৌতিক কিছু বিষয়ও থাকবে। কিন্তু যখন শুটিং করতে গেলাম সত্যিই ভয় পেয়েছিলাম।

এই স্বল্পদৈর্ঘ্যে আপনার সঙ্গে ছিলেন তাসনিয়া ফারিণ। তাঁর সঙ্গে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা কেমন? 
ফারিণ ভালো অভিনেত্রী। লুক সেটের সময় থেকে আমাদের সখ্য হয়ে গিয়েছিল। তাঁর মধ্যে অভিনয়ের ক্ষুধা আছে। শট দেওয়ার পর নিজে সন্তুষ্ট না হলে আবার টেক দিতে চায়। এটা আমার মধ্যেও আছে। এ ছাড়া ও সিনিয়রদের অনেক সম্মান করে। এই গুণটিও আমার মধ্যে আছে। শুটিং করতে করতে দুজনের অনেক মিল খুঁজে পেয়েছি। সম্প্রতি ইউটিউবে আপনার অভিনীত নাটক ‘নিয়তি’ রিলিজ হয়েছে। নাটকটি নিয়ে বলুন।

নিয়তি পরিচালনা করেছেন মোস্তফা খান শিহান। আমার সঙ্গে আছেন মনোজ প্রামাণিক। আমি একজন মায়ের চরিত্র করেছি। যে তার সন্তানের মৃত্যুর পর পাগলপ্রায়। চরিত্রটি অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। তবে নাটকটি প্রচারের পর সবার এত প্রশংসা পাচ্ছি, মনে হচ্ছে আমার কষ্ট সার্থক। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর সবাই যার যার মাধ্যমে সংস্কারের কথা বলছেন। শোবিজে অঙ্গনে আপনি কী ধরনের সংস্কার বা পরিবর্তন চান? 
সিন্ডিকেট যেন দূর হয়। সব শিল্পী যেন সমানভাবে কাজ করতে পারেন। অভিনয়টা যেন প্রাধান্য পায়। সুন্দর হলেই নায়িকা হওয়া যায়—এই ভাবনা দূর করতে হবে। পারিশ্রমিকের ক্ষেত্রে যেন বৈষম্য না থাকে। ভিউয়ের দোহাই দিয়ে অনেকেই মাত্রাতিরিক্ত পারিশ্রমিক বাড়িয়েছেন। যার প্রভাব পড়েছে পুরো নাটক ইন্ডাস্ট্রিতে। সেই শিল্পীদের নিয়ে নাটক বানাতে গেলে গল্প থেকে অনেক চরিত্র ছেঁটে ফিলে দিতে হয়। তাই অনেকে অভিনেতাই কাজ হারাচ্ছেন। আবার, তাঁদের না নিলে পরিচালকেরা কাজ হারাচ্ছেন। এ ধরনের বৈষম্য দূর করতে হবে। অভিনয়যোগ্যতা বিচার করে পারিশ্রমিক কিছুটা বাড়ানো যেতে পারে। কিন্তু কার ১০ মিলিয়ন ভিউ কার ২০ মিলিয়ন ভিউ, সেই হিসাব কষে পারিশ্রমিক বাড়ানো ঠিক নয়। আরেকটা বিষয় হচ্ছে অনেক নির্মাতা কাজ শেষ হওয়ার পর শিল্পীদের পারিশ্রমিক নিয়ে ঘোরায়। কাজ হারানোর ভয়ে শিল্পীরা প্রতিবাদ করতে চায় না। এটাও পরিবর্তন হওয়া জরুরি। একই সঙ্গে দর্শকের রুচিরও পরিবর্তন দরকার বলে আমি মনে করি। 

দর্শকের রুচির পরিবর্তন বলতে ঠিক কী বোঝাতে চাইছেন? 
আমাদের নাটকের একটা ঐতিহ্য আছে। সেটা দেখেই নাটকে নাম লিখিয়েছিলাম। কিন্তু সেই নাটক এখন হচ্ছে কই! সবার মুখে এক কথা—দর্শক এই ধরনের নাটক দেখছে, এটাই ট্রেন্ড। প্রতি মাসে অনেক নাটকের প্রস্তাব আসে। কিন্তু গল্পে পড়ে কম নাটকই পাই যেখানে অভিনয়ের সুযোগ থাকে। আবার বাছাই করে ভালো নাটকে কাজ করলে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় আপনার কাজ এত কম কেন? দর্শক যদি ভালো নাটকগুলো দেখে তাহলেই ভালো কাজের সংখ্যা বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত