টার্মিনাল আছে, ব্যবহার নেই

জাকির হোসেন, সুনামগঞ্জ
আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২২, ১৪: ২৪
Thumbnail image

সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি প্রায় ১৬ বছর ধরে বন্ধ। দীর্ঘদিন ধরে টার্মিনালের বাইরে মহাসড়কের পাশে অস্থায়ী কাউন্টার তৈরি করে কার্যক্রম চালাচ্ছেন বাসমালিকেরা। বাসমালিক ও পরিবহন শ্রমিকেরা বলছেন, চালু হওয়ার প্রথম ৭-৮ বছর টার্মিনালটি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এরপর মূল ভবনে বিদ্যুতের সংযোগ না থাকা, মূল ভবন থেকে মহাসড়ক পর্যন্ত ভাঙা সংযোগ সড়কসহ নানা কারণে এখন টার্মিনালটি ব্যবহার করেন না তাঁরা। সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও অবকাঠামোগত সমস্যাগুলোর সমাধান করলেই টার্মিনালটি ব্যবহারযোগ্য হবে।

যাত্রী, বাসমালিক ও পরিবহন শ্রমিকদের দাবি দ্রুত টার্মিনালটির সার্বিক সংস্কার ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নেওয়া হোক। অন্যদিকে জেলা প্রশাসন বলছে, কিছু অসাধু লোকের জন্য নিলাম কার্যক্রম ও টার্মিনালটির কোনো উন্নয়নকাজে হাত দেওয়া যাচ্ছে না।

বাস-মিনি বাস মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, একসময় পৌর শহরের মেজর ইকবাল রোডে ছিল সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল। ২৮ বছর আগে তা মল্লিকপুরে স্থানান্তর করা হয়। টার্মিনালটি ১৯৯৮ সাল নির্মিত হয়েছে। এই টার্মিনালে ২২০ জন মালিক এবং ২ হাজার ৪০০ শ্রমিক রয়েছেন। ২০০৬ সাল থেকে টার্মিনালটি ব্যবহার বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ, টার্মিনালের মূল ভবনে বিদ্যুতের সংযোগ নেই। মূল ভবন থেকে মহাসড়ক পর্যন্ত সংযোগ সড়ক ভেঙে যায়। এতে টার্মিনাল থেকে মহাসড়কে আসার সংযোগ সড়ক ঘটেছে দুর্ঘটনাও। শহর থেকে ২ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় টার্মিনালের তদারকি কে করবে—এ নিয়ে পৌরসভা ও জেলা পরিষদের মধ্যে রশি টানাটানি হয়েছে অনেক বছর। শেষ পর্যন্ত তদারকির দায়িত্ব গ্রহণ করেছে সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ।

সরেজমিন দেখা গেছে, টার্মিনালে দুটি বিশ্রামাগার ও একটি টিকিট কাউন্টার থাকলেও তা তালাবদ্ধ। মূল ভবনে বিদ্যুতের সংযোগ নেই। পরিষ্কার না করায় ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে ভবনের চারপাশ। ভেঙে পড়ছে দরজা-জানালা। ভেতরে বেশ কয়েকটি বাস থাকলেও তা বিকল। পুরো এলাকায় কোথাও লাইটের খুঁটি আছে তো বাল্ব নেই, আবার কোথাও খুঁটিও নেই। তাই সন্ধ্যার পর অধিকাংশ এলাকা অন্ধকার থাকে। সন্ধ্যার পর টার্মিনাল এলাকায় বসে মাদক ও জুয়ার আড্ডা। প্রায়ই বাস থেকে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র চুরি হয়ে যায় জানিয়েছেন বাসমালিক ও শ্রমিকেরা। পাকা ভবনের নিচে যাত্রীদের বসার ব্যবস্থা, ক্যানটিন ও কাউন্টার রয়েছে। শৌচাগার থাকলেও তা বহিরাগতরা ব্যবহার করে।

টার্মিনালের বাইরে মহাসড়কের পাশে অস্থায়ী কাউন্টার তৈরি করে কার্যক্রম চালাচ্ছেন বাসমালিকেরা। রোদ-বৃষ্টিতে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে যাত্রীদের বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। যাত্রীদের জন্য নেই টয়লেটের ব্যবস্থাও।

বাস-মিনি বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মিয়া বলেন, ‘টার্মিনালটির সংস্কার করার জন্য বারবার জেলা পরিষদ, ডিসি ও মন্ত্রীর কাছে আমরা লিখিতভাবে জানিয়েছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো উন্নয়নমূলক কার্যক্রম এই টার্মিনালের জন্য করা হচ্ছে না। টার্মিনালে সন্ধ্যার পরে আমাদের বাসগুলো অরক্ষিত অবস্থায় থাকে। এখানে কোনো ধরনের আলো না থাকায় সবগুলি বাসই অনিরাপদ থাকে।’

বাস-মিনি বাস মালিক সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হক বলেন, ‘টার্মিনালটি প্রথমে পৌরসভার অধীনে ছিল। এখন আবারও যদি পৌরসভার অধীনে দেওয়া হয়, আশা করি টার্মিনালটির কিছু উন্নয়ন হবে।’

জেলা পরিষদ প্রশাসক নুরুল হুদা মুকুট বলেন, ‘বাস টার্মিনালটি আমরা চাইছিলাম নিলামে দিতে। কিন্তু কিছু অসাধু লোকের জন্য আমরা নিলাম কার্যক্রম ও টার্মিনালটির কোনো উন্নয়নকাজে হাত দিতে পারছি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

কিশোরগঞ্জে বিএনপি নেতা হত্যা: সাবেক চেয়ারম্যানসহ গ্রেপ্তার ৪

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত