Ajker Patrika

আ.লীগ-বিদ্রোহী সমানে সমান

এনামুল হক, ফুলপুর
আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ৪৯
আ.লীগ-বিদ্রোহী সমানে সমান

ফুলপুরের ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা পাঁচটিতে বিজয়ী হয়েছেন। প্রার্থী বাছাইয়ের ভুল, ইউনিয়ন পর্যায়ে দলীয় কোন্দল, প্রার্থীদের মাঠপর্যায়ে গ্রহণযোগ্যতা কম থাকা এবং একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় দলীয় প্রার্থীরা হেরেছেন বলে তৃণমূলের নেতা–কর্মীরা মনে করছেন। গত সোমবার এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১০ ইউপিতে ১০ জন প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে পাঁচজন পরাজিত হয়েছেন। নেতা–কর্মীদের মতে, প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল এতে বড় ভূমিকা রেখেছে। এ ছাড়া দলীয় অন্তকোন্দল, প্রার্থীদের মাঠপর্যায়ে গ্রহণযোগ্যতা কম থাকা আর বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় দলীয় প্রার্থীরা পাঁচটি ইউপিতে সুবিধা করতে পারেননি।

যে পাঁচটি ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন, সেগুলো হলো ফুলপুর, বওলা, রামভদ্রপুর, রহিমগঞ্জ ও পয়ারী। এর মধ্যে ফুলপুর ইউপিতে আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের বিপক্ষে রেজাউল হক ফকির রাসেল বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন। একাধিক কর্মী বলেন, ইউনিয়নে আবুল কাশেমের সঙ্গে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়েছে। এ জন্য দলের অনেক নেতা-কর্মী তাঁর পক্ষে কাজ না করে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে যাওয়ায় তিনি পরাজিত হয়েছেন।

বওলা ইউপিতে আওয়ামী লীগের বর্তমান চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ নৌকা প্রতীক নিয়েও পরাজিত হন। ওই ইউপিতে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে হামিদুল্লাহ খান মিন্টু, ফরিদ মিয়া ও খলিলুর রহমান শরীফ বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন। এতে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভাজন দেখা দেয়। ওই ইউপিতে মনোনয়নবঞ্চিত কয়েকজন যোগ্য ছিলেন বলে দলের তৃণমূলের দাবি। ফলে সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয় পাননি। বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা মাহবুব আলম ডালিম।

রামভদ্রপুর ইউপিতে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধা দুদু মিয়া হেরে গেছেন। ওই ইউপিতে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এতে স্থানীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা স্পষ্টত দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপি নেতা রোকনুজ্জামান রোকন ছিলেন শক্ত অবস্থানে। তিনিই বিজয়ী হয়েছেন।

রহিমগঞ্জ ইউপিতে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান আবু সাঈদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু বিগত সময়ে তাঁর অনেক কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন ওঠে বলে জানিয়েছেন নেতারা। এ ছাড়া ইউনিয়ন পর্যায়ে দলের একটি অংশ তাঁকে মেনে নিতে না পারায় স্বতন্ত্র প্রার্থী একরাম হোসেন পান্না চৌধুরী বিজয়ী হয়েছেন।

পয়ারী ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন এনামুল হক। কিন্তু মাঠপর্যায়ে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন নেতা–কর্মীরা। এ ছাড়া তাঁর বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হতে পারেননি বলে ওই ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা জানান।

বিদ্রোহী প্রার্থী হামিদুল্লাহ খান মিন্টু বলেন, দল আমাকে মনোনয়ন দিলে নিশ্চিত বিজয়ী হতাম। তারা প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল করেছে বলে দাবি করেন তিনি।

প্রার্থী নির্বাচনে ভুল ছিল কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল ছিল, তা পুরোপুরি ঠিক না। নির্বাচনের আগে একাধিক স্থানীয় নেতা মনোনয়ন চেয়েছেন। আমরা মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নাম কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাঠিয়েছে। তারা প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন।

আওয়ামী লীগের পাঁচজন বিজয়ী না হওয়ার ব্যাপারে হাবিবুর রহমান জানান, তাঁরা হয়তো মাঠ সেভাবে গোছাতে পারেনি। কিছু দুর্বলতা ছিলই, এটা তাঁদের ব্যর্থতা। তা ছাড়া একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় তাঁরা তেমন সুবিধা করতে পারেননি। যদিও বিদ্রোহী প্রার্থীদের বহিষ্কার করা হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদের সব পদ স্থগিত

টিআইএন নেওয়ার পরে কিন্তু ঘুমাইতে পারবেন না: এনবিআর চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত