ইয়াহ্ইয়া মারুফ, সিলেট
১.
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরসভার শেরপুর এলাকার জয়ধন বিবি। অসুস্থ সন্তান নিয়ে ২৫ দিন পর আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া ঘর মেরামতের কাজ করছেন তিনি। খেয়ে না-খেয়ে জমানো টাকায় চলছে সে কাজ। কীভাবে ঘর ঠিক করে আবার সংসার পাতবেন, এ চিন্তায় ঘুম হয় না বিধবা জয়ধন বিবির। চার ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে কোনোমতে ভাঙা ঘরে মাথা গুঁজেছেন তিনি।
২.
স্বামী পাথর ভাঙার কাজ করতেন। তিন বছর আগে পাথর ভাঙতে গিয়ে নিজের হাত ভেঙে বেকার হয়েছেন তিনি। বেকার স্বামীর সংসারের হাল ধরেছিলেন নুরুন নেহার। তাঁদের তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। বড় ছেলে নবম শ্রেণিতে উঠে পড়ালেখা ছেড়ে দেন। মা-ছেলের দিনমজুরিতে ঘোরে সংসারের চাকা। এবার বন্যায় একমাত্র ঘরটিও ভেঙে গেছে। মানুষের সাহায্য নিয়ে মা-ছেলে মিলে কোনো রকমে ঘরটি মেরামত করেছেন। এ গল্প সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ১ নম্বর রাধানগর গ্রামের আবদুর রহমানের স্ত্রী নুরুন নেহারের।
৩.
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের মুজিবনগরের আছারুন নেছার বয়স ৭০ বছর। বিধবা এ নারীর একমাত্র ছেলেও ছয় মাস আগে মারা গেছেন। ছেলের বউ আর তিন নাতি-নাতনি নিয়ে আছারুনের সংসার। ছেলের বউ অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। আর আছারুন নেছা নিজে করেন ভিক্ষাবৃত্তি। মুজিব বর্ষের ঘর পেয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে। এবারের বন্যায় ঘরে বুকসমান পানি ছিল। ঘরের সব জিনিসপত্র নষ্ট হয়েছে। শরীরে বৃদ্ধকালীন নানা রোগ নিয়ে নাতি-নাতনিদের মুখের দিকে তাকিয়ে এ বয়সে ধরেছেন সংসারের হাল। বন্যার পর থেকে ভিক্ষায়ও যেতে পারেন না আছারুন নেছা। কাজ নেই ছেলের বউয়েরও।
টিকে থাকার যুদ্ধ
এক দুই তিন করে এ গল্পের সংখ্যা বাড়তেই থাকে। আমরা টুকে রাখতে থাকি নোট—নাম-ধাম-সাকিন। আর সিলেট-সুনামগঞ্জের নারীদের কপালে বাড়তে থাকে চিন্তার ভাঁজ। জীবন চলবে কীভাবে? এই চরম অনিশ্চয়তার মধ্যেও বাড়ির মানুষগুলোর মুখের দিকে তাকিয়ে লড়ে যাচ্ছেন জয়ধন বিবি, নুরুন নেহার কিংবা আছারুন নেছার মতো শত শত নারী। প্রকৃতির মেজাজ-মর্জির ওপর যাঁদের ভাগ্য অনেকখানি নির্ভর করে, তাঁরাই এখন নেমেছেন পুরুষদের পাশে নিয়ে প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকার এক বিপুল সংগ্রামে।
প্যাডসহ নারীদের ব্যবহারের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী ইউনিসেফের পক্ষে থেকে বিতরণ করা হয়েছে। তবে সেগুলো পর্যাপ্ত নয়।
ডা. হিমাংশু লাল রায়
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালকএ সংগ্রামে একদিকে যেমন আছে অর্থকষ্ট, অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ভাবনা, তেমনি আছে স্বাস্থ্য সমস্যা, আছে নারীদের হাজারো সামাজিক প্রতিবন্ধকতা। তাতেও দমে নেই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সিলেট-সুনামগঞ্জের নারীরা। সিলেট নগরীর তেররতন এলাকার রহিমা বেগম বন্যার পর একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় নিয়েছেন রাঁধুনির কাজ। তার আগে তিনি ছিলেন চাকরিজীবী স্বামীর সুখী গৃহিণী। রহিমা বেগম জানান, ‘নারীদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। তারপরও সংসার তো আমার। ছেলে-মেয়ে ও স্বামীর মুখের দিকে তাকিয়ে কাজটি ধরেছি। শারীরিক সমস্যাও আছে। এখন চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা ঘুমানো ছাড়া বাকি পুরো সময় কাজ করতে হয়। বাসায় থাকলে বাসার কাজ, রান্নাবান্না আর অফিসে গেলে অফিসের কাজ।’
টিকে থাকার এ যুদ্ধের রূপ বহু ধরনের। সিলেটের তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটি (গ্রাসরুটস) জানিয়েছে, প্রান্তিক পর্যায়ের অনেক নারী উদ্যোক্তা বন্যার কারণে তাঁদের ব্যবসা হারিয়ে দেশের বাইরে গৃহকর্মীর কাজে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। কয়েকজন চলে গেছেন ইতিমধ্যে।
গ্রাম থেকে শহরে
গ্রাম থেকে শহরে লেগেছে বেঁচে থাকার এ সংগ্রামের ঢেউ। কোনো রকমে করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার সময়েই সিলেট-সুনামগঞ্জের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন হোমবেজড নারী উদ্যোক্তারা। করোনার পর এনজিও বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে প্রান্তিক নারী উদ্যোক্তারা নতুনভাবে শুরু করেছিলেন ব্যবসা। কিন্তু ভয়াল বন্যায় তা থমকে গেছে। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি বা ছোট ছোট কৃষিপণ্য কিংবা ছোট গ্রামীণ দোকান বন্যায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গ্রাসরুটস নামের প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, শুধু সিলেট জেলায় নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত ১৩ হাজার ৮০০ নারী উদ্যোক্তা তাঁদের পুঁজি হারিয়েছেন। গড়ে প্রতি উদ্যোক্তার ৯৮ হাজার টাকা করে লোকসান হয়েছে বলেও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
জেলা প্রশাসন তিন মাসের জন্য এনজিওর কিস্তি আদায় বন্ধ করেছে। কিন্তু পুনরায় ব্যবসা শুরু করতে গেলে ব্যাংকঋণসহ অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক যে প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হবে, সেটা বেশ কঠিন কাজ বিভিন্ন অর্থেই।
সংকট ও উত্তরণের চেষ্টা
বন্যার শুরু থেকে বানভাসি মানুষের জন্য কাজ করছেন ফারমিছ আক্তার। তিনি জানান, ‘আশ্রয়কেন্দ্রে থাকাকালীন বাথরুমের সমস্যা থাকায় অনেকেরই এখন নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রান্তিক নারীরা পরিশ্রমের তুলনায় চিকিৎসা পান খুবই কম। অনেক নারী সংসার, স্বামী-সন্তানের দিকে তাকিয়ে নিজের সমস্যা গোপন রাখছেন। এখনো হাওর অঞ্চলে স্যানিটেশন, প্যাডসহ নারীদের ব্যবহারের অনেক কিছুর সংকট রয়েছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, ‘স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালগুলোতে আমরা নারীদের শারীরিক সমস্যার তেমন রোগী এখনো পাচ্ছি না। এটা আরও কিছুদিন পরে বোঝা যাবে। তবে পানিবাহিত রোগের আক্রান্ত রোগীদের অধিকাংশ শিশু ও নারী।’
ডা. হিমাংশু লাল রায় জানান, বন্যা-পরবর্তী ঘরবাড়ি মেরামতসহ যাবতীয় কাজ করতে গিয়ে অনেক নারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। চুলকানি, অ্যালার্জিসহ নানা রোগ বাসা বেঁধেছে তাঁদের শরীরে। সারা দিন কাজ করার পর রাতে ঠিকমতো ঘুমোতেও পারেন না অনেকে। আর্থিক সংকটের জন্য চিকিৎসাও করাতে পারেননি অনেক নারী। অনেকেরই মেলেনি সরকারি কোনো সাহায্য বা চিকিৎসা সহায়তা।
এসব সংকট নিয়েই সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যাবিধ্বস্ত জনপদগুলোতে নীরবে বাঁচার সংগ্রাম করে চলেছেন নারীরা।
প্রান্তিক নারী উদ্যোক্তাদের সংগঠন তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটির (গ্রাসরুটস) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিমাংশু মিত্র মনে করেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য থোক বরাদ্দ, কৃষিভিত্তিক এবং প্রয়োজনভিত্তিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও গ্রুপ লোনের ব্যবস্থা করা, পুনরায় ব্যবসা করতে আগ্রহীদের এক বছরের জন্য ট্রেড লাইসেন্স ফি মওকুফ করা, ক্ষুদ্র ঋণের জন্য সিআইবি রিপোর্টের ফি মওকুফ করা, প্যাকেজ প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ শেষে সহজ ঋণ ব্যবস্থা করা এবং উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতকরণে সহায়তা করা এখন জরুরি বিষয়।
১.
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরসভার শেরপুর এলাকার জয়ধন বিবি। অসুস্থ সন্তান নিয়ে ২৫ দিন পর আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া ঘর মেরামতের কাজ করছেন তিনি। খেয়ে না-খেয়ে জমানো টাকায় চলছে সে কাজ। কীভাবে ঘর ঠিক করে আবার সংসার পাতবেন, এ চিন্তায় ঘুম হয় না বিধবা জয়ধন বিবির। চার ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে কোনোমতে ভাঙা ঘরে মাথা গুঁজেছেন তিনি।
২.
স্বামী পাথর ভাঙার কাজ করতেন। তিন বছর আগে পাথর ভাঙতে গিয়ে নিজের হাত ভেঙে বেকার হয়েছেন তিনি। বেকার স্বামীর সংসারের হাল ধরেছিলেন নুরুন নেহার। তাঁদের তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। বড় ছেলে নবম শ্রেণিতে উঠে পড়ালেখা ছেড়ে দেন। মা-ছেলের দিনমজুরিতে ঘোরে সংসারের চাকা। এবার বন্যায় একমাত্র ঘরটিও ভেঙে গেছে। মানুষের সাহায্য নিয়ে মা-ছেলে মিলে কোনো রকমে ঘরটি মেরামত করেছেন। এ গল্প সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ১ নম্বর রাধানগর গ্রামের আবদুর রহমানের স্ত্রী নুরুন নেহারের।
৩.
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের মুজিবনগরের আছারুন নেছার বয়স ৭০ বছর। বিধবা এ নারীর একমাত্র ছেলেও ছয় মাস আগে মারা গেছেন। ছেলের বউ আর তিন নাতি-নাতনি নিয়ে আছারুনের সংসার। ছেলের বউ অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। আর আছারুন নেছা নিজে করেন ভিক্ষাবৃত্তি। মুজিব বর্ষের ঘর পেয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে। এবারের বন্যায় ঘরে বুকসমান পানি ছিল। ঘরের সব জিনিসপত্র নষ্ট হয়েছে। শরীরে বৃদ্ধকালীন নানা রোগ নিয়ে নাতি-নাতনিদের মুখের দিকে তাকিয়ে এ বয়সে ধরেছেন সংসারের হাল। বন্যার পর থেকে ভিক্ষায়ও যেতে পারেন না আছারুন নেছা। কাজ নেই ছেলের বউয়েরও।
টিকে থাকার যুদ্ধ
এক দুই তিন করে এ গল্পের সংখ্যা বাড়তেই থাকে। আমরা টুকে রাখতে থাকি নোট—নাম-ধাম-সাকিন। আর সিলেট-সুনামগঞ্জের নারীদের কপালে বাড়তে থাকে চিন্তার ভাঁজ। জীবন চলবে কীভাবে? এই চরম অনিশ্চয়তার মধ্যেও বাড়ির মানুষগুলোর মুখের দিকে তাকিয়ে লড়ে যাচ্ছেন জয়ধন বিবি, নুরুন নেহার কিংবা আছারুন নেছার মতো শত শত নারী। প্রকৃতির মেজাজ-মর্জির ওপর যাঁদের ভাগ্য অনেকখানি নির্ভর করে, তাঁরাই এখন নেমেছেন পুরুষদের পাশে নিয়ে প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকার এক বিপুল সংগ্রামে।
প্যাডসহ নারীদের ব্যবহারের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী ইউনিসেফের পক্ষে থেকে বিতরণ করা হয়েছে। তবে সেগুলো পর্যাপ্ত নয়।
ডা. হিমাংশু লাল রায়
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালকএ সংগ্রামে একদিকে যেমন আছে অর্থকষ্ট, অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ভাবনা, তেমনি আছে স্বাস্থ্য সমস্যা, আছে নারীদের হাজারো সামাজিক প্রতিবন্ধকতা। তাতেও দমে নেই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সিলেট-সুনামগঞ্জের নারীরা। সিলেট নগরীর তেররতন এলাকার রহিমা বেগম বন্যার পর একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় নিয়েছেন রাঁধুনির কাজ। তার আগে তিনি ছিলেন চাকরিজীবী স্বামীর সুখী গৃহিণী। রহিমা বেগম জানান, ‘নারীদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। তারপরও সংসার তো আমার। ছেলে-মেয়ে ও স্বামীর মুখের দিকে তাকিয়ে কাজটি ধরেছি। শারীরিক সমস্যাও আছে। এখন চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা ঘুমানো ছাড়া বাকি পুরো সময় কাজ করতে হয়। বাসায় থাকলে বাসার কাজ, রান্নাবান্না আর অফিসে গেলে অফিসের কাজ।’
টিকে থাকার এ যুদ্ধের রূপ বহু ধরনের। সিলেটের তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটি (গ্রাসরুটস) জানিয়েছে, প্রান্তিক পর্যায়ের অনেক নারী উদ্যোক্তা বন্যার কারণে তাঁদের ব্যবসা হারিয়ে দেশের বাইরে গৃহকর্মীর কাজে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। কয়েকজন চলে গেছেন ইতিমধ্যে।
গ্রাম থেকে শহরে
গ্রাম থেকে শহরে লেগেছে বেঁচে থাকার এ সংগ্রামের ঢেউ। কোনো রকমে করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার সময়েই সিলেট-সুনামগঞ্জের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন হোমবেজড নারী উদ্যোক্তারা। করোনার পর এনজিও বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে প্রান্তিক নারী উদ্যোক্তারা নতুনভাবে শুরু করেছিলেন ব্যবসা। কিন্তু ভয়াল বন্যায় তা থমকে গেছে। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি বা ছোট ছোট কৃষিপণ্য কিংবা ছোট গ্রামীণ দোকান বন্যায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গ্রাসরুটস নামের প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, শুধু সিলেট জেলায় নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত ১৩ হাজার ৮০০ নারী উদ্যোক্তা তাঁদের পুঁজি হারিয়েছেন। গড়ে প্রতি উদ্যোক্তার ৯৮ হাজার টাকা করে লোকসান হয়েছে বলেও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
জেলা প্রশাসন তিন মাসের জন্য এনজিওর কিস্তি আদায় বন্ধ করেছে। কিন্তু পুনরায় ব্যবসা শুরু করতে গেলে ব্যাংকঋণসহ অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক যে প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হবে, সেটা বেশ কঠিন কাজ বিভিন্ন অর্থেই।
সংকট ও উত্তরণের চেষ্টা
বন্যার শুরু থেকে বানভাসি মানুষের জন্য কাজ করছেন ফারমিছ আক্তার। তিনি জানান, ‘আশ্রয়কেন্দ্রে থাকাকালীন বাথরুমের সমস্যা থাকায় অনেকেরই এখন নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রান্তিক নারীরা পরিশ্রমের তুলনায় চিকিৎসা পান খুবই কম। অনেক নারী সংসার, স্বামী-সন্তানের দিকে তাকিয়ে নিজের সমস্যা গোপন রাখছেন। এখনো হাওর অঞ্চলে স্যানিটেশন, প্যাডসহ নারীদের ব্যবহারের অনেক কিছুর সংকট রয়েছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, ‘স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালগুলোতে আমরা নারীদের শারীরিক সমস্যার তেমন রোগী এখনো পাচ্ছি না। এটা আরও কিছুদিন পরে বোঝা যাবে। তবে পানিবাহিত রোগের আক্রান্ত রোগীদের অধিকাংশ শিশু ও নারী।’
ডা. হিমাংশু লাল রায় জানান, বন্যা-পরবর্তী ঘরবাড়ি মেরামতসহ যাবতীয় কাজ করতে গিয়ে অনেক নারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। চুলকানি, অ্যালার্জিসহ নানা রোগ বাসা বেঁধেছে তাঁদের শরীরে। সারা দিন কাজ করার পর রাতে ঠিকমতো ঘুমোতেও পারেন না অনেকে। আর্থিক সংকটের জন্য চিকিৎসাও করাতে পারেননি অনেক নারী। অনেকেরই মেলেনি সরকারি কোনো সাহায্য বা চিকিৎসা সহায়তা।
এসব সংকট নিয়েই সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যাবিধ্বস্ত জনপদগুলোতে নীরবে বাঁচার সংগ্রাম করে চলেছেন নারীরা।
প্রান্তিক নারী উদ্যোক্তাদের সংগঠন তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটির (গ্রাসরুটস) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিমাংশু মিত্র মনে করেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য থোক বরাদ্দ, কৃষিভিত্তিক এবং প্রয়োজনভিত্তিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও গ্রুপ লোনের ব্যবস্থা করা, পুনরায় ব্যবসা করতে আগ্রহীদের এক বছরের জন্য ট্রেড লাইসেন্স ফি মওকুফ করা, ক্ষুদ্র ঋণের জন্য সিআইবি রিপোর্টের ফি মওকুফ করা, প্যাকেজ প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ শেষে সহজ ঋণ ব্যবস্থা করা এবং উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতকরণে সহায়তা করা এখন জরুরি বিষয়।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে